![ABP Premium](https://cdn.abplive.com/imagebank/Premium-ad-Icon.png)
Mohun Bagan vs Bengaluru FC: জোড়া লালকার্ড বেঙ্গালুরু এফসির, বুমোসের গােলে আইএসএলে টানা দ্বিতীয় জয় মোহনবাগানের
ISL 2023: তার ওপর দ্বিতীয়ার্ধের মাঝামাঝি ও ম্যাচের একেবারে শেষ দিকে বেঙ্গালুরুর দলের দুই উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ফুটবলার সুরেশ সিং ও রওশন সিং লাল কার্ড দেখায় তাদের মানসিক ভাবে অনেকটাই দুর্বল করে দেয়।
![Mohun Bagan vs Bengaluru FC: জোড়া লালকার্ড বেঙ্গালুরু এফসির, বুমোসের গােলে আইএসএলে টানা দ্বিতীয় জয় মোহনবাগানের ISL 2023-24 Mohun Bagan Super Giant won 1-0 against Bengaluru FC know full match highlights Mohun Bagan vs Bengaluru FC: জোড়া লালকার্ড বেঙ্গালুরু এফসির, বুমোসের গােলে আইএসএলে টানা দ্বিতীয় জয় মোহনবাগানের](https://feeds.abplive.com/onecms/images/uploaded-images/2023/09/27/f9c204b8179908c7e953cfe5a8892f5a1695836018128206_original.jpg?impolicy=abp_cdn&imwidth=1200&height=675)
কলকাতা: সারা ম্যাচে মাত্র একটি শট তিন কাঠির মধ্যে রেখেছিল মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট এবং সেই শটেই গোল করে দলকে চলতি আইএসএলের দ্বিতীয় জয় এনে দিলেন ফরাসি মিডফিল্ডার হুগো বুমৌস। গত আইএসএল ফাইনালের রিপ্লে-তে বেঙ্গালুরু এফসি এ দিন রক্ষণে কার্যত দুর্ভেদ্য দেওয়াল তুলে রাখায় ম্যাচের ৬৭ মিনিট পর্যন্ত তাতে চিড় ধরাতে পারেনি গত বারের নক আউট চ্যাম্পিয়নরা। অবশেষে ৬৮ মিনিটের মাথায় জয়সূচক গোলটি আসে।
এ দিন বেঙ্গালুরু এফসি বল দখলের লড়াইয়ে অনেকটা পিছিয়ে (৬৬.৫–৩৩.৫) থাকলেও যে ন’টি শট মারে তারা, তার মধ্যে চারটিই ছিল লক্ষ্যে। আক্রমণের তীব্রতা, সাফল্য ও রক্ষণের শক্তি এ সব দিক থেকে তারাই এদিন এগিয়ে থাকে। কিন্তু ফাইনাল থার্ডে তাদের ব্যর্থতা ও মোহনবাগানের সংগঠিত রক্ষণের এ দিন গোলের মুখ খুলতে পারেনি তারা। তার ওপর দ্বিতীয়ার্ধের মাঝামাঝি ও ম্যাচের একেবারে শেষ দিকে বেঙ্গালুরুর দলের দুই উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ফুটবলার সুরেশ সিং ও রওশন সিং লাল কার্ড দেখায় তাদের মানসিক ভাবে অনেকটাই দুর্বল করে দেয়।
আক্রমণে উঠে প্রতিপক্ষের গোল এরিয়ায় দলের অ্যাটাকারদের বারবার ব্যর্থ হওয়া অবশ্যই চিন্তায় রাখবে মোহনবাগান এসজি-র কোচ হুয়ান ফেরান্দোকে। এ দিন সারা ম্যাচে গোলের উদ্দেশ্যে ১১টি শট মারে তারা। কিন্তু তার মধ্যে দশটি শটই লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। অ্যাটাকিং থার্ডে এই ব্যর্থতা শোধরাতে না পারলে চলতি লিগে মোহনবাগান যে সমস্যায় পড়বে, তা নিশ্চিত ভাবেই বলা যায়। দলের অর্ধেকই আক্রমণাত্মক ফুটবলারে ভরা। তা সত্ত্বেও ৬৭ মিনিট পর্যন্ত তাঁদের একটিও শট গোলে রাখতে না পারাটা অবশ্যই দুশ্চিন্তার বিষয়। এই ম্যাচে জয়কে তাই কষ্টার্জিত জয়ই বলা যায়।
এ দিন দলে তিনটি পরিবর্তন করে প্রথম এগারো নামায় মোহনবাগান এসজি। ব্রেন্ডান হ্যামিল, আশিস রাই ও গ্ল্যান মার্টিন্সের জায়গায় নামেন অনিরুদ্ধ থাপা, হুগো বুমৌস ও মনবীর সিং। দলে এই পরিবর্তনেই বোঝা যায় রক্ষণে লোক কমিয়ে আক্রমণে শক্তি বাড়ানোর পরিকল্পনা ছিল কোচ হুয়ান ফেরান্দোর। তিন ব্যাকে দল নামিয়ে পাঁচজনকে মাঝমাঠে রাখেন তিনি। অন্য দিকে, বেঙ্গালুরু রক্ষণে চার ডিফেন্ডারকে রেখেই খেলা শুরু করে। কিন্তু খেলা যত গড়াতে থাকে ততই রক্ষণে সদস্য সংখ্যা বাড়াতে থাকে তারা।
প্রত্যাশিতভাবে শুরু থেকেই আক্রমণে ওঠে মোহনবগান। সামনে কামিংস, পেট্রাটস ও তাঁদের পিছনে বুমৌস, কোলাসো, সহাল, মনবীররা গোল তৈরির দায়িত্বে ছিলেন। প্রথম মিনিট থেকেই সেই চেষ্টা শুরু করেন তাঁরা। কিন্তু প্রথমার্ধে আটটি শট নিলেও একটিও গোলে রাখতে পারেনি।
প্রথম সুবর্ণ সুযোগটি সবুজ-মেরুন শিবির পায় ১৩ মিনিটের মাথায়। প্রতি আক্রমণে বুমৌস মাঝমাঠের এ পার থেকে বল নিয়ে তা বাড়ান বাঁ দিকে কোলাসোকে। তিনি উইং দিয়ে বক্সে ঢুকে গোলে কোণাকুনি শট নিলেও তা অল্পের জন্য গোলের বাইরে চলে যায়। ২১ মিনিটের মাথায় কামিংসের গোলমুখী শট দুর্দান্ত ব্লক করেন জোভানোভিচ। বেঙ্গালুরুর রোহিত কুমারের শট গোললাইন সেভ করেন অনিরুদ্ধ থাপা।
এই সময়ে বেশিরভাগ আক্রমণই মোহনবাগানের তরফ থেকে হচ্ছিল, যা আটকানোর জন্য বেঙ্গালুরুও রক্ষণে ভীড় বাড়ায়। তবে যে কয়েকটি আক্রমণে ওঠে বেঙ্গালুরু, সেগুলি ছিল অনেক বেশি ধারালো ও তীব্র। প্রথম ৪৫ মিনিটে তারা পাঁচটির মধ্যে দু’টি শটই তিনকাঠির মধ্যে রাখে। একটি গোললাইন সেভ হয় ও দু’টি আটকান গোলকিপার বিশাল কয়েথ।
ড্রিঙ্কসের পরই ডানদিক থেকে আসা বুমৌসের ক্রসে ফ্লিক করে গোলের সামনে বল পাঠান কামিংস। সেই অঞ্চলে থাকলেও বলের নাগাল পাননি শুভাশিস। বেঙ্গালুরু এ দিন মূলত রক্ষণের ওপরই জোর দেয় এবং প্রতি আক্রমণের সুযোগের অপেক্ষায় থাকে। কিন্তু মোহনবাগান গোলের সুযোগ তৈরি করে এগিয়ে যাওয়ার মরিয়া চেষ্টা করে। কিন্তু বারবার প্রতিপক্ষের দুর্ভেদ্য ডিফেন্সে আটকে যায়।
প্রথমার্ধে বল পজেশনে মোহনবাগান অনেকটা এগিয়ে (৬৭-৩৩) থাকলেও সাইমন গ্রেসনের দলের ফুটবলাররা যখনই বল ধরেন, তখন ছোট ছোট পাসে অনেক সময় নিয়ে প্রতি আক্রমণে ওঠার চেষ্টা করেন। মূলত কার্টিস মেনকে দিয়ে যাবতীয় আক্রমণকে গোলে পরিণত করার চেষ্টা করে তারা। কিন্তু তাঁকে কড়া নজরে রাখেন হেক্টর ইউস্তে।
বিরতির পর খেলা শুরু হতেই একের পর এক নাটকীয় মুহূর্ত তৈরি হয় মাঠে। নাগাড়ে চারটি কর্নার পেলেও একটিও কাজে লাগাতে পারেনি মোহনবাগান এসজি। পরপর চারবারই পেট্রাটস কর্নার কিক নেন, কিন্তু তাঁর সতীর্থরা কেউই গোলের মুখ খুলতে পারেননি। বেঙ্গালুরুর দুই বিদেশি ফুল ব্যাক দামিয়ানোভিচ ও জোভানোভিচ এ দিন তাঁদের সেরা ফর্মে ছিলেন।
৪৯ মিনিটের মাথায় গোলমুখী পেট্রাটসকে বক্সের মধ্যে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন রোহিত। নিজের পায়েই পা জড়িয়ে পড়ে যান পেট্রাটস। তা সত্ত্বেও পেনাল্টির জোরালো আবেদন জানান সবুজ-মেরুন খেলোয়াড়রা। ফেটে পড়েন গ্যালারির সমর্থকেরাও। কিন্তু সঠিক কারণেই রেফারি তাতে কর্ণপাত করেননি। পরবর্তী মিনিটেই মোহনবাগান বক্সের বাইরে থেকে গোলে জোরালো শট নেন রোহিত, যা অসাধারণ দক্ষতায় রুখে দেন বিশাল। এটি ছিল বেঙ্গালুরুর চতুর্থ গোলে শট। তখনও একটিও শট গোলে রাখতে পারেনি হোম টিম।
বহু প্রতীক্ষিত গোলটি আসে ৬৮ মিনিটে এবং সেই ছিল তাদের প্রথম গোলে শট, যা নেন ম্যাচের সেরা হুগো বুমৌস। জোভানোভিচের হেডে ক্লিয়ার হওয়া বল পেয়ে বক্সের মাথা থেকে বাঁ দিকে বুমৌসকে দেন কামিংস। প্রায় ৪৫ ডিগ্রি কোণ থেকে নেওয়া শটে জালে বল জড়িয়ে দেন ফরাসি তারকা (১-০)।
এই গোলের পরেই একসঙ্গে তিনটি পরিবর্তন করে মোহনবাগান। মাঠে আসেন ব্রেন্ডান হ্যামিল, আরমান্দো সাদিকু ও গ্ল্যান মার্টিন্স। তুলে নেওয়া হয় বুমৌস, কামিংস ও আনোয়ারকে। বেঙ্গালুরু শিবশক্তি নারায়ণ ও রায়ান উইলিয়ামসকেও নামায় প্রায় একই সঙ্গে। কিন্তু এর পরেই যে ধাক্কাটা খায় তারা, তা সত্যিই প্রত্যাশিত ছিল না।
৭৫ মিনিটে সাদিকুকে অবৈধ ভাবে বাধা দেওয়ার জন্য ম্যাচের দ্বিতীয় হলুদ কার্ড তথা লাল কার্ড দেখেন সুরেশ সিং ওয়াংজাম। রেফারির এই সিদ্ধান্তে ক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁর সতীর্থরা। রিপ্লে-তে দেখা যায় ফাউল আসলে করেছিলেন রওশন সিং। তাঁর পাশেই ছিলেন সুরেশ। এর পর থেকে বেঙ্গালুরুকে দশ জনে খেলতে হয়। স্টপেজ টাইমে যে সংখ্যাটা দাঁড়ায় নয়ে।
এই ঘটনার পরেই কোলাসোকে তুলে আশিস রাইকে নামায় মোহনবাগান। সহালের জায়গায় নামেন কিয়ান নাসিরি। প্রতপক্ষের এক খেলোয়াড় কম থাকার সুযোগ নিয়ে ব্যবধান বাড়ানোর চেষ্টা শুরু করে কলকাতার দল। ৮৪ মিনিটের মাথায় মাঝমাঠ থেকে বাঁ দিক দিয়ে এগিয়ে দুই ডিফেন্ডারকে ধোঁকা দিয়ে কাট ইন করে বক্সের বাইরে থেকেই সোজা গোলে শট নেন সাদিকু, যা দ্বিতীয় পোস্টের বাইরে দিয়ে বেরিয়ে যায়।
আট মিনিটের বাড়তি সময়ে গোল শোধের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে বেঙ্গালুরু। এই সময়ে নাটক আরও জমে ওঠে। ৯১ মিনিটের মাথায় প্রতি আক্রমণে ওঠা গতিময় পেট্রাটসকে বক্সের সামনে স্পষ্টতই ঠেলে ফেলে ফেলে দেন রওশন, যার ফলে তাঁকে লাল কার্ড দেখিয়ে বের করে দেন রেফারি। অর্থাৎ, শেষ সাত মিনিট বেঙ্গালুরুকে ন’জনে খেলতে হয়।
ওই সময় পেট্রাটস যে গতিতে ছিলেন, তাঁকে ঠেলে না ফেলে দিলে হয়তো দ্বিতীয় গোলটি পেয়ে যেত মোহনবাগান। ৯৭ মিনিটের মাথায় বাঁদিক দিয়ে উঠে বক্সে ঢুকে ফের শট নেন পেট্রাটস, এ বার বল বারের ওপর দিয়ে উড়ে যায়। বাড়তি সময়ের শেষ মিনিটেও তিনি সাইড নেটে বল মারেন। লক্ষ্যভ্রষ্ট হন সাদিকুও। সব মিলিয়ে এ দিন ১৭ বার গোলের চেষ্টা করে সবুজ-মেরুন বাহিনী। কিন্তু সফল হয় মাত্র একবারই।
ট্রেন্ডিং
সেরা শিরোনাম
![ABP Premium](https://cdn.abplive.com/imagebank/metaverse-mid.png)