নয়ানজুলিতে পড়ে স্বাস্থ্যসাথীর আবেদনপত্র ! শুরু রাজনৈতিক তরজা
শনিবার পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদল থানা এলাকার সিনেমা মোড়ে একটি নয়ানজুলির পাশে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের আবেদনপত্রগুলি পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এলাকাবাসীদের দাবি, এই আবেদনপত্রগুলি রামনগর এলাকার। মহিষাদলের এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘আজ সকালে হঠাৎ করে দেখতে পেলাম এখানে স্বাস্থ্যসাথীর আবেদন পত্র পড়ে আছে। নন্দীগ্রাম-রামনগর এলাকার আবেদনপত্র হবে। এগুলো কী করে এখানে এল? যাঁদের আবেদন পত্র তাঁরা কী করে স্বাস্থ্যসাথী পাবেন? প্রশাসন তদন্ত করে দেখুক৷’’
বিটন চক্রবর্তী, পূর্ব মেদিনীপুর: পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদলে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের আবেদনপত্র উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য। আবেদনপত্রগুলি রামনগর এলাকার বলে দাবি এলাকাবাসীর। এই নিয়ে শুরু হয়েছে শাসক-বিরোধী তরজা। কোথা থেকে এল স্বাস্থ্যসাথীর আবেদনপত্র, খতিয়ে দেখছে প্রশাসন।
কখনও স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের টোকেন বিলিকে কেন্দ্র করে অশান্তি। কখনও আবার স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকা সত্ত্বেও রোগীকে ফিরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ। বিধানসভা ভোটের মুখে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাধের প্রকল্প নিয়ে বারবার বিতর্ক দানা বেঁধেছে। সেই আবহে এবার উদ্ধার হল স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের কয়েকশো আবেদনপত্র।
শনিবার পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদল থানা এলাকার সিনেমা মোড়ে একটি নয়ানজুলির পাশে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের আবেদনপত্রগুলি পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এলাকাবাসীদের দাবি, এই আবেদনপত্রগুলি রামনগর এলাকার। মহিষাদলের এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘আজ সকালে হঠাৎ করে দেখতে পেলাম এখানে স্বাস্থ্যসাথীর আবেদন পত্র পড়ে আছে। নন্দীগ্রাম-রামনগর এলাকার আবেদনপত্র হবে। এগুলো কী করে এখানে এল? যাঁদের আবেদন পত্র তাঁরা কী করে স্বাস্থ্যসাথী পাবেন? প্রশাসন তদন্ত করে দেখুক৷’’
স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প নিয়ে ইতিমধ্যেই সুর চড়াতে শুরু করেছে বিজেপি। শুভেন্দু অধিকারীও এর আগে বলেছিলেন, স্বাস্থ্যসাথী আসলে একটা ভাঁওতা! এদিনও সেই একই সুর শোনা গিয়েছে গেরুয়া শিবিরের জেলার নেতাদের গলায়। পাল্টা জবাব দিয়েছে রাজ্যের শাসক দল। তমলুক সাংগঠনিক জেলার বিজেপি সহ সভাপতি তপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ‘‘স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড নিয়ে সাধারণ মানুষকে যে ভাঁওতা দেওয়া হচ্ছে এটাই তার প্রমাণ। সাধারণ মানুষ কি ভরসায় স্বাস্থ্যসাথী করাবে?’’
অন্যদিকে মহিষাদলের তৃণমূল ব্লক সভাপতি তিলক চক্রবর্তী জানান, পুরোটাই বিজেপির চক্রান্ত। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কালিমালিপ্ত করতেই এটা করা হয়েছে। এসব করে কিছু করতে পারবে না। কারণ মানুষ স্বাস্থ্যসাথীর সুবিধা পাচ্ছে৷
বিধানসভা ভোটের মুখে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে বরাদ্দও বৃদ্ধি করেছে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর আগে জানিয়েছিলেন, ‘‘স্বাস্থ্যসাথীর জন্য বরাদ্দ দেড় হাজার কোটি টাকা। তিন বছর অন্তর রিনিউ করা হবে। যে কোনও সময় এই প্রকল্পে যোগ দেওয়া যাবে ৷’’ কিন্তু তাসত্ত্বেও গত ৪ ফেব্রুয়ারি, স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকা সত্ত্বেও, ফালাকাটার এক রোগীকে চিকিৎসা না করেই ফিরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে শিলিগুড়ির ৫টি বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে।
গত বুধবার স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের টোকেন বিলিকে কেন্দ্র করে দুর্গাপুরের কাঁকসায় তৃণমূল নেতা তথা পঞ্চায়েত উপপ্রধানের বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার স্বাস্থ্যসাথীর আবেদনপত্র মিলল মহিষাদলে। এই ঘটনায় তদন্তের আশ্বাস দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।