Recruitment Corruption: আদালতের ভর্ৎসনার পরই SSC মামলায় প্রথমবার গোপন জবানবন্দি রেকর্ড CBI-এর
নাইসা আধিকারিক পঙ্কজ বনশলের গোপন জবানবন্দি রেকর্ড। ওএমআর শিট কারা নষ্ট করার নির্দেশ দিল, তা জানতে গোপন জবানবন্দি রেকর্ড।
কলকাতা: এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রথমবার গোপন জবানবন্দি রেকর্ড। গোপন জবানবন্দি রেকর্ড করাল সিবিআই। নাইসা আধিকারিক পঙ্কজ বনশলের গোপন জবানবন্দি রেকর্ড। ওএমআর শিট কারা নষ্ট করার নির্দেশ দিল, তা জানতে গোপন জবানবন্দি রেকর্ড। কোন সিন্ডিকেটে কারা, কারা কাদের কাছে নির্দেশ পাঠাত, তা জানতেও রেকর্ড করা হল গোপন জবানবন্দি।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে CBI-র ভূমিকায় তীব্র ক্ষোভপ্রকাশ করলেন আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক। বললেন, ২টি মামলা ছাড়া নিয়োগ দুর্নীতির অন্য মামলা- অল আর হোপলেস! নীলাদ্রি-কুন্তল-তাপস কাকে টাকা দিলেন, তিনি তো পিকচারেই নেই! শনিবার, কুন্তল ঘোষ, তাপস মণ্ডল ও নীলাদ্রি ঘোষের ১২ মে অবধি জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে এবার CBI-র ভূমিকায় তীব্র ক্ষোভপ্রকাশ করলেন আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক। বলেন, বিশ্বের যত কাগজ আছে নিয়ে আসছেন, এগুলো দিয়ে কী করব? ২টি মামলা ছাড়া নিয়োগ দুর্নীতির অন্য মামলা- অল আর হোপলেস! আজ আমি কিছু বলব না, যা করার কলম দিয়ে করব। এরপর এদিন একধাপ এগিয়ে, একেবারে ডেডলাইন বেঁধে দিলেন!
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় শনিবার আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালতে ২টি পৃথক মামলায় বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা, বহিষকৃত তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষ, তাপস মণ্ডল ও মিডলম্যান নীলাদ্রি ঘোষকে পেশ করা হয়। শনিবার, সিবিআইয়ের আইনজীবীর উদ্দেশে বিচারক বলেন, রোজই তো একই আবেদন করছেন।
আবেদন দেখে কী করব? আজ আমি কিছু বলব না, যা করার কলম দিয়ে করব। সিবিআইয়ের আইনজীবীর উদ্দেশে তিনি প্রশ্ন করেন, মিডলম্যান নীলাদ্রি ঘোষকে কবে গ্রেফতার করেছেন? এরপর তদন্তে কী অগ্রগতি হয়েছে? তীব্র ভর্ৎসনার সুরে, বিচারক বলেন, নীলাদ্রি-কুন্তল-তাপস কাকে টাকা দিলেন, তিনি তো পিকচারেই নেই! আপনি আমার জায়গায় এসে দেখুন।
সিবিআইয়ের আইনজীবী তখন বলেন, যাঁর নাম আছে, তিনি অন্য কেসে অ্যারেস্ট হয়ে আছেন। বিচারক বলেন, তাতে কী? এক ব্যক্তি ৫টা খুন করলে, বাকিগুলোতে তাঁকে গ্রেফতার করবেন না? কেস তো আছে, মোটের উপর ৫ থেকে ৬টা। অন্য কেসে কেন তাঁকে হেফাজতে নেননি? বিচারক বলেন, গ্রুপ সি ও নবম-দশম ছাড়া অন্য মামলা ঠিকমতো চলছে না।
এর পর সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসারকে ডেকে নেন বিচারক। তাঁর জমা করা কেস ডায়েরি দেখে বিচারক বলেন, প্রোসেস বলছেন শুধু, এভাবে কতদিন আটকে রাখব। ভর্ৎসনার সুরে বিচারক বলেন, এটা তো সিভিল কেস হচ্ছে? নিশ্চিতভাবে, তদন্তে কিছু পজিটিভ অগ্রগতি থাকতে হবে। মিসিং লিঙ্ক থাকলে কারও কিছু করার থাকবে না। চার্জশিট হয়ে অভিযুক্তরা ছাড়া পেয়ে যাবে।
এর পর, বিচারক বলেন, কুন্তল ঘোষ, নীলাদ্রি ঘোষ ও তাপস মণ্ডলের মধ্যে সরকারি অফিসার কে? সরকারি অফিসার ছাড়া কি এটা সম্ভব? সিবিআইয়ের আইনজীবী তখন বলেন, ওপেন কোর্টে নাম বলছি না। কোর্টের ডিরেকশন আছে। এরা কেউ চেকে টাকা নেয়নি, নগদে লেনদেন হয়েছে। এদের সাক্ষী করতে চাই। এরা জামিন পেলে পিকচার বদলে যাবে। তখন বিচারক বলেন, আপনারা বৃত্ত করতে চাইছেন। কিন্তু তা সম্পূর্ণ হচ্ছে না।
ফের তদন্তকারী অফিসারকে তিনি বলেন, গতি বাড়ান। কড়া পর্যবেক্ষণে শনিবার বিচারক বলেন, যাঁরা প্রতারিত তাঁদের গোপন জবানবন্দি নিতে বলা হয়েছিল। এদিন CBI চুপ করে বসে ছিল। আদালত একাধিক প্রশ্ন করলেও, সিবিআইয়ের কাছে সদুত্তর নেই। সিবিআইয়ের তদন্তকারীদের বলছি, তদন্ত দ্রুত শেষ করুন। তদন্ত যেহেতু প্রোগ্রেসের মধ্যে রয়েছে তাই জামিন দিলাম না।
১৩ এপ্রিলনিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানিতে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায় মন্তব্য় করেন, অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায় এবং কুন্তল ঘোষকে খুব দ্রুত জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিত CBI, ED-র। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন অভিষেক।
সেই মামলার প্রেক্ষিতে, শুক্রবার প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতির ২টি মামলা বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায়ের এজলাস থেকে মামলা সরিয়ে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সে বিষয়ে শনিবার কুন্তল ঘোষকে প্রশ্ন করা হলে কোনও উত্তর দেননি তিনি। শনিবার, কুন্তল ঘোষ, তাপস মণ্ডল ও নীলাদ্রি ঘোষের ১২ মে অবধি জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।