Durgapur News : পুরকর্মীর মায়ের শ্রাদ্ধের প্যান্ডেল করতে বিশ্ববাংলার লোগো দেওয়া সরকারি ত্রাণের ত্রিপল !
রাজ্য সরকারের দেওয়া ত্রাণের ত্রিপল সরকারি কর্মীর বাড়িতে!
মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর : মায়ের শ্রাদ্ধানুষ্ঠান। বাড়িতে ত্রিপল খাটানো। তাতে জ্বলজ্বল করছে বিশ্ববাংলার লোগো । অতএব বোঝাই যাচ্ছে সরকারি ত্রিপল। সরকারি কর্মীর বাড়িতে , তাঁর মায়ের শ্রাদ্ধে কীভাবে চলে এল সরকারি ত্রিপল ?
দুর্গাপুর পুরসভার ৪ নম্বর বরোয় কর্মরত শুভ দত্ত। মঙ্গলবার ছিল তাঁর মায়ের শ্রাদ্ধানুষ্ঠান। তাতেই প্যান্ডাল করতে ব্যবহার করা হয় বিশ্ববাংলার লোগো বসানো সরকারি ত্রিপল। সরকারি ত্রিপল কীভাবে ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করছেন তিনি ? স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন তুলেছেন এলাকার মানুষ। কিন্তু এর দায় নিতে নারাজ শুভ দত্ত। সব দোষ চাপিয়েছেন ডেকরেটর্স সংস্থার ঘাড়ে।
সন্দেশখালিতেও তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়ির গ্যারাজে মিলেছিল সরকারি ত্রাণের ত্রিপল। ত্রিপলের ওপর লেখা ছিল, ‘পশ্চিমবঙ্গ সরকার দুর্গত মানুষের পাশে। বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা দফতর, নট ফর সেল গভর্নমেন্ট ইউজ ওনলি’। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে দুর্গত মানুষের জন্য বিলি করা সরকারি ত্রাণের ত্রিপল মিলেছিল দাপুটে তৃণমূল নেতার গ্যারাজে। এবার দুর্গাপুরে পুরকর্মীর বাড়িতে মিলল সরকারি ত্রাণের ত্রিপল।
ডেকরেটর অবশ্য দাবি করেছেন, সরকারি কর্মীই তাঁদের ওই ত্রিপল দিয়েছেন। ত্রাণের জন্য বিলি করা সরকারি ত্রিপল কীভাবে গেল পুরকর্মীর বাড়িতে? এই নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
বিজেপির দাবি, তৃণমূল জমানায় ত্রাণ বিলিতেও দুর্নীতি চলছে। এই ঘটনা তার প্রমাণ। অস্বস্তি ঢাকতে বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব। তদন্তের আশ্বাস দিয়েছে দুর্গাপুর পুরসভা। বর্ধমান দুর্গাপুর সাংগঠনিক জেলার বিজেপির সহ-সভাপতি চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'এটাই বাংলার পরিস্থিতি। গরিব মানুষ বন্যার জলে ভেসে যাচ্ছে বৃষ্টির জলে বাড়ি ভেঙে অসহায় হয়ে পড়ছে। তাদের ত্রিপল না দিয়ে ত্রানের ত্রিপলে শ্রাদ্ধ বাড়ির প্যান্ডেল করছেন দুর্গাপুর নগর নিগমের কর্মী। এর থেকে লজ্জাজনক ব্যাপার আর কীই হতে পারে। আমরা এর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ করছি।"
শুভ দত্ত পুরসভার কর্মী। দুর্গাপুর নগর নিগমের প্রশাসক মণ্ডলীর ভাইস চেয়ারপার্সন অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'এই ধরনের অন্যায় কেউ করলে তার বিরুদ্ধে দ্রুত নগর নিগমের তরফ থেকে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।' নগর নিগমের কমিশনার আবুল কালাম আজাদ বলেন,' এই বিষয়টা আমাদের নজরে নেই। এই ধরনের অন্যায় কাজ যদি কেউ করে থাকেন তার বিরুদ্ধে নিশ্চয়ই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে, এই সরকারি ত্রিপল ওইভাবে ব্যবহার করা উচিত নয়।'
এর আগেও আম্ফানের সময় ত্রিপল চুরির অভিযোগ ওঠে অনেক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। গত সেপ্টেম্বরেই ত্রাণের ত্রিপল চুরির চেষ্টার অভিযোগ ওঠএ পাঁশকুড়ায়। পাঁশকুড়া ব্লকের ধুলিয়াপুরে তৃণমূলের বুথ সভাপতির বাড়ি থেকে ত্রাণের ত্রিপল উদ্ধার হয়েছে বলে অভিযোগ করে বিজেপি। এই ঘটনায় উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়।