'মেয়েদের পতিতা বানাতে না চাইলে স্কুলে পাঠাবেন না' পাক-ইউটিউবারের গানে নিন্দার ঝড়, কী বললেন নেটিজেনরা
YouTuber Hafiz Hasan Iqbal Chishti : ভিডিও ক্রিয়েটরের আরও দাবি, যেসব মেয়েরা স্কুলে যায়, তারা তাদের পবিত্রতা এবং সম্মান হারায় ।
বিশ্বজুড়ে ছি ছি পড়ে গিয়েছে। নেট দুনিয়ায় এখন সমালোচনার ঝড় এই ইউটিউবারকে ঘিরে। বিভিন্ন দেশের মানুষই সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ইউটিউবারের মানসিকতার নিন্দে করে পোস্ট করেছেন। কারণ, একটা গান। মেয়েদের পড়াশোনা করার বিরুদ্ধে কথা বলে নোটিজেনদের তীব্র সমালোচনা মুখে পড়েছেন পাকিস্তানী ইউটিউবার। গানটি হল , Apni Dhi Schoolo Hata Le Othy Dance Kardi Payi Ae
সম্প্রতি এক পাকিস্তানি ইউটিউবার এর গান ভাইরাল হয়। সেখানে আগাগোড়া মেয়েদের পড়াশোনা করার নিয়ে একাধিক কটু মন্তব্য করা হয়েছে। আর তার জেরেই এই ইউটিউবারের বিরুদ্ধে ক্ষেপে উঠেছেন নেটিজেনরা।
ভিডিওটি কয়েক সপ্তাহ আগে আপলোড করেছিলেন ইউটিউবার হাফিজ হাসান ইকবাল চিশতি। সেখানে ওই ইউটিউবারের মতে, মেয়েদের স্কুল কলেজে পড়া বন্ধ করে দেওয়া দরকার। সেই সঙ্গে ওই কনটেন্ট ক্রিয়েটারের মতে, মেয়েরা যে নৃত্যকলার অনুশীলন করে, তা ইসলাম বিরোধী। তাই অভিভাবকদের উচিত মেয়েদের স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেওয়া। ভিডিও ক্রিয়েটরের আরও দাবি, যেসব মেয়েরা স্কুলে যায়, তারা তাদের পবিত্রতা এবং সম্মান হারায় । এখানেই থামেননি তিনি, নিজের মেয়েদের দেহপসারিণী না তৈরি করতে হলে স্কুল ছাড়িয়ে বাড়িতে বসিয়ে রাখুন। এমনই আগাগোড়া গোঁড়া, লিঙ্গবৈষম্যমূলক কথা বার্তায় ভর্তি গানটি।
কিন্তু হঠাৎ কেনই বা এমন ভিডিও ? কী পরিপ্রেক্ষিতে ? সম্প্রতি ইউনেস্কোর অনুরোধে পাকিস্তানের একটি স্কুলে নাচের প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। সেই ভিডিও ফুটেজ সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। সেই নাচ-গানকেই ইসলাম বিরোধী দাবি করে, মেয়েদের স্কুলে পাঠানোই বন্ধ করা দরকার বলে দাবি করেছেন ওই ইউটিউবার।
ভিডিওটি সামনে আসার পর থেকেই প্রচুর ভিউ পেয়েছে ঠিকই , তবে বেশিরভআগ নিন্দাজনক কমেন্ট পেয়েছে।
বহু নেটিজেনই এই গানের নিন্দে করেছেন। ও প্রশ্ন তুলেছেন, এ কোন পথে যাচ্ছে পাকিস্তান ? কেউ আবার লিখেছেন, আমার সত্যিই খারাপ লাগছে যে, পাকিস্তান এখনও এই ধরনের মানসিকতায় আটকে রয়েছে। লিখেছেন একজন ব্যবহারকারী। কেউ আবার লিখেছেন, "এই লোকটা আমাদের বোনদের সম্পর্কে এত নিম্ন স্তরের ভাষা ব্যবহার করার সাহস কীভাবে পেল ! একে অবশ্যই বয়কট করতে হবে। " এক জন নেটিজেন লিখেছেন, "এই ননসেন্স লোকটিকে দেখে আমি সত্যিই হতবাক, শিক্ষা প্রত্যেকের জন্য মৌলিক অধিকার, তা ছেলে বা মেয়ে যার জন্যই হোক না কেন। প্রতিটি মেয়ে শিক্ষা গ্রহণ করছে মানেই খারাপ কাজ করছে, এর কোনও মানে নেই। পাকিস্তানের ৭৫% মানুষের এই চরমপন্থী মানসিকতার জন্যই আমরা বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো অগ্রসর হচ্ছি না । মা-ই হলেন প্রত্যেক শিশুর কাছে প্রথম স্কুল। কাউকে ভাল নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার জন্য শিক্ষিত করা উচিত”। একজন আবার ইউটিউবার চিস্তিকে ট্রোল করে বলেছেন, "আমি গানটি যিনি বানিয়েছেন, তাঁকে বলি, ইসলামে গানও হারাম।"