Durga Puja 2024: পাহাড়ে কামানের তোপধ্বনি, ১০২৮ বছরের রীতি মেনে বিষ্ণুপুরে মল্ল রাজবাড়িতে উমার আরাধনা
Durga Puja Bankura: সারা রাজ্যে দুর্গাপুজা কালিকা পুরাণ মতে হলেও শুরুর দিন থেকে বিষ্ণুপুরের রাজপরিবারের মৃন্ময়ীয় পুজো হয় একটি প্রাচীন বিশেষ পুঁথি অনুসারে।
![Durga Puja 2024: পাহাড়ে কামানের তোপধ্বনি, ১০২৮ বছরের রীতি মেনে বিষ্ণুপুরে মল্ল রাজবাড়িতে উমার আরাধনা Durga Puja 2024 Bankura Mallabhum kingdom puja rituals commences with 1028 years of its own history Durga Puja 2024: পাহাড়ে কামানের তোপধ্বনি, ১০২৮ বছরের রীতি মেনে বিষ্ণুপুরে মল্ল রাজবাড়িতে উমার আরাধনা](https://feeds.abplive.com/onecms/images/uploaded-images/2024/09/26/20745830856904e1a4e77378775917711727339906052223_original.jpg?impolicy=abp_cdn&imwidth=1200&height=675)
তুহিন অধিকারী, বাঁকুড়া: পুজো শুরু হতে এখনও ২ সপ্তাহ বাকি। মণ্ডপে মণ্ডপে এখন চূড়ান্ত ব্যস্ততা। আর তার মাঝেই আজ থেকে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর মল্লরাজ পরিবারে মহা ধুমধামে শুরু হয়ে গেল দেবী মৃন্ময়ীর পুজো। ১০২৮ বছরের রীতি রেওয়াজ মেনে স্নান পর্ব শেষে সাত সকালেই রাজ মন্দিরে এলেন বড় ঠাকুরানি। স্থানীয় মুর্ছা পাহাড় থেকে মুহুর্মুহু কামানের শব্দ ঘোষণা করল দেবীর আগমনবার্তা।
প্রাচীন মল্ল রাজত্বের সাথে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে রয়েছে দেবী মৃন্ময়ীর ইতিহাস। ৯৯৭ খ্রীষ্টাব্দের আগে মল্ল রাজাদের রাজধানী ছিলো জয়পুরের প্রদ্যুম্নপুর এলাকায়। ৯৯৭ খ্রীষ্টাব্দে মল্লরাজ জগৎমল্ল শিকারের উদ্যেশ্যে বেরিয়ে জঙ্গলে পথ হারিয়ে ফেলেন। কথিত আছে পথের খোঁজ করতে করতে ক্লান্ত জগৎমল্ল একসময় ক্লান্ত হয়ে একটি বট গাছের তলায় বসে পড়েন। সেখানেই বিভিন্ন অলৌকিক কান্ড কারখানার সম্মুখীন হতে হয় রাজাকে। শেষে রাজা দৈববানী পান ওই বট গাছের নীচে দেবী মৃন্ময়ীর মন্দির স্থাপন করার। সেই নির্দেশ মোতাবেক রাজা জগৎমল্ল বট গাছের নিচে দেবীর সুবিশাল মন্দির তৈরী করেন।
পাশাপাশি ঘন জঙ্গল কেটে রাজধানী সরিয়ে আনেন বিষ্ণুপুরে। তারপর দীর্ঘ ১০২৮ বছর ধরে বহু উত্থান পতনের সাক্ষী এই মৃন্ময়ীর পুজো। কথিত আছে একসময় এই পুজোয় বলি হত। পরবর্তীতে মল্ল রাজারা বৈষ্ণব ধর্মে দীক্ষিত হলে বলিদান প্রথা বন্ধ করে শব্দকে ব্রহ্ম জ্ঞান করে তোপধ্বনীর প্রচলন শুরু হয়। সেই প্রথা আজও চলে আসছে। আজও পুজোর প্রতিটি নির্ঘন্ট ঘোষিত হয় তোপধ্বনীর মাধ্যমে।
সারা রাজ্যে দুর্গাপুজা কালিকা পুরাণ মতে হলেও শুরুর দিন থেকে বিষ্ণুপুরের রাজপরিবারের মৃন্ময়ীয় পুজো হয় একটি প্রাচীন বিশেষ পুঁথি অনুসারে। বলিনারায়নী নামের সেই পুঁথির নিয়ম নীতি মেনে আজো পুজো চলে আসছে। রাজার পুজো। তাই পুজোর নিয়ম কানুন ভিন্ন ধরনের। এই পুজো শুরু হয় জীতাষ্টমীর ঠিক পরের দিন অর্থাৎ নবমী তিথি ধরে। এবছরও তার অন্যথা হল না।
আজ নবম্যাদি কল্পারম্ভে সাত সকালে দেবীর আগমন ঘটল প্রাচীন মন্দিরে। সুপ্রাচীন রীতি অনুসারে আজ রাজ দরবার সংলগ্ন গোপালসায়েরে স্নানপর্ব সেরে মন্দিরে আনা হল বড় ঠাকরুণ অর্থাৎ মহাকালীকে। দেবীপক্ষের চতুর্থী তিথিতে মন্দিরে আসবেন মেজ ঠাকরুন অর্থাৎ মহালক্ষ্মী। সপ্তমীর দিন আনা হবে ছোট ঠাকরুণ অর্থাৎ মহা সরস্বতীকে। এই তিন ঠাকরুণ আসলে স্থানীয় ফৌজদার পরিবারের হাতে আঁকা তিনটি বিশেষ পট।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মল্ল রাজারা রাজ্যপাট হারিয়েছে। ধুলোয় মিশে গেছে বিশাল রাজপ্রাসাদ। গড়ের আকারে থাকা প্রাচীন মল্ল রাজধানী বিষ্ণুপুর আজ রীতিমত আধুনিক শহর। কিন্তু আজো মৃন্ময়ীর আগমনে মল্লভূম জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে পুজোর গন্ধ। একসময় যে তোপের শব্দ শুনে দূর দূরান্তের প্রজারা জানতে পারতেন আগমনীর আগমন বার্তা সেই তোপ আকারে ছোট হয়ে এলেও আজও দাগা হয় স্থানীয় মুর্ছা পাহাড় থেকে। আজও পুজোর বোধনের ১৫ দিন আগে থেকেই মেতে ওঠেন প্রাচীন মল্লভূমের আপামর মানুষ।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে
ট্রেন্ডিং
সেরা শিরোনাম
![ABP Premium](https://cdn.abplive.com/imagebank/metaverse-mid.png)