Ranji Trophy: ক্রিকেটের টানে সারে থেকে ইডেনে, মনোজদের ম্যাচ দেখছেন ইংরেজ নীল
Eden Gardens: মনোজ তিওয়ারিদের জন্য় গ্যালারিতে রয়েছে ভিনদেশি সমর্থনও।
সন্দীপ সরকার, কলকাতা: ইডেনে (Eden Gardens) সৌরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে লড়ছেন বাংলার (Ben vs Sau) ব্য়াটাররা। ম্য়াচে নাটকীয় পট পরিবর্তন হবে কি না, সময় বলবে। তবে ইডেনে বাংলার জন্য সমর্থনের অভাব নেই।
প্রত্যেক দিনই হাজার তিনেক ক্রিকেটপ্রেমী উপস্থিত থাকছেন। স্কুল এবং কলেজ ছাত্র-ছাত্রীরাও আসছে রঞ্জি ফাইনাল দেখতে। তবে চমক অন্য জায়গায়। মনোজ তিওয়ারিদের জন্য় গ্যালারিতে রয়েছে ভিনদেশি সমর্থনও।
ইংল্য়ান্ডের নীল ফিশার এবং তাঁর এক বন্ধু ইডেনের গ্য়ালারিতে হাজির থাকছেন। ভারতে যে এই প্রথম এসেছেন, তা নয়। বহু স্মৃতি রয়েছে ৬২ বছরের এই ক্রিকেট পর্যটকের। ইংল্যান্ডের সারেতে বাড়ি। সারে ক্রিকেট ক্লাবের মেম্বারও। সেখানে ম্যাচ দেখার পাশাপাশি বছরের বেশিরভাগ সময় কাটিয়ে দেন উপমহাদেশের কোনও দেশে। বিশেষ করে ভারত খুবই পছন্দ তাঁর।
নীলের ভারতে প্রথম আসা ১৯৯৬ সালের বিশ্বকাপে। শ্রীলঙ্কার সেই ট্রফি জয়, ইডেনে ভারতের স্বপ্নভঙ্গ, অনেক স্মৃতিই রয়েছে। ইনদওরে রঞ্জি ট্রফির ম্যাচ দেখেছেন। নাগপুরে ভারত-ইংল্য়ান্ড টেস্টেও ছিলেন। তারপর ইডেনে রঞ্জি ফাইনাল। নীল বলছেন, 'সেই ১৯৯৬ সালের বিশ্বকাপ থেকে আসছি। ইংল্য়ান্ডের ঠান্ডা আবহাওয়া একেবারেই পছন্দ নয়। বেশির ভাগ সময়ই উপমহাদেশে কাটাই। বলতে পারেন, ক্রিকেটের জন্য় আমি স্বার্থপর। সুযোগ পেলেই ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কায় ম্য়াচ দেখতে চলে যাই। কলকাতায় আসার আগেও নাগপুর টেস্ট, রঞ্জির ম্যাচ দেখেছি। ক্রিকেট নিয়ে ভীষণ আবেগ রয়েছে।'
মাথার ওপর ২৩০ রানের লিডের বোঝা। তার ওপর দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতেও ব্যাটিং বিপর্যয়। বাংলা শিবির কিছ বুঝে ওঠার আগেই ইডেন গার্ডেন্সের স্কোরবোর্ডে জ্বলজ্বল করে উঠল, ৪৭/৩। ড্রেসিংরুমে ফিরে গিয়েছেন সুমন্ত গুপ্ত, অভিমন্যু ঈশ্বরণ ও সুদীপ ঘরামি।
বড়িশা স্পোর্টিংয়ের ক্রিকেটার সুমন্ত রঞ্জি ট্রফির ফাইনালে অভিষেক ঘটিয়েছেন। প্রথম ইনিংসে ফিরেছিলেন ১ রান করে। দ্বিতীয় ইনিংসেও স্কোরারদের তিনি বিব্রত করেননি। ১ রান করেই ফিরলেন। রান পাননি অন্য ওপেনার অভিমন্যু ঈশ্বরণও। যাঁর বিরুদ্ধে বরাবরের অভিযোগ, তিনি গ্রুপ পর্বে ব্যাট হাতে রাজা। বড় ম্যাচে ফকির। প্রথম ইনিংসে শূন্য করেছিলেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ১৬ রান করে ফিরলেন অভিমন্যু।
গোটা মরসুমে ব্যাট হাতে ভরসা দিয়েছিলেন সুদীপ ঘরামি। সেমিফাইনালেও রান পেয়েছিলেন। ঘরের মাঠে ফাইনালে তিনিও দুই ইনিংসে ব্যর্থ। একটা সময় দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি ব্যাট করতে পারবেন কি না, তা নিয়েই প্রশ্ন তৈরি হয়ে গিয়েছিল। শুক্রবার, ম্যাচের দ্বিতীয় দিন অর্পিত বাসবডার কভার ড্রাইভ বাঁচাতে ডাইভ মেরে বাঁ কাঁধে চোট পেয়েছিলেন। মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যেতে হয়েছিল সুদীপকে। ইডেন থেকেই সরাসরি হাসপাতালে যান সুদীপ। তাঁর কাঁধে চোট পাওয়া জায়গায় স্ক্যান হয়। তৃতীয় দিন সকালে ফিল্ডিং করতেও নামেননি। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করেন সুদীপ। তবে রান পাননি। ১৪ রান করে ফেরেন।
ফের যখন মনে হচ্ছিল, বাংলার ব্যাটাররা আত্মসমর্পণ করবেন, পাল্টা লড়াই শুরু মনোজ-অনুষ্টুপের। চতুর্থ উইকেটে ৯৯ রান যোগ করলেন দুজনে। অবশ্য শেষবেলায় অনুষ্টুপকে ফিরিয়ে দিয়েছেন জয়দেব উনাদকট। তাঁর উচ্ছ্বাসই বলে দিচ্ছিল, অনুষ্টুপের উইকেট কত বড় স্বস্তি। তবে অনুষ্টুপ ফিরলেও, ক্রিজে মনোজের সঙ্গে রয়েছেন বাংলা দলের 'ক্রাইসিস ম্যান' শাহবাজ আমেদ। ১৩ রান করে। সৌরাষ্ট্রের চেয়ে আর ৬১ রানে পিছিয়ে বাংলা। রবিবার, চতুর্থ দিন বাংলার লক্ষ্য দ্রুত সেই খামতি মিটিয়ে অন্তত দুশো রানের লিড নেওয়া। তারপর বোলারদের নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়া। তাতে যদি ৩৩ বছরের অপেক্ষার অবসান হয়।
আরও পড়ুন: পিছিয়ে পড়েও দুরন্ত জয়ে নতুন ইতিহাস রচনা করল ভারতীয় ব্যাডমিন্টন দল