Durga Puja 2021: পুরোহিত ছাড়াই পুজো, সারাবছর দুর্গা সেজে থাকা বহুরূপীরাই উদ্যোক্তা
প্রায় দেডশো বছরের বেশি সময় আগে সুদূর উড়িষ্যা থেকে শীতল গ্রামে বাজিগরদের নিয়ে এসেছিলেন নিজেদের পরিবারের লোকেদের আনন্দ প্রদান করার জন্য জমিদারেরা।
গোপাল চট্টোপাধ্যায়, বীরভূম: সারাবছর নিজেরা রং মেখে সেজে অন্যদের আনন্দ দিয়ে থাকেন। কিন্তু পুজো কয়েকদিন তাঁরা সাজান মাকে। বীরভূমের লাভপুরের শীতল গ্রামের এ এক অন্য পুজো। আর এ পুজোতে লাগে না কোনও পুরোহিত। নিজেরাই করেন মা দুর্গার পুজো।
বীরভূমের লাভপুরের শীতল গ্রামের বাজিগর সম্প্রদায়ের পুজোর রীতি এমনটায়। প্রায় দেডশো বছরের বেশি সময় আগে সুদূর উড়িষ্যা থেকে শীতল গ্রামে বাজিগরদের নিয়ে এসেছিলেন নিজেদের পরিবারের লোকেদের আনন্দ প্রদান করার জন্য জমিদারেরা। আর তারপর থেকেই ধীরে ধীরে এখানে বসবাস শুরু করেন বাজিগর সম্প্রদায়ের মানুষজনেরা।
বর্তমানে এই গ্রামে প্রায় ৫০টি পরিবারের বসবাস বাজিগর সম্প্রদায়ের। মূলত জমিদার পরিবারের সদস্যদের তখন বাঁসের উপর উঠে খেলা দেখানো, হাবু গান করা ও বহুরূপী সেজে সং দেখানো ছিল তাদের মূল কাজ। বর্তমানে গ্রামে জমিদার নেই। আর সেই বহু বছর আগে থেকেই পূর্বপুরুষরা শুরু করেছিলেন নিজেরাই দুর্গা পুজো করা। ৩ পুতুলের দুর্গা প্রতিমা এনে নিজেরাই পূজা করতেন দুর্গা মায়ের। পরবর্তীকালে একচালার দুর্গা সরস্বতী লক্ষী গণেশ কার্তিক ও মহিষাসুর। তবে এখানে সিংহের পরিবর্তে থাকে নরসিংহ।
সারাবছর রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় তারা নানান রূপে সেজে, গান করে রুটি রোজগার করেন। কিন্তু সারাবছর তারা যে যেখানেই থাকুক না কেন ফিরে আসেন দুর্গা পুজোতে, নিজের গ্রামের বাড়িতে। আর এই পুজো কয়েকদিন তারা নিজেরা কোন সাজে সাজে না, সাজান মা দুর্গাকে। আর পুজো করেন তারা নিজেরাই। অষ্টমী পূজোর দিন মায়ের সামনে রেখে দেওয়া হয় সিন্দুর, আর সেই সিন্দুরের ওপরই নাকি দেখা যায় মায়ের পদচিহ্ন। তারপরই হয় মহাষ্টমী পূজা ও বলিদান।