Sukanata On Sushanta : TMC কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষকে BJP-তে আহ্বান সুকান্ত মজুমদারের, 'ওখানে থাকলে..'
Sukanata On Sushanta On Kasba Incident: কসবাকাণ্ডে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জল্পনা উস্কে দিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য TMC কাউন্সিলর সুশান্তের, এহেন আবহে তাঁকে BJP-তে আহ্বান জানিয়ে কী বার্তা সুকান্ত মজুমদারের ?
হিন্দোল দে, সুদীপ্ত আচার্য এবং শিবাশিস মৌলিক, কলকাতা: এলাকায় যে দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য বেড়ে যাচ্ছে, তার পিছনে কারও কারও সমর্থন রয়েছে। দল বললেও বাড়ি বিক্রি করে অন্য জায়গায় চলে যেতে পারব না। গতকালের হামলার পিছনে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জল্পনা উস্কে দিয়ে এমনই মন্তব্য করলেন তৃণমূল কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষ। যদিও কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আছে বলে মানতে চাননি ফিরহাদ হাকিম, দেবাশিস কুমাররা। ঠিক এমনই এক আবহে সুশান্ত ঘোষকে বিজেপিতে আহ্বান জানালেন সুকান্ত মজুমদার।
মূলত এদিন তৃণমূল কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষ বলেন, 'আমার মনে হয় যে প্রশাসনকে আরও একটু সজাগ হওয়া দরকার আছে। আরেকটু সক্রিয় হতে হবে,যাতে দুষ্কৃতীরা, যারা মাথা তোলবার চেষ্টা করছে, তারা না উঠতে পারে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে থেকে আমি যে রাজনীতিটা শিখেছি, সেই রাজনীতিটা মনে হচ্ছে কোথাও যেনও, সেই রাজনীতিটা একটু বিঘ্নিত হচ্ছে। কারণ মানুষ আমাদের থেকে সরে যাচ্ছে। কেন সরে যাচ্ছে, তার কারণ অনুসন্ধান করতে হবে। আর দ্বিতীয় কথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যে লক্ষ্য, যতক্ষণ জনগণ আছে, ততক্ষণ দল আছে, ততক্ষণ আমরা আছি। সেটা মনে হয় কোথাও একটা ডিফার করছে ওই সমস্ত অঞ্চলে। আমার মনে হয়, এটা দলের আরেকটু গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত। দলের যারা তথাকথিত নেতৃত্ব আছে দক্ষিণ কলকাতার, তাঁদেরকেও একটু গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত।'
তিনি আরও বলেন, এই মুহূর্তে এদের ভয়ে আমি যদি ছেড়ে দিই, তাহলে অন্য বার্তা যাবে। আমার ওখানে বাড়ি। দল বলুক না বলুক, আমি তো ওখানে বাড়ি বিক্রি করে অন্য জায়গায় চলে যাব না। আমাদের দলের জেলা সভাপতি দেবাশিস কুমার, ওই ওয়ার্জে মাথা গলাতে বারণ করে দিয়েছিলেন। আমি সেখানে মাথা গলাই না, রাজনীতিক দিক থেকে। ওখানে একাধিক সংগঠনের সঙ্গে আমি যুক্ত। ওখানে মানুষের সঙ্গে আমার ব্যাক্তিগত সম্পর্ক আছে। কাজেই দেবাশিষ কুমার বলুক না বলুক, আমাকে ওখানকার মানুষের সঙ্গে থাকতে হবে।মানুষের ভালমন্দ নিয়ে চিন্তাভাবনা করতে হবে।'
অপরদিকে, দক্ষিণ কলকাতার তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি দেবাশিস কুমার বলেন, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের আদর্শ মেনেই আমরা রাজনীতি করি... বিচ্যুত হওয়ার জায়গা নেই।' অথচ সেখানেই নিজের বাড়ির সামনে, দুষ্কৃতীর হামলার মুখে পড়তে হল, ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষকে। তাহলে কি গোটা ঘটনার নেপথ্যে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রয়েছে? কাউন্সিলরকে খুনের চেষ্টার পরিকল্পনার পিছনে দলেরই একাংশের হাত রয়েছে? শুক্রবারের ঘটনার পর থেকে যখন এই প্রশ্নটা মাথাচাড়া দিচ্ছে, তখন শনিবার একের পর এক ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করলেন সুশান্ত ঘোষ নিজেই।
কলকাতা পুরসভার ১০৭ নম্বর ওয়ার্ডের ২ বারের তৃণমূল কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষ। প্রাক্তন মেয়র পারিষদ। বর্তমানে ১২ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান তিনি। ২০২১-এর পুরভোটে ১০৭ নম্বর ওয়ার্ড মহিলা সংরক্ষিত হওয়ায়, সুশান্ত ঘোষকে পাশের ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডে টিকিট দেয় তৃণমূল। ১০৭-এ তৃণমূলের হয়ে জয়ী হন লিপিকা মান্না। তারপর থেকে কসবা ও পাটুলি এলাকায় বারবার প্রকাশ্যে এসেছে তৃণমূলের দ্বন্দ্ব!
আরও পড়ুন, 'মানুষ আমাদের থেকে সরে যাচ্ছে..' কসবাকাণ্ডের পর তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য TMC কাউন্সিলর সুশান্তের !
গত ৯ জুন, দুই কাউন্সিলর অনুগামীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ বাঁধে। মারপিটের পাশাপাশি ওঠে বোমাবাজি। এমনকী গুলি চলার অভিযোগও। সেই সময়, একে অন্যের বিরুদ্ধে আঙুলও তুলেছিলেন দুই তৃণমূল কাউন্সিলর। আর এবার নিজের বাড়ির সামনেই হামলার মুখে পড়লেন এলাকার প্রাক্তন কাউন্সিলর। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, 'ওখানে থাকলে গুলি খেতে হবে, আমি বলব আমাদের এখানে চলে আসুন।' এদিন বাড়িতে গিয়ে সুশান্ত ঘোষের সঙ্গে দেখা করে আসেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম ও ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।