Dilip Ghosh: ‘সব পাল্টে দেব আমরা, ভারত নাম পছন্দ না হলে চলে যান’, হুঙ্কার দিলীপের, পাল্টা CPM-TMC
India or Bharat: খড়্গপুরে চা-চর্চা থেকে হুমকি দিতে শোনা গেল দিলীপকে।
কলকাতা: দেশের নাম শুধুমাত্র ভারত রাখা নিয়ে তুঙ্গে বিতর্ক। সেই আবহেই বিতর্ক আরও বাড়ালেন বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। 'India' নয়, দেশের নাম শুধুমাত্র ভারত রাখা হবে, যারঁ বা যাঁদের পছন্দ হবে না, তাঁরা বাইরে চলে যেতে পারেন বলে মন্তব্য করলেন তিনি। শুধু তাই নয়, সব পাল্টে যাচ্ছে যেমন, দেশের নামও পাল্টে যাবে, কারও আটকানোর ক্ষমতা নেই বলেও হুঙ্কার দিতে শোনা গেল তাঁকে। (India or Bharat)
জি-২০ সম্মেলনে গতকালই প্রধানমন্ত্রীর সামনের ফলকে 'India'-র পরিবর্তে দেশের নাম হিসেবে লেখা ছিল ভারত। দেশের নাম নিয়ে বিতর্কে নিজের অবস্থান বোঝাতেই মোদি দেশের নাম হিসেবে ভারত লেখা ফলক ব্যবহার করেন বলে উঠছে অভিযোগ। সেই আবহেই দেশের নাম নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করতে শোনা গেল দিলীপকে।
খড়্গপুরে চা-চর্চা থেকে হুমকি দিতে শোনা গেল দিলীপকে। সেখানে তিনি বলেন, "সব পাল্টাচ্ছে, পাল্টে দেব আমরা। কারও হিম্মত নেই আটকে রাখার। India পাল্টে ভারত হবে, যার পছন্দ হবে না, বাইরে যাবে। যে India খুঁজবে, ব্রিটেনে গিয়ে খোঁজো, যেখানে India হাউজ না কী আছে, যেখানে সাভরকর থাকতেন। ভারতে কোনও India থাকবে না।"
আরও পড়ুন: Jalpaiguri Accident:গাড়ি চালানো শিখতে গিয়ে বালককে পিষে দেওয়ায় অভিযুক্ত যুবক, ধুন্ধুমার ময়নাগুড়িতে
নিজের দাবির সপক্ষে দিলীপ বলেন, "যার আজ বিরোধিতা করছে...তামিলনাড়ু যেমন, তাহলে মাদ্রাজকে চেন্নাই করা হল কেন? ভারতের বেশির ভাগ বড় শহরের নাম পাল্টে গিয়েছে, ঔরঙ্গাবাদ হয়েছে সম্ভাজিরাও। ব্রিটিশ, পর্তুগিজ, মুঘলরা ১ হাজার বছর দেশকে পরাজিত করে রেখেছিল। তাদের কোনও চিহ্ন থাকবে না ভারতে। হিম্মত থাকলে আটকে দেখান। কলকাতার রাস্তায় বহু ব্রিটিশদের মূর্তি ছিল। এখন ক'টা আছে। একটা দু'টো এখনও রয়েছে। সব তুলে উপড়ে ফেলব, খালি বিজেপি ক্ষমতায় আসুক। সেগুলি ভিক্টোরিয়ার মেমোরিয়ালের মিউজিয়ামে রাখা হয়েছে। মিউজিয়ামে থাকার জিনিস, মিউজিয়ামে থাকবে। রাস্তায় গোলামির চিহ্ন থাকবে না। সকালে উঠে বিদেশিদের মুখ দেখবে আমাদের ছেলেমেয়েরা! চলবে না। ওখানে ভগীরথের চিহ্ন থাকবে, শঙ্করাচার্যের মূর্তি থাকবে।"
এ নিয়ে দিলীপকে কটাক্ষ করেছেন সিপিএম-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী। তিনি বলেন, "দলের মধ্যে কল্কে না পেয়ে, দিলীপ ঘোষ বাইরে এমন কথা বলছেন, যাতে মাঝে মধ্যে ওঁর নাম ছাপে। বিপজ্জন মনোভাব। ভারতীয়ত্বের সঙ্গে ওঁর মনোভাবের কোনও মিল নেই। ভারতের একটা ইতিহাস, ঐতিহ্য, পরম্পরা রয়েছে। যে এসব বোঝে না, সে-ই এমন কথা বলে। সংবিধান এখনও পাল্টায়নি অথচ প্রেসিডেন্ট অফ ভারত, প্রাইম মিনিস্টার অফ ভারত লেখা হচ্ছে, এটা বেআইনি। কারণ সংবিধানে এমন কিছু বলা নেই। কিন্তু ভারত এবং India-র মধ্যে কোনও ভারত নেই, যা ভারত, তা-ই India. তার জন্য সংবিধান বুঝতে হয়। বলছেন, যাঁদের পছন্দ হবে না ইংল্যান্ডে চলে যাক! আরে ইংল্যান্ডের বাহিনীকে ভারতে রাখার জন্য ওঁর পূর্বপুরুষরা সবরকম চেষ্টা করেছেন, নানা মুচলেকা দিয়েছে, ব্রিটিশদের দালালি, গোলামি করেছে। ব্রিটিশকে তারা শত্রু বলে মনে করেনি। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতি এই অশ্রদ্ধা নিয়েই আরএসএস, বিজেপি চলে। দিলীপও চলছেন। দেশের মানুষ অপেক্ষায় রয়েছেন, এঁদের উৎপাটন করবেন। এই ছেলেখেলা চলবে না। "
এ ব্যাপারে একই সুর ধরা পড়েছে তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষের গলাতেও। তাঁর বক্তব্য, "India এবং ভারত, দুই নামেই পরিচিত দেশ। একটি কেটে, অন্যটি রাখতে হবে, এগুলো অর্থহীন। বিরোধী জোটের নাম হয়েছে I.N.D.I.A, তাই এই উদ্যোগ। ভয়ে ভারত ভারত করছে। নাম নিয়ে কোনও বিতর্কই নেই। সময়টা গুরুত্বপূর্ণ। অর্থহীন কথা বলছেন দিলীপ।" যদিও দিলীপ একা নন, জাতীয় স্তরেও বিজেপি-র নেতা-মন্ত্রীরা একযোগে দেশের নাম শুধুমাত্র ভারত রাখার পক্ষে গলা চড়াতে শুরু করেছেন। এমনকি জি-২০ সম্মেলনেও দেশের নাম হিসেবে ভারতের ব্যবহার চোখে পড়ছে।