Vijay Hazare Trophy: তিনিই ত্রাতা, সেঞ্চুরি করে বাংলাকে বিজয় হাজারের প্রি-কোয়ার্টারে তুলে ছেলেকে দেওয়া কথা রাখলেন অনুষ্টুপ
Bengal vs Punjab: ৮৫ রানে ছয় উইকেট থেকে অপরাজিত ১১১ রানের ইনিংস খেলে বাংলাকে জয় এনে দেন অনুষ্টুপ মজুমদার।
থানে: পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে বিজয় হাজারে ট্রফির (Vijay Hazare Trophy) গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে দুরন্ত জয় পেল বাংলা দল (Bengal vs Punjab)। এই জয়ের সুবাদে বাংলা দল টুর্নামেন্টের প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে নিজেদের জায়গা পাকা করে নিল। বাংলার জয়ের মূল কারিগর দলের অভিজ্ঞ ব্যাটার অনুষ্টুপ মজুমদার (Anustup Majumdar)। মিডল অর্ডার ব্যাটারের চওড়া ব্যাটে ভর করেই পাঞ্জাবকে ৫২ রানে হারাল বাংলা। শেষ ষোলোর পর্বে বাংলার প্রতিপক্ষ গুজরাত।
এদিন ম্যাচে টসে জিতে প্রথমে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল পাঞ্জাব। বল হাতে শুরুতেই সিদ্ধার্থ কৌল এবং অভিষেক শর্মা ফুল ফোটেন। ইনিংসের প্রথম বলেই আউট হন হাবিব গাঁধী। আরেক ওপেনার অভিষেক পোড়েলও নয় রানের বেশি করতে পারেননি। অধিনায়ক সুদীপ ঘুরামি ২৬ রানে আউট হলে বাংলা ৩৯ রানে তিন উইকেট হারিয়ে ফেলে। শাহবাজ আমেদ (১৬), কৌশিক মাইতি (০) ও ঋত্ত্বিক রায় চৌধুরীও (৫) ব্যাট হাতে ব্যর্থ হন। ৮৫ রানে ছয় উইকেট হারিয়ে কার্যত ধুঁকছিল বাংলা।
টুর্নামেন্টের গ্রুপ পর্বে প্রথম পাঁচ ম্যাচ শেষে গ্রুপ শীর্ষে থাকলেও, শেষ ম্যাচে পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে বড় হার কিন্তু বাংলা দলকে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে দিতে পারত। শতরানের গণ্ডি পার হওয়ার আগে ছয় উইকেট হারিয়ে ফেলায় বাংলা ডাগ আউটেও হয়তো এই চিন্তাই সকলের মাথায় ঘুরছিল। তবে এই পরিস্থিতি থেকেই পাল্টা লড়াই শুরু করেন অনুষ্টুপ মজুমদার। অতীতে বারংবার মুশকিল পরিস্থিতিতে বাংলার ত্রাতা হয়ে ওঠার কৃতিত্ব রয়েছে অনুষ্টুপের দখলে। এদিনও ফের একবার জ্বলে ওঠে 'ক্রাইসিস ম্যান'র ব্যাট।
ম্যাচে মাঠে আসার পথেই ছেলেকে ফোন করেছিলেন অনুষ্টুপ। ফোনে তাঁকে তাঁর ছেলে জানতে চেয়েছিল এই মরশুমে বিজয় হাজারেতে অভিমন্যু ঈশ্বরণ বাদে বাংলার তরফে আর কেউ শতরান হাঁকিয়েছেন কেন। সেই প্রশ্নের জবাবে অনুষ্টুপ ছেলেকে বলেন তিনি আজকের ম্যাচে শতরান হাঁকানোর চেষ্টা করবেন। সন্তানকে দেওয়া কথা কিন্তু রাখলেন তারকা ব্যাটার। যে পিচে বাকি ব্যাটাররা রান করতে গিয়ে বিরাট বিপাকে পড়ছিল, সেখানে অনুষ্টুপ ১১৬ বলে অপরাজিত ১১১ রানের একটি ইনিংস খেলেন অনুষ্টুপ। তাঁকে যোগ্য সঙ্গ দেন করণ লাল। তিনি করেন ৬৬ রান। সপ্তম উইকেটে দুইজনের ১৪৫ রানের পার্টনারশিপে ভর করেই বাংলা নয় উইকেটে ২৪২ রান তোলে।
অল্প রান ডিফেন্ড করতে নেমে বাংলার বোলাররা মিলেমিশে পাঞ্জাবের উইকেট তুলে নেয়। শাহবাজ ও কৌশিক তিনটি করে উইকেট নেন। দুইটি করে উইকেট নেন মহম্মদ কাইফ এবং প্রদীপ্ত প্রামাণিক। ১৯০ রানেই শেষ হয়ে যায় পাঞ্জাবের ইনিংস। তামিলনাড়ু ও বাংলা উভয় দলের দখলেই ২০ পয়েন্ট থাকলেও, বিজয় হাজারের নিয়মে এক্ষেত্রে হেড-টু-হেড দেখা যায়। সেই ম্যাচ তামিলনাড়ু জেতায় সরাসরি কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছে যায়। বাংলা খেলবে প্রি-কোয়ার্টার ফাইনাল। বিজয় হাজারের নিয়ম অনুযায়ী পাঁচ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন দল সরাসরি কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছয়। পাঁচ গ্রুপের রানার্স আফ এবং তৃতীয় স্থানে শেষ করা সেরা দল খেলে প্রি-কোয়ার্টার ফাইনাল। তাই গ্রুপে দ্বিতীয় স্থানে শেষ করায় বাংলাকে প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালই খেলতে হবে।
ম্যাচে কার্যত একপেশে পরিস্থিতি থেকে দুরন্ত জয়ে স্বাভাবিকভাবেই উচ্ছ্বসিত বাংলা ম্যানেজমেন্ট। বাংলার কোচ সৌরাশিস লাহিড়ী কিন্তু অনুষ্টুপ মজুমদারকে ম্যাচের পরেই দরাজ সার্টিফিকেট দেন। তাঁর মতে এটাই তাঁর দেখা সাদা বলের ক্রিকেটের সেরা ইনিংস। সৌরাশিস বলেন, 'এটা আমার দেখা সেরা ইনিংস। এত চাপের মধ্যে এমনভাবে খেলাটা সহজ নয়। অপরদিকে প্রতিপক্ষও তো বেশ কঠিন ছিল। পাঞ্জাব দল সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফি চ্যাম্পিয়ন। ওদের বোলিং লাইন আপও দারুণ। এমন বোলিংয়ের বিরুদ্ধে, ওই চাপে অনুষ্টুপ একবারে চান্সলেস ইনিংস খেলে। তাই নিঃসন্দেহে এটা আমার দেখা সেরা সীমিত ওভারের ইনিংস।'
এবার প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালের লড়াই। বাংলার সামনে এবার গুজরাতের চ্যালেঞ্জ।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।
https://whatsapp.com/channel/0029VaCBCh6545uwkeNBg11y
আরও পড়ুন: হার্দিকের চোট সারাতে বিশেষ পরিকল্পনা বিসিসিআই-এনসিএর