Richarlison : মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে খুনের হুমকি দিয়েছিল ড্রাগ পাচারকারীরা, আইসক্রিম বেচে জীবন কেটেছে ব্রাজিলের গোলদাতা রিচার্লিসনের
Brazil Football Team : অ্যাটলেটিকো মিনেইরোতে কেরিয়ার শুরুর পর ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব ওয়াটফোর্ড তাঁকে সই করায়। কয়েক মরশুমেই মধ্যে তিনি হন এভার্টন ক্লাবের ইতিহাসে সবথেকে বেশি দামে কেনা ফুটবলার।
দোহা : প্রথম টাচটা ঠিকমতো বাগে আনতে পারেননি, বল উঠে গিয়েছিল উপরে। কিন্তু সেখান থেকেই শিল্পীর মতো শূন্যে শরীর ভাসিয়ে কার্যত গোলের ক্যানভাস ভরিয়ে দিয়েছেন। ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার রিচার্লিসনের (Richarlison) বাইসাইকেল কিকে করা গোল আপাতত গোটা বিশ্বে আলোচনার হটকেক। সার্বিয়াকে হারিয়ে ব্রাজিলের (Brazil) বিশ্বকাপের অভিযানের শুভ সূচনা হয়েছে তাঁর জোড়া গোলের সুবাদেই।
পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের কাতারের মঞ্চে আলো ঝলমলে শুরুও হয়েছে। তবে যে রিচার্লিসনের সুবাদে জোগো বোনিতোর ঝলক, তাঁর জীবনসংগ্রাম মোটেই বাইসাইকেল কিকের মতো দর্শনীয় ছিল না। বরং একাধিক ঘাত-প্রতিঘাত, দারিদ্র পেরিয়ে উঠে আসতে হয়েছে তাঁকে। ভয়ঙ্কর ড্রাগ সাম্রাজ্যের মধ্যে থেকে একে একে বন্ধুদের বিপথে চালিত হতে দেখেও নিজের মতো করে থেকেছেন কষ্ট করে উপার্জনের সৎ পথে। ছোটবেলায় একবার এক ড্রাগ ডিলার (Drug Dealer) মাথায় ধরেছিল বন্দুকও। খুনের হুমকির মাঝে সেদিন কোনওভাবে প্রাণে বেঁচেছিলেন। পরে সংসার চালাতে মায়ের সঙ্গে বেচেছেন আইসক্রিম।
ব্রাজিলের নোভা ভ্যালেন্সিয়া এলাকায় জন্ম রিচার্লিসনের। পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে সবথেকে বড় তিনি। বাবা রাজমিস্ত্রীর কাজ করতেন ও মা বেচতেন আইসক্রিম। ড্রাগ পাচারের স্বর্গরাজ্য বলে পরিচিত নোভা ভ্যালেন্সিয়াতে চোখের সামনে কাঁচা টাকা উপার্জনের সহজ রাস্তা হিসেবে ড্রাগ পাচারের সঙ্গে যুক্ত হওয়া বেছে নিতে দেখেছিলেন একাধিক বন্ধুকে। কিন্তু ছোট্ট রিচার্লিসন জানতেন, সেই রাস্তা ভুল। সংসারে সাহায্য়ের জন্য মায়ের সঙ্গে বেচতেন আইসক্রিমও। যদিও ড্রাগ পাচারের রাস্তা থেকে রিচ্রালিসন দূরে থাকলেও ছোটবেলায় তাঁর রাস্তায় এসে পড়েছিল ড্রাগ পাচারকারীরা। ১৪ বছর বয়সে এক ড্রাগ ডিলার তাঁর মাথায় বন্দুক ধরেছিল বলেই ইংল্যান্ডে ক্লাব ফুটবল খেলতে গিয়ে এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন রিচার্লিসন।
ড্রাগ সাম্রাজ্য চোখের সামনে দেখার আগেই অবশ্য ছোটবেলা থেকেই ফুটবল অনুরাগ তৈরি হয়ে গিয়েছিল রিচার্লিসনের। ১০ বছর বয়সে তাঁকে একসঙ্গে বেশ কয়েকটি ফুটবল উপহার দিয়েছিলেন তাঁর বাবা, আর্থিক সামর্থ্য খুব বেশি না থাকলেও ছেলে যাতে ভাল ফুটবলার হতে পারে, সেটা নিশ্চিত করতে চেয়েছিলেন তাঁর বাবা। ব্রাজিলের অ্যাটলেটিকো মিনেইরোতে কেরিয়ার শুরুর পর ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব ওয়াটফোর্ড তাঁকে সই করায়। কয়েক মরশুমেই মধ্যে তিনি হন এভার্টন ক্লাবের ইতিহাসে সবথেকে বেশি দামে কেনা ফুটবলার। তাঁকে দলে এনেছিলেন এভার্টনের সেই সময়ের তথা বর্তমানে রিয়াল মাদ্রিদের কোচ কার্লো অ্যান্সেলোত্তি। একাধিক চ্যাম্পিয়ন্স লিগজয়ী কোচ অ্যান্সেলোত্তি তাঁকে বলেছিলেন, 'একদিন ব্যালন ডি'ওর পাবে তুমি'। অ্যান্সেলোত্তির সেই কথা বাস্তব হবে কি না, সে তো সময়ই বলবে, তবে তিনি বা তিতে যে ফুটবলার চিনতে ভুল করেননি, তাঁর ঝলক মিলেছে এবারের বিশ্বকাপে ব্রাজিলের প্রথম ম্যাচেই।
আরও পড়ুন- ম্যাচের মাঝেই মাঠ ছাড়লেন নেমার, তারকা ফুটবলারের চোট কতটা গুরুতর?