Mamata On Tiger: বাঘের আতঙ্কে লাল সতর্কতা জারি ! মুখ্যমন্ত্রীর নিশানায় ওড়িশা সরকার, 'এবার আমরা পারব না, ওরা উদ্ধার করুক..'
Mamata On Tiger Phobia Red Alert ১০ গ্রামে বাঘের আতঙ্ক, মিলেছে বাঘের পায়ের ছাপ, বাঘের অবস্থান বুঝতে ট্র্যাপ ক্যামেরা, কী বললেন মুখ্যমন্ত্রী ?
সুকান্ত দাস, অমিতাভ রথ ও উজ্জ্বল মুখোপাধ্য়ায়, কলকাতা: একদিকে, যখন রয়্যাল বেঙ্গল-আতঙ্কে ভয়ে কাঁটা দক্ষিণ ২৪ পরগনার মৈপীঠ। ঠিক তখনই ঝাড়খণ্ডের বালিডি জঙ্গলসহ ১০ গ্রামে বাঘের আতঙ্ক। বালিডির জঙ্গলে মিলেছে বাঘের পায়ের ছাপ। বন দফতরের তরফে ঝাড়খণ্ড সীমানা সংলগ্ন এলাকায় লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ঝাড়খণ্ড সীমানা লাগোয়া বাঘমুণ্ডি ও বলরামপুর ব্লকের গ্রামের বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে নির্দেশ। ঝাড়গ্রাম ও পুরুলিয়ার ঝাড়খন্ড সীমানা এলাকায় বাড়ানো হয়েছে নজরদারি। তবে বাঘের অবস্থান এখনও জানা যায়নি। বাঘের অবস্থান বুঝতে জঙ্গলে লাগানো হয়েছে ট্র্যাপ ক্যামেরা। ঠিক এমনই এক পরিস্থিতিতে কড়া বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'ওড়িশা থেকে ফের বাঘ ঢুকেছে এ রাজ্যে। এবার ওরা রেসকিউ করে নিয়ে যাক, আমরা পারব না। ওড়িশা সরকারকে বলব, আপনাদের টিম নিয়ে এসে বাঘ উদ্ধার করে নিয়ে যান। এই তো পাঁচদিন ধরে কত কষ্ট করে ওখান থেকে পালিয়ে আসা বাঘিনী ধরলাম। আর অমনি ওরা ফেরত নিয়ে চলে গেল', মন্তব্য মুখ্যমন্ত্রীর।
জিনতের জঙ্গল সফর শেষ হতে না হতেই, ফের বাঘের ভয়! ঝাড়খণ্ড সীমান্ত লাগোয়া এলাকায়, গ্রামে বাঘের পায়ের ছাপ, আতঙ্কে বাড়ির বাইরে বেরোচ্ছেন না গ্রামবাসীরা। ঝাড়গ্রাম-পুরুলিয়ায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে। অন্য়দিকে, দক্ষিণ ২৪ পরগনার মৈপীঠেও রয়্যাল বেঙ্গল আতঙ্ক। নদীর পাড় জাল দিয়ে ঘিরে বাঘ ধরার চেষ্টা চালাচ্ছে বন দফতর। এরইমধ্য়ে এবার বাঘ নিয়েও বিতর্ক! ওড়িশা সরকারকে বলো, বাঘ উদ্ধার করে নিয়ে যেতে। মন্তব্য় মুখ্য়মন্ত্রীর। ২৯ ডিসেম্বর, বাঁকুড়া থেকে ধরা পড়ে, ওড়িশার সিমলিপাল থেকে পালানো বাঘিনী। সাতদিনও যায়নি।তার মধ্য়েই রাজ্য়ের পশ্চিম সীমান্তে ফের দেখা দিল বাঘের আতঙ্ক!ঝাড়খণ্ড সীমান্তের বালিডির জঙ্গলে বাঘের পায়ের ছাপ দেখা গেছে বলে দাবি গ্রামবাসীদের। আতঙ্কে বাড়ির বাইরে পা রাখছেন না গ্রামবাসীরা। আর এই প্রেক্ষাপটে বাঘ নিয়ে এবার বিজেপি শাসিত ওড়িশাকে নিশানা করলেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়।
মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় বলেন, 'এই দেখুন না, একটা বাঘ ৫টা জঙ্গল পেরোলো, ৫টা জেলা ৫ দিন আতঙ্কে ছিল। স্কুলও বন্ধ ছিল। যেই আমরা উদ্ধার করলাম, আমাদের বন-বিভাগ, প্রশাসন সকলে মিলে, দিন-রাত খেটে, সঙ্গে সঙ্গে ফোন আসতে শুরু করল, ফেরত দাও, ফেরত দাও, ফেরত দাও। আর দিয়ে দিলাম। এবার আবার একটা চলে এসেছে কাল। ওড়িশা সরকারকে বলো, উদ্ধার করে নিয়ে যেতে। তোমাদের জায়গা না থাকলে, আমাদের টাইগার রিসার্ভ সেন্টার আছে। রেসকিউ সেন্টার আছে। আমাদের বড় বনাঞ্চল আছে। আমরা রেখে দিচ্ছি। তোমরা বাঘটাকে নিয়ে গিয়ে জলের মধ্য়ে ছেড়ে দিলে। জল পেরোতে কতক্ষণ? আবার একটা চলে এসেছে। এটা কী হচ্ছে? আমি ওড়িশা সরকারকে দোষারোপ না করে অনুরোধ করব, আপনাদের বনদফতরের টিম পাঠান এবং আপনাদের বাঘটাকে উদ্ধার করে নিয়ে যান।'
আরও পড়ুন, সরকারি চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিস নিয়ে এবার কড়া নির্দেশিকা ! যা বলল স্বাস্থ্য দফতর...
বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল বলেন,'এরা তো সব কাগুজে বাঘ। আপনার বাঘরা তো সব বীরভূম, বিভিন্ন জায়গায় বসে আছে। আপনার কাগুজে বাঘ নিয়ে চিন্তা করার কোনও জায়গা নেই।'মাস খানেক আগে, ওড়িশার সিমলিপাল জাতীয় উদ্যান থেকে পালিয়ে,এ রাজ্যের বেলপাহাড়ির কটাচুয়ার জঙ্গলে চলে আসে একটি বাঘিনী। কাঁকড়াঝোড়ের ময়ূরঝর্নার জঙ্গল থেকে পুরুলিয়ার বান্দোয়ানের রাইকা, তারপর পার্শ্ববর্তী কুইলাপাল বিটে কেশরার জঙ্গল হয়ে মানবাজারের ডাঙ্গরডির জঙ্গলে টের পাওয়া যায় তার অস্তিত্ব। রেডিও কলারের মাধ্য়মে তার অবস্থান বোঝা গেলেও, বাঘিনীকে বাগে আনতে নাকানিচোবানি খেতে হয় বন দফতরের কর্মীদের । শেষমেষ বাঁকুড়ার গোঁসাইডিহির জঙ্গলে ঘুম পাড়ানি গুলিতে কাবু করা হয় বাঘটিকে। এক সপ্তাহ যেতেই আবার ছড়াল বাঘের আতঙ্ক। অন্য়দিকে, দক্ষিণ ২৪ পরগনার মইপীঠ কোস্টাল থানার কিশোরীমোহনপুরেও বাঘের আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।