Calcutta High Court: 'আধার-ভোটার কার্ড থাকলেই তিনি ভারতের নাগরিক কী করে প্রমাণ হয় ?' প্রশ্ন হাইকোর্টের বিচারপতির
Illegal Migrant: প্রায় এক বছর আগে বর্ধমান থেকে অনুপ্রবেশকারী হিসাবে চিহ্নিত করে এক দম্পতিকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁরা কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন।

সৌভিক মজুমদার, কলকাতা : আধার-ভোটার কার্ড থাকলেই তিনি ভারতীয় ? প্রশ্ন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাকের। 'অনুপ্রবেশকারী অনেক বাংলাদেশি নাগরিকের জাল আধার-ভোটার-রেশন কার্ড আছে, কেউ কেউ নিজেকে এদেশের নাগরিক প্রমাণ করতে আয়করও দেন।' এক মামলার পরিপ্রেক্ষিতে এই পর্যবেক্ষণ বিচারপতির। অনুপ্রবেশের অভিযোগে এক বছর আগে বর্ধমানের এক দম্পতিকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। সেই মামলার শুনানি চলাকালীনই একাধিক উল্লেখযোগ্য মন্তব্য করলেন বিচারপতি বসাক।
কী ঘটনা ?
প্রায় এক বছর আগে বর্ধমান থেকে অনুপ্রবেশকারী হিসাবে চিহ্নিত করে এক দম্পতিকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁরা জামিনের আবেদন নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। জাল পাসপোর্ট কাণ্ডের আবহে এই মামলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ মামলায় বিচারপতির পর্যবেক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিচারপতির বক্তব্য, আধার কার্ড এবং ভোটার কার্ড থাকলেই তিনি ভারতের নাগরিক এটা কী করে প্রমাণ হয় ? বহু অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশি আছেন যাঁদের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, তাঁরা জাল আধার কার্ড, ভোটার কার্ড এবং পাসপোর্ট বানিয়ে এখানে বসবাস করছেন। এঁদের মধ্যে অনেকে আয়করও দেন নিজেকে এ দেশের নাগরিক বলে প্রমাণ করার জন্য । ফলে তাঁরা যে দাবি করছেন যে, তাঁরা এ দেশের নাগরিক এবং তাঁদের সঠিক পাসপোর্ট রয়েছে, সেটা নিয়েই বিচারপতি দেবাংশু বসাক প্রশ্ন তুলেছেন। এর পাশাপাশি তিনি এও বলেছেন যে, আমেরিকার ক্ষেত্রে এরকম দেখা যাচ্ছে বহু ক্ষেত্রে। সেই কারণে আমেরিকায় সেই সমস্ত ব্যক্তিকে চিহ্নিত করে সেখান থেকে তাঁদের বের করে দেওয়া হচ্ছে। ফলে, জামিনের জন্য যে আবেদন কলকাতা হাইকোর্টে এই দম্পতি করেছিলেন, সেই আবেদন খারিজ করে এই মামলার নিষ্পত্তি করা হয়।
বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতার সঙ্গে সঙ্গে এদেশে একের পর একে অনুপ্রবেশের চেষ্টার ঘটনা সামনে এসেছে। বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে এদেশে বহু অনুপ্রবেশকারীকে পাকড়াও করা হয়েছে। রাজ্য ছাড়িয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গাতেও এই অনুপ্রবেশের সমস্যা দেখা দিয়েছে। যা রীতিমতো চিন্তার কারণ হয়েছে পুলিশ প্রশাসনের কাছে।
এই আবহে দিনকয়েক আগে ওয়াশিংটনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও বার্তা দিয়েছিলেন, অবৈধভাবে অন্য দেশে ঢুকে পড়া অন্যায়। সম্মিলিতভাবে মানবপাচার রুখতে হবে। অবৈধ অভিবাসী যদি ভারতীয় হয়, তাঁকে ফিরিয়ে নেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী জানান, মানব পাচারের মতো বিষয়টি নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তাঁর আলোচনা হয়েছে।
ক্ষমতায় ফেরার পরই আমেরিকায় বসবাসকারী অবৈধ অভিবাসীদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে তৎপর হয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁদের ফেরত পাঠানোয় সায় রয়েছে নয়াদিল্লিরও। ইতিমধ্যেই আমেরিকায় বসবাসকারী অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীদের একাংশকে চিহ্নিত করে বিমানে এদেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। তা নিয়ে তুলকালাম ঘটে গেছে জাতীয় রাজনীতিতে। সংসদের ভিতরে-বাইরে মোদি সরকারের সমালোচনায় সরব হন বিরোধীরা। মোদি এবং ট্রাম্প, দুই রাষ্ট্রনেতার ব্যক্তিগত সম্পর্ক যথেষ্ট মসৃণ। তাঁদের আলোচনায় অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর বিষয়টি উঠে আসে কি না, বর্তমান পরিস্থিতিতে, সেদিকে নজর ছিল কূটনৈতিকমহলের।
ট্রেন্ডিং
সেরা শিরোনাম
