Science News: ঢেউয়ের রং দুধে আলতা, বালুতট একেবারে রক্তবর্ণ, প্রকৃতির ‘ভয়ঙ্কর সুন্দর’ রূপ ভাইরাল, ঠিক কী ঘটছে ইরানের উপকূলে?
Viral Video: দক্ষিণ ইরানের হরমুজ দ্বীপের রক্তবর্ণ রূপ এই মুহূর্তে ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়।

নয়াদিল্লি: ঘরপোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলে ভয় পায় বলে প্রচলিত রয়েছে। কিন্তু সাগরের জলই যদি সিঁদুরে লাল হয়ে যায়? বালুতটেও যদি রক্তবর্ণ ধারণ করে? শুনতে অবাস্তব মনে হলেও, ইরানের উপকূল অঞ্চল সত্যি সত্যিই রক্তবর্ণ ধারণ করল। শুধু বালুতটই নয়, দুধে আলতা রং ধারণ করল সাগরের জলও। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছে সেই ভিডিও। (Viral Video)
দক্ষিণ ইরানের হরমুজ দ্বীপের রক্তবর্ণ রূপ এই মুহূর্তে ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়। ভারী বৃষ্টির পরই সেখানকার মাটি, বালুতট এবং সাগরের জল রক্তবর্ণ ধারণ করে। একেবারে উজ্জ্বল গাঢ় লাল জলের ঢেউ আছড়ে পড়তে দেখা গিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই নিয়ে শোরগোল পড়ে গেলেও, স্থানীয়রা একটুও অবাক হননি। কারণ তাঁদের কাছে হরমুজ দ্বীপের সৈকতই ‘Red Beach’ নামে পরিচিত। (Science News)
কিন্তু বালুতট থেকে সাগরের জল, সব কিছু রক্তবর্ণ ধারণ করল কী করে? এর জন্য সেখানকার ভৌগলিক পরিবেশকেই যদিও দায়ী করছেন বিজ্ঞানীরা। হরমুজ দ্বীপটি আসলে হরমুজ প্রণালীর মধ্যে পড়ে, যা আরব উপসাগরের অংশ। সেখানকার লালমাটি, প্রকৃতির রঙিন রূপ সর্বজনবিদিত। কিন্তু লালমাটির উপর ভারী বৃষ্টিপাত হলেও, ওই রক্তবর্ণ রূপ কী করে সৃষ্টি হল, তার উত্তর খুঁজছেন অনেকেই, যার উত্তরও দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। )Hormuz Island Turns Blood Red)
Today’s rain on Hormuz Island in southern Iran caused the seawater along the shore to turn red, creating striking scenes. pic.twitter.com/wU4xhZKKOa
— Weather Monitor (@WeatherMonitors) December 16, 2025
ভূবিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, হরমুজ দ্বীপ ও সংলগ্ন অঞ্চলের মাটি আয়রনে সমৃদ্ধ। স্থানীয় ভাষায় এই মাটিকে Golak বলা হয়। আয়রনের প্রাচুর্যের জন্য এমনিতেই সেখানকার সমুদ্রসৈকতের মায়াবি রূপ চোখে পড়ে। আয়রন অক্সাইড এবং অন্য খনিজ পদার্থগুলি জলে মিশে ওই উজ্জ্বল গাঢ় লাল রংয়ের সৃষ্টি করে। এর সঙ্গে কোনও জৈবিক পদার্থের সম্পর্ক নেই।
আর ভারী বৃষ্টি হলে তো কথাই নেই। খাড়া পাহাড়ের ঢাল বেয়ে লাল মাটির স্রোত সাগরে নেমে আসে, যাতে চারপাশের মাটি, বালুতট সব রক্তবর্ণ ধারণ করে। পরপর ঢেউ এসে আছড়ে পড়ায়, লাল রং মিশে যায় জলেও। ফলে দুধে আলতা রং ধারণ করে ঢেউও। তাই হরমুজ দ্বীপে ভারী বৃষ্টি হলে তাকে ‘রক্তবৃষ্টি’ও বলা হয়।
তাই ভারী বৃষ্টি হলেই হরমুজ উপকূলে মানুষের ঢল নামে। রক্তবর্ণ প্রকৃতিকে চাক্ষুষ করতে জড়ো হন সাধারণ মানুষ, ছবি আঁকিয়ে থেকে ফোটোগ্রাফার। সোশ্য়াল মিডিয়ার দৌলতে ইরান থেকে বহু দূরে থাকা মানুষজন হরমুজ দ্বীপের ওই রক্তবর্ণ রূপই দেখতে পেয়েছেন।
হরমুজ দ্বীপকে ‘Rainbow Island’ বা ‘রামধনু’ দ্বীপও বলা হয়। কারণ কিছু দূর অন্তর অন্তরই ভিন্ন ভিন্ন রংয়ের প্রলেপ চোখে পড়ে পরিবেশে। তাই সারা বছরই সেখানে পর্যটকদের ভিড় লেগে থাকে।



















