Kia Carens vs Maruti XL6: দাম এবং ফিচারে জোর টক্কর, কে থাকবে এগিয়ে?
Kia Carens vs Maruti XL6: Kia Carens এবং Maruti XL6 দুটি মডেলই প্রিমিয়াম স্তরের এবং যথেষ্ট জায়গা রয়েছে। রয়েছে একাধিক নজরকাড়া ফিচারও।
মুম্বই: ভারতের বাজারে পা রাখার পর থেকেই একের পর এক নতুন গাড়ি বাজারে এনেছে গাড়ি প্রস্তুতকারক সংস্থা কিয়া (kia)। সংস্থার নতুন গাড়ি ক্যারেন (kia carens)। এখনও পর্যন্ত এটিই সংস্থার সবচেয়ে নজরকাড়া গাড়ির মডেল। কিয়া ক্যারেন SUV এবং MPV-এর সংমিশ্রণ। কিয়া এটিকে RV বা recreational vehicle বলেছে। কিয়া ক্যারেনের যা দাম করা হয়েছে তাতে বাজার দখলে এটি সবচেয়ে বেশি টক্কর দেবে মারুতির XL6 মডেলের সঙ্গেই। Maruti XL6 ওই সংস্থারই ertiga মডেলেরই প্রিমিয়াম ভার্সন। যদিও XL6 মডেলটি মারুতির nexa আউটলেট থেকেই বিক্রি হয়। তার সঙ্গেই মারুতির এই মডেলটিতে SUV-এর মতো কিছু সুবিধাও রয়েছে। তবে Kia Carens এবং Maruti XL6 দুটি মডেলই প্রিমিয়াম স্তরের এবং যথেষ্ট জায়গা রয়েছে। three row অর্থাৎ তিনটি সারিতে আসন রয়েছে এমন SUV বা MPV-এর তুলনায় এই দুটি মডেলের গাড়িই তুলনায় কম দামের।
দেখতে ভাল কোনটা?
Kia Carens তুলনায় অনেকটাই বড় দেখতে। কারণ গাড়িটির দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ দুটিই Maruti XL6 -এর তুলনায় বেশি। ক্যারেনসের ডিজাইন অনেকটাই নজরকাড়া। কিয়ার অন্য গাড়ির তুলনায় অনেকটাই আলাদা। হেডল্যাম্প-ডিআরএল (headlamp/DRL) এর ডিজাইন অনেকটাই নজরকাড়া। তার সঙ্গেই Kia Carens-এর গ্রিল ডিজাইনেও বিশেষ নজর দিয়েছে প্রস্ততকারক সংস্থা। গাড়ির মানের উপরও নজর দেওয়া হয়েছে। Kia Carens-এর দৈর্ঘ্য 4540mm। এই দামের রেঞ্জের মধ্যে কিয়ার এই মডেলটিই সবচেয়ে লম্বা গাড়ি। সেই XL6 কিছুটা ছোট। Ertiga-এর তুলনায় ডিজাইনে বেশ কিছুটা বদল রয়েছে। Kia Carens-এর সঙ্গে তুলনা করলে XL6-এর চাকার আয়তন ছোট, ১৫ ইঞ্চি। ক্যারেনসের চাকার আয়তন ১৬ ইঞ্চি। গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্সের (ground clearance) দিক থেকেও এগিয়ে Kia Carens। ক্য়ারেনের গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স 195mm. উল্টোদিকে Maruti XL6-এর গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স 180mm।
অন্দরসজ্জায় এগিয়ে কে?
Carens এবং XL6 যে সেগমেন্টের গাড়ি তাতে অন্দরসজ্জা নিয়ে সংস্থাকে নজর দিতেই হয়। তার সঙ্গেই গাড়ির ভিতরেও জায়গা রাখতে হয়। Kia Carens-এর অন্দরসজ্জায় যত্ন নিয়েছে সংস্থা। blue ও biege রং ব্যবহার হয়েছে অন্দরসজ্জায়। ড্যাশবোর্ডে (dashboard) রয়েছে gloss black panel। বাইরের গ্রিলে যে ধরনের ডিজাইন রয়েছে, ঠিক সেই ডিজাইনেই সেজেছে ওই প্যানেলে। অন্দরসজ্জায় ব্যবহৃত উপাদানের মানও যথেষ্ট ভাল। XL6-অন্দরসজ্জাও বেশ ভাল। কালো রং, wood finish এবং Ertiga-এর তুলনায় অনেক ভাল উপাদান ব্যবহার হয়েছে XL6-এ। যদিও দুটোর মধ্যে বিচার করলে Kia Carens অনেকটাই এগিয়ে থাকবে।
ফিচার থেকে বিলাস-সবদিক থেকেই এগিয়ে রয়েছে Kia Carens। ক্যারেনসে বড় আয়তনের টাচস্ক্রিন রয়েছে। তার সঙ্গেই রয়েছে ডিজিট্যাল ইন্সট্রুমেন্ট ক্লাস্টার। এসি কন্ট্রোলও touch control। ভেন্টিলেটেড ফ্রন্ট সিট। গাড়ির ভিতরে রয়েছে 64 color ambient lighting। অডিও সিস্টেম Bose-এর। তার সঙ্গেই আরও একাধিক ফিচার রয়েছে Kia Carens-এ। রয়েছে এয়ার পিউরিফায়ার (air purifier), রিয়ার ভিউ ক্যামেরা (rear view camera)। ক্যারেনসে দ্বিতীয় সারির আসনে রয়েছে electrically fold over। এই মডেলে দ্বিতীয় সারির আসন বেঞ্চ সিট (bench seat) হতে পারে অথবা কাপহোল্ডার, টেবিল-সহ ক্যাপ্টেন সিট (captain seat) হতে পারে।
সুরক্ষার দিকেও নজর দিয়েছে Kia Carens. রয়েছে ৬টি এয়ার ব্যাগ। গাড়ির সামনে ও পিছনে পার্কিং সেন্সর। Kia Carens-এ তৃতীয় সারির আসনেও রয়েছে চার্জিং ফেসিলিটি এবং এসি ভেন্ট (ac vents)। Maruti XL6-এ এত ফিচার নেই। তবে টাচস্ক্রিন রয়েছে, optional connected car tech, ক্রুজ কন্ট্রোল (cruise control) এবং ক্যাপ্টেন সিটের সুবিধে রয়েছে।
আরামে এগিয়ে কে?
XL6 এবং Carens দুটিই গাড়িতেই যথেষ্ট জায়গা রয়েছে। দুটিতেই রয়েছে তিনটি সারির আসন। Carens-এ দ্বিতীয় সারির আসনে electronic one touch tumble feature রয়েছে যার ফলে তৃতীয় সারির আসনে ঢোকা খুব সহজ। ক্যারেনসের শেষ সারির আসনেও যথেষ্ট জায়গা রয়েছে, লম্বা কোনও যাত্রীও সহজেই বসতে পারবেন Carens-এর তৃতীয় সারির আসনে। তুলনায় XL6-এর জায়গা একটু হলেও কম। adjustability-এর দিক থেকে দেখলে Kia Carens-এর আসনের সুবিধা Maruti XL6-এর তুলনায় অনেক বেশি।
কার ইঞ্জিন কতটা শক্তিশালী
Kia Carens-এর তিনটি ইঞ্জিন অপশন রয়েছে। একটি 1.51 ডিজেল ইঞ্জিন এবং দুটি টার্বো পেট্রোল ইঞ্জিনের (1.41 and 1.51) ভ্যারিয়েন্ট রয়েছে। ইঞ্জিনের কোয়ালিটি এবং জ্বালানির সাশ্রয় বিচার করলে ডিজেল ইঞ্জিনের ভ্যারিয়েন্ট যথেষ্ট ভাল। টার্বো পেট্রোল ইঞ্জিনের ভ্যারিয়েন্টও চালিয়ে বেশ ভাল লাগবে। Kia Carens-এর DCT অটোমেটিক ভার্সনের fuel economy বেশ ভাল। Kia Carens-এর গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্সের জন্য গাড়ি চালানো অনেক সুবিধা। ঠিক এই কারণেই লং ট্রিপে অনেক সুবিধে দেবে Kia Carens. গাড়ির আওয়াজও সমস্য়া তৈরি করবে না। তবে ডিজেল ভ্যারিয়েন্টের আওয়াজ কানে লাগার মতো। ইঞ্জিনের কার্যকারিতা বিচার করলে পিছিয়ে নেই Maruti XL6-ও। 1.5l পেট্রোল ইঞ্জিনের কাজ যথেষ্ট ভাল। torque-এর দিক থেকে কমতি থাকলেও গাড়ি চালাতে যথেষ্ট ভাল লাগবে। XL6-এর ম্যানুয়ালের মাইলেজ অনেকটাই ভাল। তবে অটোমেটিক ভার্সনেও অসুবিধে নেই, বরং গাড়ি চালানোর ক্ষেত্রে অনেকটাই আরামদায়ক। Kia Carens-এর ডিজেল ইঞ্জিন 6-speed torque converter এবং টার্বো পেট্রোল ইঞ্জিন 7-speed DCT। গিয়ারে কাজ এবং মাইলেজের বিচারে অনেকটাই এগিয়ে থাকবে ক্যারেনস।
দামের টক্কর
XL6-এর দাম শুরু হচ্ছে ১০.১৪ লক্ষ টাকা থেকে, ১২.০২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত উঠবে এর দাম। এর তুলনায় Carens-এর দামের রেঞ্জ অনেকটাই বেশি। শুরু হচ্ছে ৮.৯৯ লক্ষ টাকা থেকে সবচেয়ে বেশি দাম ১৬.৯ লক্ষ টাকা। ক্যারেনের এন্ট্রি লেভেল ভ্যারিয়েন্টের যা ফিচার রয়েছে তার তুলনায় দাম ঠিকঠাক। সবচেয়ে ভাল ভ্যারিয়েন্টের দামও ফিচারের সঙ্গে সামঞ্জস্য পূর্ণ। Kia Carens-এর দামের রেঞ্জের সঙ্গেই পাল্লা দিয়ে ইঞ্জিনের একাধিক অপশন এবং ফিচারের অপশনও রেখেছে প্রস্তুতকারী সংস্থা।
আরও পড়ুন: নতুন চেহারায় দমদার এসইউভি, মহিন্দ্রা স্করপিও নিয়ে নতুন খবর