Science News: কার্বন ডাই অক্সাইড ভেঙে ল্যাবেই তৈরি হল চিনি, আখচাষ না করেই বাজিমাত বিজ্ঞানীদের
Sugar Grown in Lab: জৈবিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কোনও বস্তুর রাসায়নিক উপাদানে হেরফের ঘটানোর প্রক্রিয়াকে বলা হয় বায়োট্রান্সফরমেশন সিস্টেম।

নয়াদিল্লি: জমিতে আখ চাষ করতে হবে না। প্রয়োজন পড়বে না কারখানারও। বরং কার্বন ডাই অক্সাইড থেকেই চিনি উৎপাদন করা সম্ভব হবে। এবার এমনই উপায় খুঁজে বের করলেন চিনের বিজ্ঞানীরা। অ্যালকোহল মিথানল থেকে সাদা চিনি উৎপাদন করে অসম্ভবকে সম্ভব করে দেখিয়েছেন তাঁরা। আর তাতেই ভবিষ্যতের সমূহ সম্ভাবনার কথা উঠে আসছে। কারণ, বিজ্ঞানীদের দাবি, কার্বন ডাই অক্সাইড থেকেই খাদ্য উৎপাদন সম্ভব হবে। (Science News)
জৈবিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কোনও বস্তুর রাসায়নিক উপাদানে হেরফের ঘটানোর প্রক্রিয়াকে বলা হয় বায়োট্রান্সফরমেশন সিস্টেম। সেই পদ্ধতিতেই সুক্রোজ উৎপাদনে সফল হয়েছেন বিজ্ঞানীরা। ফলে না আখ চাষ করতে হয়েছে বিজ্ঞানীদের, না জলের জোগান দিতে হয়েছে তাঁদের, না চিনি কলের প্রয়োজন পড়েছে। ল্যাবরেটরিতেই চিনি উৎপাদনে সফল হয়েছেন তাঁরা। (Sugar Grown in Lab)
শিল্পবর্জ্য এবং হাইড্রোজেনেটিক কার্বন ডাই অক্সাইড থেকে মিথানল নিষ্কাশন সম্ভব। এনজাইম ব্য়বহার করে সেই মিথানলকে সুক্রোজে রূপান্তর করেন বিজ্ঞানীরা। শুধু তাই নয়, এই একই উপায়ে ফ্রুকটোজ, স্টার্চের মতো কমপ্লেক্স কার্বহাইড্রেট তৈরি করা সম্ভব হয়েছে।
Science Bulletin জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, কৃত্রিম উপায়ে কার্বন ডাই অক্সাইডতে খাদ্যদ্রব্য এবং রাসায়নিে রূপান্তরিত করা গিয়েছে। এই কৌশলে পরিবেশগত এবং জনসংখ্যার দরুণ সৃষ্ট সমস্যাগুলির মোকাবিলা করা সম্ভব বলে মত চিনের Academy of Sciences-এর Tianjin Institute of Industrial Biotechnology-র। এই গোটা পদ্ধতিকে তারা In Vitro Biotransformation বলে উল্লেখ করেছে।
সুক্রোজ বা সাদা চিনি মূলত আখ থেকেই উৎপন্ন হয়। দক্ষিণ এশিয়া এবং উষ্ণ দেশগুলিতেই আখ চাষ করা হয়। উত্তর গোলার্ধের ঠান্ডা দেশগুলিতে আবার Sugar Beet উদ্ভিদ থেকে চিনি উৎপন্ন করা হয়। চিনে দু’টি চাষেরই উপযুক্ত পরিবেশ রয়েছে। সেখানে বছরে ১.৫ কোটি টন চিনির প্রয়োজন পড়ে, যার মধ্যে ৫০ লক্ষ টনই বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। ফলে চাষ না করেই চিনি উৎপাদন সম্ভব হলে চিন্তার কারণই থাকবে না।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, পৃথিবীর জনসংখ্যা বেড়েই চলেছে। এত সংখ্যক মানুষের খাদ্যের জোগাড় করতে শুধু চাষবাসের উপর নির্ভর করে থাকলে হবে না। কারণ আগামী দিনে চাষের জমিও কম পড়বে। চাষের জন্য প্রয়োজনীয় জলও না পাওয়া যেতে পারে। বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তন দিনে দিনে যে আকার নিচ্ছে, তাতে আগামী দিনে চাষবাসে সমস্যা হবে। সেক্ষেত্রে বিকল্প রাস্তা খুঁজতে গিয়েই কার্বন ডাই অক্সাইড ভেঙে চিনি উৎপাদনের রাস্তা বের করে ফেলেছেন বিজ্ঞানীরা।
এর আগে, ২০২১ সালে Dalian Institute of Chemical Physics-এর গবেষকরা জানিয়েছিলেন, কম তাপমাত্রায় কার্বন ডাই অক্সাইড ভেঙে মিথানল উৎপাদন সম্ভব। কার্বন ডাই অক্সাইডের রাসায়নিক উপাদানে হেরফের ঘটিয়ে যেভাবে চিনি উৎপাদন করা গিয়েছে, একই উপায়ে আগামী দিনে গ্রিনহাউস গ্যাসকে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহারের রাস্তা খুলে গিয়েছে বলেও মনে করা হচ্ছে।























