Kali Puja 2023: ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের শক্তি অর্জনে পুজো শুরু, ভূত চতুর্দশীতে মহাকালীর আরাধনা
Malda News: মালদা শহরের এই মহাকালী পুজো এবছর ৯৩ বছরে পড়ল। ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শক্তি অর্জনের জন্য এই পুজো শুরু করেছিলেন অবিভক্ত মালদার কিছু যুবক।
অভিজিৎ চৌধুরী, মালদা: অমাবস্যায় নয়, চতুর্দশীতেই পুজোর আয়োজন। বছরের পর বছর ধরে এই রীতি মেনেই পুজো (Kali Puja 2023) হচ্ছে মালদার (Malda) ইংরেজবাজার ব্যায়াম সমিতির মহাকালী। এই কালীর বিশেষত্ব দশটি মাথা, দশটি হাত এবং দশটি পা। পুজো হয় তান্ত্রিক মতে। প্রতিমার পায়ের নিচে শিব নয়, পরিবর্তে নর মুণ্ডু থাকে।
চতুর্দশীতেই পুজোর আয়োজন: মালদা শহরের এই মহাকালী পুজো এবছর ৯৩ বছরে পড়ল। ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শক্তি অর্জনের জন্য এই পুজো শুরু করেছিলেন অবিভক্ত মালদার কিছু যুবক। যাঁরা নিয়মিত এখানে শরীর চর্চা করতে আসতেন। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভক্তরা এখানে পুজো দিতে আসেন। পুজোর আগে এক বিশাল শোভাযাত্রা সহকারে প্রতিমা নিয়ে আসা হয় মন্দিরে। তন্ত্র মতে পুজো হয় মহাকালীর। এমনকি বলি পর্যন্ত হয় এখানে।
মালদার ইংরেজবাজার শহরের গঙ্গাবাগের ইংরেজবাজার ব্যায়াম সমিতির কালীপুজো এখন দশ মাথার মহাকালী নামেই পরিচিত। ইংরেজবাজার ব্যায়াম সমিতি ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা করেছিলেন কমলকৃষ্ণ চৌধুরী। তিনি কেষ্ট মাস্টার নামে পরিচিত ছিলেন। প্রথমদিকে এই পুজো কেষ্ট মাস্টারের পুজো নামেই ইংরেজবাজার সহ জেলায় পরিচিতি ছিল। কেষ্ট মাস্টার ছিলেন একজন ব্যায়াম প্রশিক্ষক। লাঠি খেলা সহ বিভিন্ন শারীরিক কৌশলে পারদর্শী ছিলেন।
ইংরেজ শাসন থেকে মুক্তি পেতে তিনি গঙ্গাবাগে ১৯৩০ সালে ইংরেজবাজার ব্যায়াম সমিতির নামে একটি ক্লাব তৈরি করেন। সেখানে অবিভক্ত বাংলার বহু যুবক শরীরচর্চা সহ বিভিন্ন শারীরিক কসরত শিখতে আসতেন। এই ব্যায়াম সমিতিতে ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হত। দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের শক্তি অর্জন করতেই এখানে শুরু হয় শক্তির আরাধনা। কমল কৃষ্ণ চৌধুরীর হাত ধরে শুরু হয় দশ মাথা বিশিষ্ট মহাকালীর পুজো।
কেন ভূত চতুর্দশীতে পুজো?
ইংরেজশাসন পর্বে বিভিন্নভাবে অত্যাচারিত হতেন ভারতীয়রা। পুজো অনুষ্ঠানেও বাধা দেওয়া হত ইংরেজদের পক্ষ থেকে। তাই অমাবস্যার রাতে নয় তার আগের রাতে অর্থাৎ ভূত চতুর্দশীতে শুরু হয় মহাকালীপুজো।
মালদার হবিবপুর থানার জাজইল গ্রাম পঞ্চায়েতের মানিকোড়া গ্রামে কালীপুজো তিনশো বছরের পুরনো। এই পুজো নাকি করত ডাকাতরা। তখন জঙ্গলে ঘেরা ছিল মানিকোড়া। সেখানেই এই দেবীর পুজো দিতে আসত ডাকাতরা। রাতের অন্ধকারে পুনর্ভবা নদী পেরিয়ে মানিকোড়ায় আসত ডাকাতরা। সূর্য ওঠার আগেই পুজো দিয়ে আবার নিজেদের ডেরায় ফিরে যেত ডাকাতরা। তারপর সময় বয়েছে, নিয়ম বদলেছে কিন্তু পুজোটা রয়ে গিয়েছে। তবে লোকশ্রুতি অনুযায়ী ডাকাত দলের প্রথা মেনেই এখনও মশাল জ্বালিয়ে পুজো হয় এখানে।
আরও পড়ুন: Kali Puja 2023: 'স্বপ্নে দেখা..', গ্ৰামেরই মেয়ে রূপে পুজো 'মা আনন্দময়ী' কালীর