দেশে জয় অনেক হয়েছে। এ বার আধিপত্য দেখাও বিদেশের মাটিতে। অনিল কুম্বলের ভারতীয় টিমের এটা টিম থিম কি না, নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। সরকারি ভাবে কিছু বলা হয়নি। কিন্তু ক্রিকেটারদের মনোভাব, কথাবার্তা যদি সূচক হয়, তা হলে অনিল কুম্বলের ভারতীয় টিমের এটা অবশ্যই টিম থিম! ভারতীয় দলের ক্রিকেটারদের মনে হচ্ছে, সমর্থকদের তাঁদের নিয়ে ধারণা বদলানোর সময় এসেছে। বরাবরই বলা হয় যে, ভারতীয়রা দেশে দুর্দান্ত। কিন্তু সেই দাপুটে মনোভাবটা বিদেশে দেখা যায় না। বিরাট কোহালির ভারত এ বার তা পাল্টাতে চায়। চলতি ক্যারিবিয়ান সফর থেকেই পাল্টাতে চায়। মহাশক্তিধর ব্যাটিং এবং স্পিন আক্রমণ— ভারতীয় শিবির ক্যারিবিয়ান-বধে এ দু’টোকেই অস্ত্র হিসেবে দেখছে। যতই ওয়েস্ট ইন্ডিজ পিচ ঐতিহাসিক ভাবে পেস-সহায়ক হোক না কেন, ভারতীয় টিম মনে করে তাদের স্পিন বিশ্বের যে কোনও পিচে সমান আতঙ্কের। তার প্রমাণও রবিচন্দ্রন অশ্বিনরা দিচ্ছেন। শুক্রবার ম্যাচের দ্বিতীয় দিন ভারতীয় সময় রাত বারোটা পর্যন্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজ বোর্ড প্রেসিডেন্ট একাদশের বিরুদ্ধে ভারত ২৯৬-৭। হাফসেঞ্চুরি লোকেশ রাহুল (৬৪) ও বিরাট কোহালির (৫১)। ভারত এগিয়ে ১১৬ রানে। বোর্ড প্রেসিডেন্ট একাদশ তো তুলেছিল মাত্র ১৮০। দশটার মধ্যে আটটা উইকেটই যেখানে স্পিনারদের! ‘‘সবাই বলে যে, ভারত দেশে খুব ভাল করে। খুব সহজে জেতে। আমরা সেই ধারণাটা বদলাতে চাই। আমাদের টিমে প্রচুর তরুণ, যারা চায় বিদেশে ভাল করতে। টিমে এনার্জি প্রচুর, অসম্ভব ফিটও আমরা। আমরা চাইছি, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ জিততে,’’ প্রস্তুতি ম্যাচে তিন উইকেট নিয়ে বলে দিয়েছেন রবীন্দ্র জাডেজা। ভারতের টেস্টে স্পন-ত্রয়ীর এক। জাডেজা বলছেন, বর্তমানে যে যতই ভাল খেলুক না কেন, আসল হল বিদেশে টেস্ট বা ওয়ান ডে পারফরম্যান্স। জাডেজা বলছেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজে স্পিনার হিসেবে ভাল করা সহজ নয়। গুমোট আবহাওয়ার জন্য স্পিনারদের কাজ এখানে কঠিন। কিন্তু ভারতীয় স্পিনাররা পরিবেশ নিয়ে ভাবছেন না। ভাবছেন বরং ম্যাচ সিচুয়েশন নিয়ে। সফলও হচ্ছেন। বোর্ড প্রেসিডেন্ট একাদশের দশ উইকেটের আটটা শুধু স্পিনারদের নেওয়া নয়, তাঁদের বোলিং হিসেবও ঈর্ষণীয়। জাডেজা ৩-১৬। অশ্বিন ৩-৬২। অমিত মিশ্র ২-৪৫। চার ছক্কায় ওয়েস্ট ইন্ডিজকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতানো কার্লোস ব্রেথওয়েটও এ দিন বলেছেন, ভারতীয়দের নিয়ে তাঁদের দু’টো ভয়। এক, কোহালিদের ব্যাটিং। দুই, অশ্বিনদের স্পিন। ‘‘ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটিংকে ভাল পরীক্ষার সামনে ফেলব আমি, অশ্বিন আর মিশ্র। আমাদের তিন জনের বোলিং স্টাইল যেমন আলাদা, তেমন গতিও আলাদা। একজন অফব্রেক করে, একজন লেগব্রেক করে, আর একজন বাঁ হাতি। ব্যাটসম্যানের পক্ষে তিন রকম স্পিনারকে একসঙ্গে খেলা খুব কঠিন হয়ে যায়।’’ কোচ কুম্বলের থেকেও যে প্রবল উপকৃত হয়েছেন, বলে দিয়েছেন জাডেজা। ‘‘ওঁর সঙ্গে প্রচুর আলোচনা করেছি। উনি বলেছেন নিজের শক্তির উপর জোর দিতে, আর উইকেট না পেলে নিজের ফোকাস ঠিক রাখতে। দেখতে যে, উইকেট না এলে শরীরী ভাষা যেন পাল্টে না যায়।’’ নতুন কোচ নিয়ে সতীর্থদের মতো জাডেজাও খুশি। তাঁর মনে হচ্ছে, এমন গুরু থাকলে শিষ্যদের সাফল্যের সম্ভাবনা বেশি।