নয়াদিল্লি: আমেরিকা-সব পৃথিবীর তাবড় দেশের জন্য সতর্কবার্তা এসেছে আগেই। এবার চিনের জন্যও এল বিপদবার্তা। চিনের শহরাঞ্চলের এক তৃতীয়াংশ বাসিন্দা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে বাস করছে, ভূমির অবনমনে আগামী দিনে বড় ধরনের বিপদ নেমে আসতে পারে বলে কৃত্রিম উপগ্রহ থেকে তোলা ছবি নিয়ে অনুসন্ধানে মিলল ইঙ্গিত। শুধু চিনই নয়, ভূমির অবনমন এই মুহূর্তে গোটা পৃথিবীর সঙ্কট বলে মত গবেষকদের। (China Sinking)


ব্রিটেনের University of Angila-র গবেষকরা শাংহাই, বেজিং-সহ পৃথিবীর ৮২টি শহরের বর্তমান অবস্থা জানতে কৃত্রিম উপগ্রহের তোলা ছবি এবং সংগৃহীত তথ্য খতিয়ে দেখেন, তাতেই এই বিপদের ইঙ্গিত মিলেছে। গবেষকরা জানিয়েছেন, সামগ্রিক ভাবে শাংহাই এবং বেজিং-সহ অন্য শহরের ৭০ কোটি মানুষ এই মুহূর্তে ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে বসবাস করছেন। আগামী দিনে বিপদ নেমে আসতে পারে। (Science News)


কৃত্রিম উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত তথ্য খতিয়ে দেখে গবেষকরা জানিয়েছেন, চিনে ভূমির অবনমন যে হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে, ২১২০ সাল নাগাদ, তার গতি হবে বর্তমানের তুলনায় তিন গুণ। সমুদ্রপৃষ্ঠের চেয়ে ঢের নীচে বসে যাবে বিস্তীর্ণ শহরাঞ্চল, তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন ৫.৫ থেকে ১২.৮ কোটি বাসিন্দা।


আরও পড়ুন: Coconut Water Source: ডাবে জল আসে কোত্থেকে? সহজ নয়, প্রক্রিয়া বেশ জটিল


গবেষকরা জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে চিনের ৪৫ শতাংশ শহরাঞ্চলের অবনমন ঘটছে, যার মধ্যে ১৬ শতাংশ এলাকা বছরে ১০ মিলিমিটার করে বসে যাচ্ছে। বেজিং এবং উপকূলবর্তী শহর তিয়ানজিং এই ভূমি অবনমনের হটস্পট বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। ‘Science’ জার্নালে এই গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে।


তবে শহরাঞ্চলের এই অবনমনের জন্য মনুষ্যঘটিত কারণকেই দায়ী করেছেন গবেষকরা। তাঁদের দাবি, একদিকে মনুষ্যঘটিত কারণ, অন্য দিকে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে লাগাতার সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধি, এই দুই-ই খাঁড়া হয়ে ঝুলছে মাথার উপর। ভূগর্ভস্থ জলের উত্তোলন, আকছার নির্মাণই এই অবনমনের জন্য মূলত দায়ী। গত এক শতকে শাংহাইয়ে প্রায় ৩ মিটার ভূমির অবনমন ঘটছে বলে দাবি গবেষকদের।আগামী দিনে নির্মাণকার্যেও বাধা পেতে হতে পারে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।


এর আগেও, একটি গবেষণায় ভূমির অবনমন নিয়ে বিপদবার্তা আসে। ২১০০ সাল নাগাদ ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা, নাইজিরিয়ার লাগোস, টেক্সাসের হিউস্টন, বাংলাদেশের ঢাকা, ইতালির ভেনিস, ভার্জিনিয়ার ভার্জিনিয়া সমুদ্রসৈকত, তাইল্যান্ডের ব্য়াঙ্কক, লুইজিয়ানার নিউ অরল্যান্স, নেদারল্যান্ডসের রটারড্যাম, মিশরের আলেকজান্দ্রিয়া, ফ্লোরিডার মায়ামির মতো শহর ক্রমশ নীচে বসে যাচ্ছে বলে জানানো হয় গবেষণায়।