ODI World Cup 2023: বিশ্বজয়ের মাঠে ফের ভারত-শ্রীলঙ্কা, ক্রিকেট-বিস্ফোরণের অপেক্ষায় বাণিজ্য নগরী
ABP Exclusive: এবিপি লাইভ ওয়ান ডে বিশ্বকাপের দশ স্টেডিয়ামের হাল হকিকত জানাতে শুরু করল বিশেষ এই সিরিজ়। যার তৃতীয় পর্বে আলোচনা হবে ওয়াংখেড়ে ক্রিকেট স্টেডিয়াম নিয়ে।
![ODI World Cup 2023: বিশ্বজয়ের মাঠে ফের ভারত-শ্রীলঙ্কা, ক্রিকেট-বিস্ফোরণের অপেক্ষায় বাণিজ্য নগরী ICC ODI World Cup 2023: Wankhede Cricket Stadium matches, records, stats, pitch and other details ODI World Cup 2023: বিশ্বজয়ের মাঠে ফের ভারত-শ্রীলঙ্কা, ক্রিকেট-বিস্ফোরণের অপেক্ষায় বাণিজ্য নগরী](https://feeds.abplive.com/onecms/images/uploaded-images/2023/08/11/f1b32536077dbc7f13150277fbb774a2169174750402150_original.jpg?impolicy=abp_cdn&imwidth=1200&height=675)
মুম্বই: দেখতে দেখতে ১২ বছর কেটে গিয়েছে। সেই শব্দটা ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীদের কানে এখনও বাজে।
টাক্।
নুয়ান কুলশেখরার বল মাথার ওপর দিয়ে বাউন্ডারিতে ফেলে দিয়েছিলেন ঝাড়খণ্ডের এক তরুণ। একটা সময় ক্রিকেট স্বপ্নকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য যাঁকে রেলের টিকিট কালেক্টরের কাজও করতে হয়েছে।
কুলশেখরার বলের ওপর সেই মহেন্দ্র সিংহ ধোনির (Mahendra Singh Dhoni) ব্যাটের চপেটাঘাতের আওয়াজে উৎসব শুরু হয়ে গিয়েছিল দেশজুড়়ে। সেদিন মাঠে উপস্থিত সকলেই বলেন যে, গোটা স্টেডিয়ামে, এমনকী মাঠের বাইরের মেরিন ড্রাইভ থেকেও নাকি শোনা গিয়েছিল সেই আওয়াজ।
টাক্।
দীর্ঘ ২৮ বছর পর শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে ওয়ান ডে ক্রিকেটে (ODI World Cup) বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ধোনির ভারত। মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে। স্বাভাবিকভাবেই ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাসে যে স্টেডিয়ামের নাম স্বর্ণাক্ষরে খোদাই হয়ে গিয়েছে।
কাছেই আরব সাগর। পাশে সর্পিল মেরিল ড্রাইভ। হয়তো ভারতের ব্যস্ততম রাস্তা। ড্রোন ক্যামেরায় রাতের স্টেডিয়াম ও সংলগ্ন মেরিন ড্রাইভের ছবি যেন মহাকাশকে মনে করিয়ে দেয়।
ওয়াংখেড়ে মানেই ক্রিকেট আর ইতিহাসের সহাবস্থান। রবি শাস্ত্রীর ৬ বলে ছয় ছক্কার মাঠ। সচিন তেন্ডুলকরের ক্রিকেট কেরিয়ারের শেষ ম্যাচের মঞ্চ। ধোনি-যুবরাজ সিংহ-গৌতম গম্ভীরদের বিশ্বজয়ের মাঠ।
ওয়ান ডে বিশ্বকাপের আর মাস দুয়েকও বাকি নেই। সাজ সাজ রব পড়ে গিয়েছে বিশ্বক্রিকেটে। সব দলই শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি সারতে ব্য়স্ত। তার ফাঁকে এবিপি লাইভ বিশ্বকাপের দশ স্টেডিয়ামের হাল হকিকত জানাতে শুরু করল বিশেষ এই সিরিজ়। যার প্রথম দুই পর্বে আলোচনা হয়েছে ধর্মশালা ক্রিকেট স্টেডিয়াম ও আমদাবাদের নরেন্দ্র মোদি ক্রিকেট স্টেডিয়াম নিয়ে। তৃতীয় কিস্তিতে আজ মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়ে।
মুম্বই ক্রিকেট সংস্থার (MCA) ঐতিহাসিক স্টেডিয়ামে হবে এবারের বিশ্বকাপের (ODI World Cup) ৫টি ম্যাচ। যার মধ্যে রয়েছে প্রথম সেমিফাইনাল ম্যাচ। গ্রুপ পর্বে রয়েছে দুটি ব্লকবাস্টার। শুরুতেই ইংল্যান্ড বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা। যে দুই দেশ বিশ্বকাপ জয়ের অন্যতম দাবিদার। সেই সঙ্গে নস্টালজিয়া উস্কে দেবে ভারত বনাম শ্রীলঙ্কা দ্বৈরথ। ২০১১ সালের দুই ফাইনালিস্টের লড়াই। অস্ট্রেলিয়া, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানও গ্রুপ পর্বের ম্যাচ খেলবে এই মাঠে।
১৯৮৭ সালে প্রথম ওয়ান ডে ম্যাচ হয়েছিল এই স্টেডিয়ামে। একটা সময় ভারতীয় ক্রিকেটে রাজত্ব করত মুম্বই। সুনীল গাওস্কর হোক বা দিলীপ বেঙ্গসরকর, সচিন তেন্ডুলকর হোক বা সঞ্জয় মঞ্জরেকর, মুম্বইয়ের ক্রিকেটার মানেই যেন জাতীয় দলে খেলার জন্যই তাঁদের জন্ম। ঘরোয়া ক্রিকেটে মুম্বইয়ের সেই আধিপত্য এখন আর নেই। বরং পাল্লা দিয়ে সৌরাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশরা উঠে এসেছে। রঞ্জি জিতেছে সাম্প্রতিক সময়ে। তবু মুম্বই মানেই কুলীন ক্রিকেট সমাজ। ভারতীয় দলের বর্তমান অধিনায়ক রোহিত শর্মারও হোমগ্রাউন্ড ওয়াংখেড়ে।
মুম্বইকে বলা হয় ভারতের বাণিজ্যনগরী। সেই শহরে যে ক্রিকেট নিয়ে এত উন্মাদনা, না দেখলে বিশ্বাসই হবে না। পিচ কেমন আচরণ করে, বাইশ গজে বোলারদের জন্য রসদ রয়েছে, নাকি ব্যাটারদের স্বর্গরাজ্য, ওয়ান ডে রেকর্ডই বা কেমন, সব নিয়ে আলোচনা হবে এই পর্বে।
পিচ: ওয়াংখেড়ে ক্রিকেট স্টেডিয়ামের পিচ বরাবরই ব্যাটার-বোলার, সকলকেই সাহায্য় করে। এই মাঠে যেমন সনৎ জয়সূর্যর মারকাটারি অপরাজিত ১৫১ রানের ইনিংস রয়েছে, সেরকমই মুরলী কার্তিকের ৬ উইকেট নিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে ধ্বংস করে দেওয়ার নজিরও রয়েছে। বোলারদের, বিশেষ করে স্পিনারদের জন্য বাড়তি সাহায্য় থাকে ওয়াংখেড়ের পিচে। সমুদ্রের পাশে হওয়ায় শুকনো হাওয়া। আর্দ্রতা কম থাকায় বল ঘোরে। নড়াচড়া করে। আবার আরব সাগরের হাওয়ায় পেসাররা স্যুইংও পান। পিচে অসমান বাউন্স থাকে। তবে ম্যাচ জুড়ে পিচের খুব একটা তারতম্য হয় না। মানে টস জিতে শুরুতে ব্যাটিং করে বিপক্ষের ওপর বড় রান চাপিয়ে দিয়ে স্পিন জালে ম্যাচ জেতার তত্ত্ব এই মাঠে অচল।
পরিসংখ্যান বলছে, এই মাঠে এখনও পর্যন্ত হওয়া ২৩টি ওয়ান ডে-র মধ্যে ১২টিতে রান তাড়া করা দল জিতেছে। ভারতের বিশ্বকাপের ফাইনাল জয়ও তো পরে ব্যাটিং করেই। বিশ্বকাপের পিচও একই থাকবে। বড় রান উঠতে পারে। তবে স্পিনারদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হবে।
আবহাওয়া: বিশ্বকাপে মুম্বইয়ের সবকটি ম্যাচই হবে অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে মাঝ নভেম্বর পর্যন্ত। সেই সময় তাপমাত্রার পারদ খুব একটা চড়া থাকবে না। তবে সমুদ্রের ধারে হওয়ায়, শীতও যে খুব জাঁকিয়ে পড়বে, তা নয়। বরং মনোরম আবহাওয়াই থাকবে। শিশির পড়বে। তবে তা ম্যাচের ভাগ্য নিয়ন্ত্রক হয়ে উঠবে না।
স্টেডিয়ামের মোট আসনসংখ্যা: আগে আসনসংখ্যা ছিল ৪৫,০০০। তবে ২০১১ সালে বিশ্বকাপের আগে সংস্কারের পর তা কমে দাঁড়িয়েছে ৩৩,১০৮
ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে ওয়ান ডে রেকর্ড:
প্রথম ওয়ান ডে – ১৭ জানুয়ারি, ১৯৮৭
শেষ ওয়ান ডে – ১৭ মার্চ, ২০২৩
ম্যাচ – ২৩
মোট রান – ১০,৫১২
মোট উইকেট – ৩৩৬
উইকেট প্রতি রান খরচ – ৩১.৩৮
ওভার প্রতি রান – ৫.০৮
সর্বোচ্চ ইনিংস – দক্ষিণ আফ্রিকা ৪৩৮/৪ (বনাম ভারত, ২৫ অক্টোবর, ২০১৫। দক্ষিণ আফ্রিকা জয়ী ২১৪ রানে)
সর্বনিম্ন ইনিংস – বাংলাদেশ ১১৫ (বনাম ভারত, ২৫ মে, ১৯৯৮। ভারত জয়ী ৫ উইকেটে)
সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত স্কোর – সনৎ জয়সূর্য (অপরাজিত ১৫১ বনাম ভারত)
সেরা বোলিং – মুরলী কার্তিক ১০-৩-২৭-৬ (বনাম অস্ট্রেলিয়া)
প্রথমে ফিল্ডিং করা দল ২৩ ম্যাচের মধ্যে জিতেছে ১২টিতে
ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে ভারতের ওয়ান ডে রেকর্ড:
ম্যাচ – ২০
জয় – ১১
পরাজয় - ৯
ওয়াংখেড়েতে বিশ্বকাপের ম্যাচ:
১. ইংল্যান্ড বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা, ২১ অক্টোবর, শনিবার, দুপুর ২.০০
২. বাংলাদেশ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা, ২৪ অক্টোবর, মঙ্গলবার, দুপুর ২.০০
৩. ভারত বনাম শ্রীলঙ্কা, ২ নভেম্বর, বৃহস্পতিবার, দুপুর ২.০০
৪. আফগানিস্তান বনাম অস্ট্রেলিয়া, ৭ নভেম্বর, মঙ্গলবার, দুপুর ২.০০
৫. প্রথম সেমিফাইনাল, ১৫ নভেম্বর, বুধবার, দুপুর ২.০০
ট্রেন্ডিং
সেরা শিরোনাম
![ABP Premium](https://cdn.abplive.com/imagebank/metaverse-mid.png)