গোপনে আরএসএস-ভাবধারা প্রচার? ১২৫টি স্কুলকে নোটিস পাঠাচ্ছে রাজ্য, নিয়ম মেনেই হচ্ছে সব, দাবি বিজেপির
কলকাতা: শিক্ষায় ধর্মান্ধতা নয়। ধর্মের ভিত্তিতে চলবে না রাজ্যের কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। রাজ্য সরকার শুধু একথা স্পষ্টই করে দেয়নি, পদক্ষেপ নেওয়াও শুরু করেছে। সরকারি সূত্রে খবর, রাজের এমন ১২৫টি স্কুলকে চিহ্নিত করা হয়েছে যেগুলির মধ্যে ৯৬ টির সরকারের কাছে থেকে পাওয়া নো অবজেকশন সার্টিফিকেট নেই। তাহলে কীভাবে চলছে স্কুল? চিঠি দিয়ে জানতে চেয়েছে সরকার। বুধবার বিধানসভায় প্রশ্নোত্তর পর্বে সিপিএম বিধায়ক মানস মুখোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, শিক্ষা দেওয়ার আড়ালে রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলে হিন্দুত্ববাদের শিক্ষা দিচ্ছে আরএসএস। শিশুমনকে বিষিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। তিনি বলেন, বিবেকানন্দ বিদ্যা বিকাশ পরিষদ তৈরি করে স্কুল চালাচ্ছে। লক্ষ্য আগামী ২ বছরে ৬০০ স্কুল তৈরি করা। রাজ্য সরকারের সতর্ক হওয়া দরকার। শিক্ষা বাজেটের জবাবি ভাষণ দিতে গিয়ে বুধবার বিধানসভায় শিক্ষামন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ধর্ম নিয়ে বিভাজন বরদাস্ত করা হবে না। তদন্ত করে প্রয়োজনে অনুমোদন বাতিল করা হবে। ইতিমধ্যেই রাজ্যের ১২৫টি স্কুলের ওপর নজরদারি করা হচ্ছে। তদন্তে হিন্দুত্ববাদের শিক্ষা প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতিমধ্যেই ১০টি স্কুলকে শোকজও করেছে রাজ্য সরকার। বুধবার বিধানসভায় পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, সারদা নামে ৯টি স্কুল ও সরস্বতী বিদ্যামন্দির নামে একটি স্কুল সরকারি অনুমোদন পেয়েছে। কিন্তু তারা মধ্যশিক্ষা পর্ষদের পাঠ্যক্রম মেনে পড়াচ্ছে না। তাই ওই স্কুলগুলোকে শোকজ করা হয়েছে। পাশাপাশি, পার্থ চট্টোপাধ্যায় আরও অভিযোগ করেন, স্কুলগুলি সব বাম আমলে তৈরি। বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র দফতরের নজরে এসেছে। বেশকিছু জায়গায় স্কুল ভাড়া নিয়ে ধর্মীয় বক্তৃতা দেওয়া হচ্ছে। সরকারি অনুমতি না নিয়ে এভাবে স্কুল ভাড়া দেওয়া যাবে না। যদিও রাজ্যের এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করেছে বিজেপি। রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, কেন এমন বলা হচ্ছে জানি না। বিবেকানন্দ বিদ্যা বাকাশ পরিষদ অধীনে ৩৫০-এর স্কুল আছে। আর কিছু বিদ্যাভারতী স্কুল। গান, গীতাপাঠ হয়। আমার বিশ্বাস নিয়ম মেনেই হচ্ছে। রাজ্য সরকারের পদক্ষেপ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে আরএসএসও। সহকারী প্রচারক দেবাশিস চৌধুরী বলেন, যদি ক্রিষ্টান স্কুলে বাইবেল পাঠ করানো বা মুসলিম স্কুলে ইসলাম নিয়ে আলোচনা হতে পারে, তাহলে (এক্ষেত্রে) প্রশ্ন উঠছে কেন? তাঁর আরও প্রশ্ন, হিন্দুত্ববাদ নিয়ে পড়াশোনা কি দেশদ্রোহিতা? রাজ্য সরকারের অনুমোদন বা নো অবজেকশন সার্টিফিকেট ছাড়া কীভাবে চলছে স্কুল? সরকারের বক্তব্য স্পষ্ট, হিন্দুত্ববাদের শিক্ষা দিলে অনুমোদন বাতিল করা হবে সেই স্কুলের।