আর এক বাসিন্দা বজরঙ্গী দাস জানাচ্ছেন, এই কুঠির আশপাশের বহু গ্রাম এখানকার ইংরেজদের ভয়ে ত্রস্ত ছিল। শেষমেষ ১৯৪২-এর ১৫ অগাস্ট মহম্মদপুর, বিরহর, উমরা বরুই, দৌপুরা ও গৌরীপুর সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ বিরহর গ্রামের জঙ্গলে বসে ঠিক করেন, কুঠিতে আগুন লাগিয়ে দিতে হবে।
4/9
ওমপ্রকাশ আরও জানিয়েছেন, ইংরেজরা এখানে পার্টি চলাকালীন পাশের গ্রাম থেকে এক নর্তকীকে ভাড়া করে। কিন্তু কোনও কারণে তিনি পার্টিতে উপস্থিত হতে পারেননি। পরদিন ইংরেজরা তাঁকে খালের জল নিতে দেখতে পায়। এরপর তারা তাঁর ওপর ৫০০ বিঘে জমি সেচের কর চাপিয়ে দেয়। দিতে না পারায় তাঁকে গ্রাম থেকে বহিষ্কার করে তারা।
5/9
বাংলোর পাশ দিয়ে যে খাল বইত, তার জল নিয়ে কোনও গ্রামবাসী শৌচক্রিয়া সারলে তাঁর ওপর চার গুণ কর বসত। জরিমানা দিতে না পারলে মারধর করা হত বা জেলে পুরে দেওয়া হত।ইংরেজদের সামনে দিয়ে কেউ গরুর গাড়ি করে গেলে চাবুক মারা হত তাঁকে। গরুগুলোকে পাঠানো হত পিঁজরাপোলে। গরু ছাড়িয়ে আনতে কৃষকদের দিতে হত দ্বিগুণ দাম।
6/9
স্থানীয় গ্রামবাসী কামতা প্রসাদ জানিয়েছেন, বড় বড় ইংরেজ অফিসাররা এই বাংলোয় এসে থাকতেন। থাকতেন মহিলাদের ধরে এনে অত্যাচার করা হত এখানে। ক্রুদ্ধ মানুষ একদিন বাংলোয় আগুন লাগিয়ে দেন।
7/9
এছাড়া ছিল টর্চার রুম। কুঠির ঠিক পাশে এখনও আছে হাজার বছরের বুড়ো বটগাছ। এতে গ্রামবাসীদের বেঁধে চাবুক মারত ইংরেজরা। কর দিতে না পারা কৃষকদের দিনের পর দিন না খেতে দিয়ে বেঁধে রাখা হত এখানে, চলত অকথ্য অত্যাচার।
8/9
উনিশ শতকে গ্রামের বাইরে খালের পাশে তৈরি হয় এই বাংলো। ইংরেজ অফিসাররা এখানে কাজকর্ম করতেন। ক্যানাল বিভাগ, টেলিগ্রাম ও পুলিশের কাজ চলত। জলের জন্য ছিল কুয়ো আর প্রার্থনার জন্য গির্জাঘর। এছাড়া এখানে বসে ইংরেজরা করত কর চাপানোর হিসেবনিকেশ।
9/9
কানপুরের মহম্মদপুর গ্রামের এই বাংলো অগাস্ট বিপ্লব দেখেছে। প্রতি বছর স্বাধীনতা দিবসে এখানে উত্তোলিত হয় জাতীয় পতাকা। ধ্বংসপ্রাপ্ত এই বাংলো এক সময় ইংরেজদের ছিল। এর ইটে ইটে এখনও পড়া যায় ৭৬ বছরের পুরোনো ইতিহাস।