আরও বিপাকে মহম্মদ সামি, স্ত্রীকে খুনের চেষ্টা, ধর্ষণ ও বধূ নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের, তদন্তে লালবাজার
কলকাতা: আরও বিপাকে ক্রিকেটার মহম্মদ শামি। একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলু রুজু। দাদার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ।
হাসিন জাহানের অভিযোগের ভিত্তিতে ৫ জনের বিরুদ্ধে শুক্রবার একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। অভিযুক্তরা হলেন, ভারতীয় ক্রিকেটার মহম্মদ শামি, শামির দাদা ও তাঁর স্ত্রী, শামীর মা, শামির বোন।
অভিযক্তদের বিরুদ্ধে, ৩২৮ ধারায় খাবারের বিষ মিশিয়ে খুনের চেষ্টা, ৩০৭ ধারায় হত্যার চেষ্টা, ৪৯৮এ ধারায় বধূ নির্যাতন ও ধর্ষণের অভিযোগে ৩৭৬ ধারায় মামলা রুজু হয়েছে।
হাসিনের অভিযোগ, ২০১৭ সালের ৭ ডিসেম্বর শ্বশুরবাড়িতে তাঁকে ধর্ষণ করেন শামির দাদা। হাসিনের অভিযোগ, দক্ষিণ আফ্রিকায় খেলে ফেরার পথে দুবাইয়ে এক পাকিস্তানি মহিলার সঙ্গে কয়েক দিন কাটান শামি। তা নিয়ে শামির সঙ্গে তাঁর মোবাইল ফোনের কথোপকথনও এদিন প্রকাশ্যে আনেন হাসিন।
এফআইআরে হাসিনের অভিযোগ, ভারতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার পর নাম-যশ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই বদলে যান শামি। শুরু হয় অত্যাচার। সংসার ভেঙে দেওয়ার জন্য উস্কানি দিতে থাকে তাঁর পরিবার। ধর্ষণের পাশাপাশি খুনের চেষ্টাও হয়।
প্রাণ বাঁচাতে মেয়েকে নিয়ে উত্তরপ্রদেশের শ্বশুরবাড়ি থেকে চলে আসেন কলকাতায়। তাঁর দাবি, ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি জানতে পারেন শামির অবৈধ সম্পর্কের কথা। ক’দিন আগেই দ্বারস্থ হন পুলিশের। কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ) প্রবীণ ত্রিপাঠীর কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন হাসিন। শামির বিরুদ্ধে গার্হস্থ্য হিংসা ও বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগ এনেছেন হাসিন। একইসঙ্গে বলেছেন, শামি চেয়েছিলেন বলিউডের এক নায়িকাকে বিয়ে করতে।
হাসিন অভিযোগ করেছেন, সামি ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা ডিভোর্সের জন্য তাঁকে চাপ দেন, কারণ তাঁরা চেয়েছিলেন সামির আর একবার বিয়ে দিতে। সামির ইচ্ছে ছিল এক কোটিপতি বলিউড নায়িকাকে বিয়ে করার। পাকিস্তানের এক মহিলার সঙ্গেও তাঁর সম্পর্ক রয়েছে।
হাসিন বলেছেন, বিয়ে বাঁচিয়ে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করেন তিনি কিন্তু জানতে পারেন, তাঁর স্বামী ওই পাকিস্তানি মহিলাকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ও তাঁকে রক্ষিতা হিসেবে থাকতে হবে, তখন সামির সঙ্গে তাঁর প্রচণ্ড ঝগড়া হয়। এরপরই সব গোপন কথা জনসমক্ষে আনার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
হাসিন জানিয়েছেন, পুলিশের অভিযোগ জানানোর পাশাপাশি, বিসিসিআইকে চিঠি দেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছেন তিনি। ঘটনার প্রেক্ষিতে, শুক্রবার সকাল থেকে যাদবপুর থানা এলাকায় হাসিন জাহানের বাড়িতে মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ। এদিনই যাদবপুর থানার পুলিশের হাত থেকে মামলার তদন্তভার নেয় লালবাজারের উইমেন গ্রিভ্যান্স সেল।
যদিও সব অভিযোগ অস্বীকার করে সামি বলেছেন, তাঁর কেরিয়ার নষ্ট করার ষড়যন্ত্র হচ্ছে, স্ত্রীর অভিযোগের সঠিক তদন্ত চেয়েছেন তিনি।