(Source: ECI/ABP News/ABP Majha)
Financial literacy: বাড়ছে প্রবণতা ! এই বিষয়ে জানতে চাইছে যুব প্রজন্ম
Financial literacy: একটা সময় ছিল, ভারতীয় তরুণরা আর্থিক পরামর্শ পেত জনপ্রিয় উপন্যাস যেমন 'Rich Dad, Poor Dad'পড়ে। বিষয়বস্তু ভাল হলেও ভারতীয় পাঠকের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করতে পারেনি সেই উপন্যাসগুলি।
Financial literacy: বদলে গিয়েছে নতুন প্রজন্মের চিন্তাধারা।বর্তমানে আর্থিক সাক্ষরতা বা Financial literacy-র ক্লাসে যোগ দিচ্ছেন যুব প্রজন্ম। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই ক্লাস পরিচালনা করছেন দেশের শীর্ষ স্থানীয় আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলি। যাতে আরও উৎসাহ জোগাচ্ছে সামাজিক মাধ্যমের প্রভাবশালীরা। দেখা যাচ্ছে, নিত্যদিন বেড়েই চলেছে এই ধরনের Financial literacy-র ক্লাসে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা। তবে যেটা চিন্তার ! অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই প্রভাবশালীরা না জেনে অর্থনৈতিক বিষয়ে পরমার্শ দিচ্ছেন।
একটা সময় ছিল, যখন ভারতীয় তরুণরা আর্থিক পরামর্শ পেত জনপ্রিয় উপন্যাস যেমন 'Rich Dad, Poor Dad'পড়ে। বিষয়বস্তুতে চমৎকার ধারণা থাকা সত্ত্বেও ভারতীয় পাঠকের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করতে পারেনি সেই উপন্যাসগুলি। কারণ বইয়ের বিষয়বস্তুর মধ্যে যে পরামর্শ দেওয়া হোতো তার সঙ্গে বাস্তবের সঙ্গে যোগ ছিল না। অন্যদিকে, আর্থিক পরামর্শদাতা নিয়োগ ছিল সাধারণের ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। যার ফলে, ভারতীয় খুচরো বিনিয়োগকারীদের অধিকাংশই অনুপস্থিত ছিল বাজারে।
এখন বদলে গিয়েছে পরিস্থিতি
আজকের বিশ্বে আর্থিক স্বাধীনতা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন উদ্যোগপতি বা শিল্পপতিদের মূল্য বুঝেছে সমাজ। মূলত, সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের জন্যই এটি সম্ভব হয়েছে। এখন আর যুবপ্রজন্ম অর্থ উপার্জনের পথ হিসাবে কেবল চাকরিকে বেছে নিচ্ছে না। পরিবর্তন হয়েছে তাদের চিন্তাধারায়। এখন তাঁরা ভাবছে, 'তাদের হয়ে কাজ করবে টাকা'।
আমাদের বিনিয়োগের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন হয়েছে
বর্তমান প্রজন্মের যুবক-যুবতীরা বোঝেন সম্পদ সৃষ্টির জন্য বিনিয়োগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তারা অর্থ উপার্জনের জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করতে ভয় পান না। নতুনরা এখন স্টার্টআপের IPO-গুলির দিকে বিশাল আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। তাঁরা ক্রিপ্টোকারেন্সি ছাড়াও আরও ঝুঁকি নিতে প্রস্তুত।
আর্থিক সাক্ষরতায় সোশ্যাল মিডিয়ার গুরুত্ব-ভাল ও খারাপ
সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে প্রভাবশালীদের একটি বড় অংশ কীভাবে সম্পদ বাড়ানো সম্ভব, তা নিয়ে নিয়মিত আলোচনা শুরু করেছে। যা যুব সম্প্রদায়ের কাছে আগ্রহের বিষয়বস্তু হয়ে উঠেছে। এই প্রভাবশালীরা সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে তাদের সম্পদ-বৃদ্ধির অভিজ্ঞতা শেয়ার করে নিজেদের মতামত জানান ও পরামর্শ দেন। এই ক্ষেত্রে ক্রমাগত তাদের প্রভাব বৃদ্ধি করে চলেছে এই ধরনের ইনফ্লুয়েন্সার বা প্রভাবশালীরা।
দক্ষতার অভাব রয়েছে এই প্রভাবশালীদের
প্রতিদিন আর্থিক প্রভাবশালীদের এই দর্শক সংখ্যা বাড়লেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আর্থিক বিষয় পরামর্শ দেওয়ার যোগ্যতা থাকে না এদের। অনেক ক্ষেত্রে নিজেদের স্বার্থে একটি নির্দিষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি প্রচারের আলোয় নিয়ে আসে তাঁরা। অপর্যাপ্ত জ্ঞানের সাথে অল্প সময়ের বিনিয়োগকারীরা প্রায়শই এমন প্রভাবশালীদের কথায় বিভ্রান্ত হন। এই প্রভাবশালীদের পরামর্শ মানার মাশুল চোকাতে হয় নতুন বিনিয়োগকারীদের। তাঁরা এমনভাবে কথা বলেন, যেন আর্থিক পরামর্শ দেওয়ার সব যোগ্যতা রয়েছে তাদের।
আপনার আর্থিক ভবিষ্যতের নিয়ন্ত্রণ
বর্তমানে যুব প্রজন্মের অধিকাংশ পেশাদাররা আর্থিক সাক্ষরতার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। যেকারণে অনেক প্রতিষ্ঠান ও বিশেষজ্ঞরা আর্থিক সাক্ষরতা ও সচেতনতার প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করেছেন। এরা ভারতীয় গ্রাহকদের জন্য প্রাসঙ্গিক গবেষণামূলক বিষয়বস্তু নিজেদের প্লাটফর্মে তুলে ধরছেন। এই আর্থিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি উদ্যোক্তা, ছোট কোম্পানির মালিক ও মহিলাদের জন্য বিশেষ মডেল ক্লাস নেওয়া শুরু করেছেন।
অর্থনীতির লোক নন এমন ব্যক্তিদের জন্য শিক্ষা
আর্থিক সাক্ষরতা এই মুহূর্তে একটি আলোচিত বিষয়। National Stock Exchange-এর মতো সংস্থাগুলি এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই ধরনের ক্লাস অফার করে আসছে৷ এখনও পর্যন্ত তারা প্রাথমিকভাবে বড় হাউজগুলিকে এই শিক্ষা দিয়ে এসেছে। এ প্রসঙ্গে National Stock Exchange-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট ও হেড অফ বিজনেস ডেভেলপমেন্ট রেহানা ডিসুজা বলেন, "আর্থিক সাক্ষরতা ও ব্যবস্থাপনা আমাদের শিক্ষার মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য ফাঁক রেখে গেছে।" এই আর্থিক সাক্ষরতা সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান না থাকায় যুব প্রজন্ম জালিয়াতির মুখে পড়ছে। এমনকী আর্থিকভাবে কোনও সিদ্ধান্ত নিতেও তাঁরা ঝুঁকি বোধ করছে। মিডিয়া বা সোশ্যাল মিডিয়া থেকে পাওয়া পরামর্শে চলে তাদের প্রায়শই ভুল হচ্ছে। সেই কারণে কর্পোরেট ক্লায়েন্টরা সঠিক, আপ-টু-ডেট, উদ্দেশ্যমূলক, ভাল-গবেষণার সফল উপাদান সরবরাহ করতে আমাদের উপর নির্ভর করে।"
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, যারা এই ধরনের শিক্ষা নিতে আসেন তারা 'নন-ফিন্যান্সিয়াল ব্যাকগ্রাউন্ড' থেকে আসেন। ফলে অর্থনীতির ভিত বোঝা তাদের কাছে একটি কঠিন বিষয়বস্তু হয়ে দাঁড়ায়। ফলস্বরূপ, বিভিন্ন সংস্থা প্রায়শই কমিউনিকেশন এক্সপার্টদের সাহায্য নেয়। যারা সৃষ্টিশীল বা উদ্ভাবনী কার্যকলাপের মাধ্যমে অর্থনীতির মতো জটিল বিষয়বস্তু সহজেভাবে এই ধরনের শিক্ষার্থীদের পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করেন।
আগে যারা কঠিন বলে আর্থিক সাক্ষরতার সেমিনারগুলিতে আগ্রহ দেখাতেন না, এখন তারাই ১২ মিনিটের দীর্ঘ পথনাটক দেখতে আগ্রহী। বিষয়টা আর কিছুই নয়, এই ধরনের পথনাটকের পরই শুরু হয় বিনিয়োগের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বক্তা মূলত পাঠকের মনোযোগ আকর্ষণ করতে প্রথমে এই ধরনের বিভিন্ন মাধ্যমের সাহায্য নেন। এরপরই সেভিংস, বিনিয়োগ ও অন্যান্য বিষয়গুলির মতো থিমে আলোচনা শুরু হয়।" এই ধরনের পদক্ষেপগুলি বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ তৈরি করছে। এর থেকে উপকৃত হয়ে যুব প্রজন্মের অর্থনীতিতে অংশগ্রহণ আরও বাড়ছে।