Kolkata News: আমহার্স্ট স্ট্রিট থানার বাইরে সজল ঘোষ, বিক্ষোভ পরিবারের, CBI তদন্ত, সিসি ফুটেজ দেখার দাবি
Amherst Street Police: মৃত ব্যক্তির নাম অশোক সিংহ। বয়স হয়েছিল ৪২ বছর।
কলকাতা: ভর সন্ধেয় উত্তাল শহর কলকাতা। থানায় ডেকে মেরে ফেলার অভিযোগ এক ব্যক্তিকে। কাঠগড়ায় আমহার্স্ট থানার পুলিশ। এই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি তুলেছেন মৃতের পরিবারের লোকজন। থানার সিসিটিভি ফুটেজও দেখতে চাওয়া হচ্ছে (Amherst Street Police)। কিন্তু পরিবারের তরফে এখনও পর্যন্ত থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। পরিবারের লোকজন অভিযোগ দায়ের করেননি বলে দাবি পুলিশের। আবার মৃতের পরিবারের তরফে দু'রকমের দাবি উঠছে। এক পক্ষ দাবি করছেন, থানা অভিযোগ নিচ্ছে না। অন্য পক্ষের দাবি, গোটা ঘটনার ভিডিও রয়েছে তাঁদের কাছে। ফেসবুকে লাইভ স্ট্রিমও করেছেন। এর পর আর অভিযোগ দায়ের করতে হবে কেন, প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। (Kolkata News)
মৃত ব্যক্তির নাম অশোক সিংহ। বয়স হয়েছিল ৪২ বছর। পরিবার সূত্রে খবর, সম্প্রতি ২০০ টাকা দিয়ে একটি ফোন কিনেছিলেন অশোক। সেই নিয়ে থানা থেকে ফোন করা হয় তাঁকে। বলা হয়, ফোনটি চুরির ফোন। কাছেপিঠের থানায় গিয়ে ফোনটা জমা দিয়ে দিন তিনি। সেই মতো বুধবার বিকেলে পরিবারের এক মহিলা সদস্যকে নিয়ে আমহার্স্ট থানায় পৌঁছন অশোক। সন্তানসম্ভবা ওই মহিলা থানায় ঢোকেননি। এর কিছু ক্ষণ পরই থানায় পৌঁছে ওই ব্যক্তিকে মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেন তাঁর পরিবারের লোকজন। মৃতের মুখ দিয়ে রক্ত বেরোচ্ছিল বলেও অভিযোগ। পুলিশের তরফেই মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অশোককে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।
মৃতের পরিবারের অভিযোগ, পুলিশই পিটিয়ে মেরে ফেলেছেন অশোককে। যদিও এই দাবি অস্বীকার করেছে আমহার্স্ট থানার পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ওই ব্যক্তি অসুস্থ গয়ে পড়েন। কিন্তু তাদের এই দাবি মানতে নারাজ পরিবারের লোকজন। মৃতের পরিবারের এক সদস্য বলেন, "আমাদের এই প্রশাসনের উপর থেকে একদমই ভরসা উঠে গিয়েছে। মামলা কোথা থেকে ঘুরিয়ে দেবে, আমাদের বিশ্বাস নেই। আমরা সিবিআই তদন্ত চাইছে, কেন্দ্রের সাপোর্ট চাইছি। আমাদের বাংলায় যা চলছে...অবিশ্বাস থেকেই সিবিআই তদন্ত চাইছি। একটা মানুষ ১০ মিনিটের মধ্যে কী করে মারা যেতে পারেন!"
আরও পড়ুন: Kolkata News: থানায় ডেকে পিটিয়ে মেরে ফেলার অভিযোগ, কাঠগড়ায় আমহার্স্ট স্ট্রিট থানার পুলিশ
এদিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ। তাঁর বক্তব্য, "লিখিত অভিযোগও করব না। স্বাভাবিক মৃত্যু হলে, কিসের অভিযোগ! কিন্তু সিসিটিভি ফুটেজ দেখাতে হবে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখিয়ে দিক, তার আবেদন করেছি। তাতে যদি দেখা যায়, স্বাভাবিক মৃত্যু মিটে গেল। না দেখালে বুঝতে হবে ডাল মেঁ কুছ কালা হ্যায়। আমরা পুলিশের অফিসারকে জানিয়েছি। উনি আলোচনা করে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন। পুলিশের ওয়েবসাইট বা ফেসবুকে ছেড়ে দিন না! সকলেই দেখে নেবে। একটা হাট্টাকাট্টা লোক থানায় এল আর মারা গেল! বাড়ির লোক বলছেন রক্ত ছিল, আমরা দেখেছি মেঝেয় জল পড়ে রয়েছে। জ্ঞান ফেরানোর জন্য জল ছিটনো হয়েছিল কিনা জানি না। সিসিটিভি ফুটেজ দেখানো হোক।"
যদিও পুলিশের উচ্চতর আধিকারিকরা জানিয়েছেন, বিকেল ৫টা নাগাদ কলকাতা পুলিশের নর্থ ডিভিশন, যারা মোবাইল ফোন চুরির তদন্ত করেন, তাদের তরফে অশোককে ফোন করা হয়। অশোক কোনও ফোন কিনেছেন কিনা জানতে চাওয়া হয়। তাতে অশোক জানান, ২০০ টাকা দিয়ে একটি ফোন কিনেছেন তিনি। কাছের থানায় ওই ফোন জমা দিতে বলা হয় তাঁকে। এর পর ৫টা বেজে ৪৩ মিনিটে আমহার্স্ট থানার বাইরে এসে পৌঁছন তিনি। ৬টা বেজে ২ মিনিটে এক ব্যক্তিকে ফোন করেন। এর পর ৬টা বেজে ৮ মিনিটে ডিউটি অফিসারের ঘরের মধ্যে প্রবেশ করেন অশোক। ডিউটি অফিসারের ঘরের মধ্যে কোনও সিসিটিভি ছিল না। এর পর শায়িত অবস্থায় ডিউটি অফিসারের ঘর থেকে বের করে আনা হয় অশোককে।
ইতিমধ্যেই পুলিশের তরফে মেডিক্যাল বোর্ড গঠনের জন্য জানানো হয়েছে, যাতে বোর্ডের নজরদারিতে বৃহস্পতিবার ময়নাতদন্ত হয়। এর পাশাপাশি, প্রাথমিক তদন্ত এবং সিসিটিভি ফুটেজ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কিন্তু তাতেও পরিস্থিতি থিতিয়ে আসার কোনও লক্ষণ নেই। তার যত বাড়ে আমহার্স্ট স্ট্রিট থানা ঘিরে ধরেন মৃতের পরিবার। থানার ফটক ঠেলে ঢোকার চেষ্টা করেন সকলে।