মালয়েশিয়ায় বিতর্কে জাকির নায়েক, দেওয়া হল না ইসলামীয় সম্মেলনে বক্তব্য রাখার অনুমতি
গত ৮ অগাস্টের ওই ভিডিওতে জাকিরকে দেখা গিয়েছে বলতে যে মালয়েশীয় হিন্দুরা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রতি বেশি আনুগত্য। এরপরই, তাঁকে দেশ থেকে বহিষ্কারের দাবি তুলেছেন সেদেশের একাধিক মন্ত্রী।
নয়াদিল্লি: এবার মালয়েশিয়ায় বিতর্কের কেন্দ্রে জাকির নায়েক। বিতর্কিত ইসলাম ধর্মপ্রচারককে একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখা থেকে নিষিদ্ধ করল মালয়েশীয় প্রশাসন। ১৬-১৮ তারিখ একটি ইসলামীয় সভায় বক্তব্য রাখার কথা ছিল জাকিরের। কিন্তু, মালয়েশীয় পুলিশের তরফে তাঁকে আটকে দেওয়া হয়েছে বলে খবর। এমনকী, এক স্থানীয় মন্ত্রী এ-ও জানিয়েছেন, গত সপ্তাহে বৈষম্যমূলক মন্তব্য করার জন্য জাকিরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হবে। স্থায়ী নাগরিকত্ব পাওয়ার পর গত তিন বছর ধরে মালয়েশিয়াতেই রয়েছেন জাকির। কিন্তু, সেখানেও সম্প্রতি তাঁর একটি বক্তব্যের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর থেকে বিতর্কের কেন্দ্রে চলে এসেছেন তিনি। গত ৮ অগাস্টের ওই ভিডিওতে জাকিরকে দেখা গিয়েছে বলতে যে মালয়েশীয় হিন্দুরা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রতি বেশি অনুগত্য। এরপরই, তাঁকে দেশ থেকে বহিষ্কারের দাবি তুলেছেন সেদেশের একাধিক মন্ত্রী। এমনকী, বুধবার, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে জাকিরের প্রসঙ্গটি উঠে আসে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মুহিদ্দিন ইয়াসিন বলেন, মালয়েশীয়দের ভাবাবেগের কথা না চিন্তা করে কয়েকজন ভুয়ো খবর ও বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করে চলেছেন। তিনি জানান, এই বিষয়ে পুলিশ কঠোর পদক্ষেপ নেবে। এরপরই, জাকির নায়েক সহ তিনজনকে তলব করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ইয়ানিন বলেন, আমি অ-মালয়েশীয় নাগরিক সহ সকলকে মনে করিয়ে দিতে চাই, এদেশের সম্প্রীতি ও আইনশৃঙ্খলার ক্ষেত্রে যাদেরকে বিপজ্জনক বলে মনে করা হবে, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে সময় নষ্ট করবে না আমার মন্ত্রক। ১৬-১৮ অগাস্ট মালয়েশিয়ার পার্লিতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে সেদেশের সর্ববৃহৎ ইসলামীয় সম্মেলন। সেখানেই বক্তৃতা দেওয়ার কথা ছিল জাকিরের। কিন্তু, ইতিমধ্যেই সেখানে তাঁর বিরুদ্ধে ১৫০ বেশি অভিযোগ পুলিশের কাছে দায়ের হয়েছে। পার্লির পুলিশ প্রধান নুর মুশুর মহম্মদ জানিয়েছেন, জাকির ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতেই পারেন। কিন্তু, বক্তব্য রাখতে পারবেন না। যদি তা করেন, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে। আরেক মন্ত্রী খালিদ আব্দুলও জানিয়েছেন, জাকিরের উচিত মালয়েশিয়ার বিভিন্ন ধর্ম-বর্ণের মধ্যে সম্প্রীতি ও শান্তি বজায় রাখা। ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে এখানে সকলকে সমান সম্মান করা হয়ে থাকে বলেই আজ মালয়েশিয়া উন্নতি করেছে। এদিকে, মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রীর থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ক্ষমা দাবি করেছেন জাকির। একইসঙ্গে মন্ত্রীর বিরুদ্ধে পাল্টা মানহানির মামলার নোটিসও পাঠিয়েছেন তিনি।