Saradha Case: "তদন্তে যাদের নাম আসবে, তাদের সকলকেই জিজ্ঞাসাবাদ করবে", মুকুলকে গ্রেফতারের দাবি নিয়ে কুণালের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় দিলীপ
দাবি, ২০১৩ সালে ইডি-র জিজ্ঞাসাবাদে কুণাল ঘোষ জানান, সারদা ও অ্যালকেমিস্টের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ২০৫ জন প্রভাবশালী ব্যক্তিকে দেওয়া হয়। টাকা বণ্টনের দায়িত্বে ছিলেন মুকুল রায়...
কলকাতা: সারদা মামলায় রাজীব কুমারকে হেফাজতে চেয়ে শনিবারই সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানিয়েছে সিবিআই। ২৭৭ পাতার আবেদনপত্রে কুণাল ঘোষ, দেবযানী মুখোপাধ্যায়-সহ একাধিক অভিযুক্তের বয়ানের কপি জমা দিয়ে কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনারকে হেফাজতে চেয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা।
রাজীবকে হেফাজতে চাওয়ার পিছনে একাধিক অভিযুক্তের বয়ানের কথা উল্লেখ করেছে সিবিআই। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার আবেদনপত্রে কুণাল ঘোষের ২০১৩ সালের ইডি-কে দেওয়া বয়ানের কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ২০১১-র বিধানসভা ভোটে একটি দলের সমর্থনে টাকা ঢেলেছিল সারদা ও অ্যালকেমিস্ট। ২০৫ জন প্রার্থীর প্রত্যেককে ২৫ লক্ষ করে টাকা দেওয়া হয়। টাকা বিলির দায়িত্বে ছিলেন তৎকালীন তৃণমূলের শীর্ষ নেতা মুকুল রায় এবং প্রাক্তন পুলিশকর্তা রজত মজুমদার।
এপ্রসঙ্গে গতকলাই প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ কুণাল ঘোষ বলেন, রাজীব নিরপেক্ষ ভূমিকা নিলে এই অবস্থা হত না, রাজীব বহু প্রভাবশালীকে ছাড় দেন, রাজীবের পুলিশ অত্যাচার করে, আমাকে বলির পাঁঠা করা হয়, ষড়যন্ত্রকারীদের অনেকেই বিজেপিতে, মুকুল রায়কে অবিলম্বে গ্রেফতার করা হোক বলেও দাবি করেন কুণাল।
এই বিষয়ে জানতে একাধিকবার বিজেপি নেতা মুকুল রায়কে ফোন করা হয়। তিনি রিসিভ করেননি। তবে এদিন দিলীপের প্রতিক্রিয়া, "কুণাল ঘোষ অনেকের নাম বলেছিলেন। তদন্তে যাদের নাম আসবে, তাদের সকলকেই জিজ্ঞাসাবাদ করবে।" প্রাক্তন পুলিশ কর্তা রজত মজুমদারের দাবি, এই ব্যাপারে কিছুই জানেন না।
এই ব্যাপারে বর্তমানে তথ্য-প্রযুক্তি সচিব রাজীব কুমারের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। যদিও প্রাক্তন পুলিশকর্তার ঘনিষ্ঠ মহল থেকে, তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলি বিভিন্ন সময়ে অস্বীকার করা হয়েছে।
এদিকে, সুপ্রিম কোর্টের আবেদনপত্রে অন্যতম অভিযুক্ত দেবযানী মুখোপাধ্যায়ের ইডি-কে দেওয়া বয়ানের কপিও জমা দিয়েছে সিবিআই। তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, গ্রেফতারির পর বিধাননগর পুলিশ নথি উদ্ধারের জন্য তাঁকে বারবার মিডল্যান্ডের অফিসে নিয়ে যায়। টানা ২৩ দিন ধরে ২ ট্রাঙ্ক নথি বাছাই করেন দেবযানী। ল্যাপটপে সেই তথ্য-সহ যাবতীয় নথি এবং ক্যাশবুক তুলে দেন বিধাননগর পুলিশের হাতে।
সিবিআই তাদের আবেদনে দাবি করেছে, দেবযানীর দেওয়া নথি এবং ল্যাপটপের কোনও উল্লেখ সিজার লিস্টে নেই! দেবযানীর বয়ানের সূত্র ধরেই সিবিআই এও দাবি করেছে, আমিন আরা নামে সারদার আরেক কর্মী একাধিক ডায়রি দেন পুলিশকে। তাতে বিভিন্ন প্রভাবশালী-কে নগদে দেওয়া টাকার খতিয়ানের কথা উল্লেখ ছিল।
সিবিআইয়ের দাবি, এই সব তথ্য মামলার কেস ডায়েরিতে থাকলে বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের হদিশ পাওয়া যেত। তৃণমূল সরকারের গোড়ার দিকে, জঙ্গলমহল প্রকল্পে ১২-১৩টি অ্যাম্বুল্যান্স এবং মোবাইল ইউনিট দিয়েছিল সারদা। সেই প্রসঙ্গ টেনে সিবিআইয়ের আবেদনে দাবি করা হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে সারদা গোষ্ঠীর মিডিয়া সংস্থাকে টানা ২৩ মাস ২৭ লক্ষ টাকা করে মোট ৬ কোটি ২১ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়।
সিবিআইয়ের দাবি, এটিও বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অঙ্গ। সিবিআইয়ের অভিযোগ, বিধাননগরের পুলিশের তৎকালীন কমিশনার হিসেবে রাজীব কুমার তাঁর দায়িত্ব এড়াতে পারেন না।