Mohun Bagan SG: ইস্টবেঙ্গলের পরিণতি দেখে চিন্তিত, নর্থ ইস্টকেও সমীহ করছেন হাবাস
Antonio Lopez Habas: প্রতিপক্ষকে সমীহ করলেও হাবাস জানিয়ে দিলেন শনিবারের ম্যাচেও তাদের লক্ষ্য একই থাকবে, তিন পয়েন্ট অর্জন করা।
কলকাতা: চার দিন আগেই তাঁর দল গোয়ায় গিয়ে তাদের হারিয়ে এসেছে। চলতি ইন্ডিয়ান সুপার লিগে (ISL) এই প্রথম কোনও দলের কাছে হারতে হয় এফসি গোয়াকে। এমন এক সাফল্যের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে গেলে শনিবার ঘরের মাঠে নর্থইস্ট ইউনাইটেডকে হারাতে হবে। গত শনিবার ইস্টবেঙ্গল এফসি-কে হারিয়ে আত্মবিশ্বাস অর্জন করেছে নর্থইস্ট, যা তাদের মোহনবাগানের বিরুদ্ধে কাজে লাগবে। লিগ টেবলে তাদের চেয়ে চার ধপ নীচে থাকলেও তাই নর্থইস্টকে যথেষ্ট সমীহ করছেন মোহনবাগানের (MBSG) স্প্যানিশ কোচ আন্তোনিও লোপেজ হাবাস (Antonio Lopez Habas)।
শুক্রবার কলকাতায় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “নর্থইস্ট দলে একজন ভাল কোচ আছেন। ভাল দল ওরা। প্রতিপক্ষ হিসেবে কঠিন। ওরা বিভিন্ন সিস্টেমে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খেলছে। ওদের প্রতিপক্ষদের কাউন্টারে ওঠা কঠিন হয়ে যায়। গত ম্যাচে ওরা ভাল খেলেছে, জয়ও পেয়েছে”।
প্রতিপক্ষকে সমীহ করলেও হাবাস জানিয়ে দিলেন শনিবারের ম্যাচেও তাদের লক্ষ্য একই থাকবে, তিন পয়েন্ট অর্জন করা। বলেন, “নর্থইস্টের বিরুদ্ধেও আমাদের লক্ষ্য একই, তিন পয়েন্ট অর্জন করা। তিন দিন আগেই গোয়ায় সম্পুর্ণ অন্য আবহাওয়ায় ম্যাচ খেলে, সেখান থেকে ফিরে এসে এই ম্যাচে নামতে হচ্ছে আমাদের। কাজটা কঠিন। তবে কোনও অজুহাত দেব না। আমাদের ম্যাচটা খেলতে হবে। দেখা যাক কাদের নিয়ে শুরু করতে পারি আর কাদের রিজার্ভ বেঞ্চে রাখতে হবে। টেকনিক্যাল স্টাফদের সাহায্য নিয়ে খেলোয়াড় পরিবর্তন করতে হবে ম্যাচে। যাতে সব খেলোয়াড়েরই খেলার সময়ের মধ্যে একটা ভারসাম্য থাকে”।
এফসি গোয়ার বিরুদ্ধে জয়ের পরে যে সবুজ-মেরুন শিবিরের ফুটবলারদের আত্মবিশ্বাস একলাফে অনেকটা বেড়ে গিয়েছে, তারা এখন লিগশিল্ড জেতার স্বপ্নও দেখতে শুরু করে দিয়েছে, তা কোচের কথাতেই বোঝা গেল। তিনি বলেন, “গত ম্যাচে জয় খুব দরকার ছিল। প্রতি ম্যাচেই জেতার মানসিকতা নিয়ে নামাই পেশাদার ফুটবলারদের কাজ। আমাদের ছেলেরাও সে রকম মানসিকতা নিয়েই মাঠে নামে। ওরা অনেক আত্মত্যাগ করে। ফলে ওদের জয়টা প্রাপ্য ছিল। শুধু ফুটবলে নয়, জীবনেও এ রকম মানসিকতা থাকা উচিত। আমাদের ছেলেদের জেতার ইচ্ছা প্রবল। ওরা লিগশিল্ড জিততে চায়। কিন্তু ওদের বুঝতে হবে যে, একটা ম্যাচ খেলতে নামার আগে মানসিকতা আর পুরো লিগ নিয়ে মানসিকতা এক রকম হওয়া উচিত না। একটা ম্যাচ জিততে হলে শৃঙ্খলাবদ্ধ ও দৃঢ়চেতা হওয়া দরকার”।
শনিবারের ম্যাচে চোট সারিয়ে আনোয়ার আলির ফিরে আসার ব্যাপারে হাবাস বলেন, “আনোয়ারের ব্যাপারে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নিইনি। কাল দেখব ও কেমন থাকে, তার পরে সিদ্ধান্ত নেব”।
তবে জনি কাউকোকে নিয়ে আত্মবিশ্বাসী কোচ বলেন, “একশো শতাংশ ফিট। ও ১২ মাস ফুটবল খেলেনি জনি। ও একজন পেশাদার ফুটবলার, আন্তর্জাতিক ফুটবলের অভিজ্ঞতাও ওর আছে। আমাদের খেলোয়াড়দের যথাসম্ভব দ্রুত চাঙ্গা হয়ে উঠতে হবে। গোয়ার হোটেলেই আমরা রিকভারি সেশন করেছি, তার পর কলকাতায় রওনা হয়েছি”।
বঙ্গ-প্রতিভা দীপ্পেন্দু বিশ্বাসের প্রথম ম্যাচের পারফরম্যান্স তাঁকে নিয়ে আশাবাদী করে তুলেছে হাবাসকে। নিজেই সে কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “ওর খেলায় আমি খুশি। ওর সামনে দীর্ঘ ফুটবল জীবন। সিনিয়রদের দলে ওকে রাখা যেতে পারে। অনুশীলনে ওকে দেখার পর থেকেই আমার স্টাফদের সঙ্গে ওর ব্যাপারে কথা বলেছি, যাতে ওকে খেলানো যায়। এখন তো ও পাশে হেক্টর ইউস্তের মতো খেলোয়াড় পেয়ে গিয়েছে। ওর পরামর্শও খুবই প্রয়োজন দীপ্পেন্দুর। খেলোয়াড়দের অবস্থা এবং পরিস্থিতি বিচার করে আমরা প্রথম দল বাছাই করি ম্যাচের আগে। এই ম্যাচের ক্ষেত্রেও তাই করব। তাই দীপ্পেন্দু প্রথম দলে থাকবে কি না, এখনই বলতে পারব না”।
বাংলার তরুণ ডিফেন্ডারের প্রশংসা শোনা গেল হেক্টর ইউস্তের গলাতেও। বললেন, “দীপ্পেন্দু পেশাদার, খুবই ভাল ফুটবলার, যথেষ্ট চনমনে। আমাকে আলাদা করে ওকে উজ্জীবিত করতে হয় না”। গোয়াকে হারানোর পরে বাড়তি চাপে আছে কি না তাঁর দলে, এই প্রশ্নে অভিজ্ঞ স্প্যানিশ ডিফেন্ডার বলেন, “দীপ্পেন্দু পেশাদার, খুবই ভাল ফুটবলার, যথেষ্ট চনমনে। আমাকে আলাদা করে ওকে উজ্জীবিত করতে হয় না”।
বুধবার ও শনিবারের ম্যাচের মধ্য যে কোনও অনুশীলন করতে পারেননি তাঁরা, তা জানিয়ে হেক্টর বলেন, “সত্যি বলতে, এই ম্যাচের জন্য আমরা অনুশীলন করার সুযোগ এখনও পাইনি। আজই সেই সুযোগ পাব। আজই কোচ আমাদের জানাবেন কী করতে হবে”।
প্রতিপক্ষের গতিময় আক্রমণকে আটকাবেন কী ভাবে, জানতে চাইলে ইউস্তে বলেন, “এই লিগে প্রায় সব দলেই ভাল আক্রমণ বিভাগ আছে। তাদের জন্য সব সময়ই আমাদের তৈরি থাকতে হয়। বিভিন্ন বিকল্প থাকে। তবে আমরা আত্মবিশ্বাসী। কারণ, আমরা একটা ভাল ম্যাচ জিতে এসেছি। তাই সব রকমের সমস্যা সমাধান করার জন্য আমরা তৈরি”।
রক্ষণে আনোয়ার আলি, ব্রেন্ডান হ্যামিলরা না থাকলেও মানিয়ে নিতে চান তিনি। বলেন ডিফেন্সে ওঁরা না থাকলেও সমস্যা হবে না।, “শুভাশিস যথেষ্ট অভিজ্ঞ। আমরা দুজনে অনেকটা চাপ নিই। দলের তরুণরাও অনেক চেষ্টা করে ওদের কাজটা ঠিকঠাক করতে। ওরা প্রত্যেকেই প্রতিভাবান, দক্ষ। যথেষ্ট সাহসীও। আমি আমার অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে যতটা পারি দেওয়ার চেষ্টা করি। শুভাশিসও সেটাই করে। ফলে সমস্যা হয় না”।
তবে সব দায় ডিফেন্ডারদের কাঁধে চাপাতে চান না এই তিনি। বলেন “শুধু ডিফেন্ডাররা নয়, দলের এগারোজনই একই লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নামে। আমরা আত্মবিশ্বাসী কাল আমরা ভাল খেলব। গত দুটো ম্যাচেই আমরা ভাল খেলেছি। দুই ম্যাচেই আমাদের তরুণ সদস্যরাও যথেষ্ট ভাল খেলেছে”।
দলের গোলকিপার বিশাল কয়েথেরও প্রশংসা করে ইউস্তে বলেন, “বিশাল লিগের অন্যতম সেরা গোলকিপার। আমরা খুশি যে ও আমাদের সঙ্গে রয়েছে। ও প্রচুর গোল বাঁচিয়েছে। আমরা যাতে গোল না খাই, সে জন্য ও সবসময় যথেষ্ট সতর্ক থাকে। একাধিক ম্যাচে ক্লিন শিট রেখেছে ও। তাই আমরা অনেকটাই চাপমুক্ত হয়ে খেলতে পারি”
(তথ্যসূত্র: ISL মিডিয়া)
আরও পড়ুন: অশ্বিনের কীর্তির দিনই ডাকেটের ঝোড়ো সেঞ্চুরি, ৩৫ ওভারে ২০৭ তুলল ইংল্যান্ড!
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।