Maha Kumbh Stampede: 'একের পর এক লাশ তুলছে,পাশে ফেলছে, কম্বল দিয়ে ঢাকছে' ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা শোনালেন কুম্ভ ফেরত বাঙালি
Maha Kumbh Stampede Update: ভয়াবহ অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরছেন উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটার কয়েকজন পুণ্যার্থী।

সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা: চোখ বুজলেই ভেসে উঠছে সেই ভয়াবহ ছবি। মৃত্যু-কান্না-হাহাকার-প্রিয়জনের দেহ হাতে পেতে মর্গের সামনে দীর্ঘ প্রতীক্ষা। সেখান থেকে কোনও মতে প্রাণ হাতে নিয়ে ফিরেছেন উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটা ও পলতার কয়েকজন যুবক। শুনিয়েছেন তাঁদের ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা।
অভিজ্ঞতা শোনালেন কুম্ভ ফেরত বাঙালি: অমৃতকুম্ভের সন্ধানে গিয়ে কেউ ফিরেছেন খালি হাতে, কেউ ফিরেছেন কোনও মতে প্রাণ নিয়ে। তেমনই ভয়াবহ অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরছেন উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটার কয়েকজন পুণ্যার্থী। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় (৩২) এবং নিখিলেশ চৌধুরী (৩৫)। নিখিলেশ চৌধুরী জানান, "আমরা যে ঘাটে স্নান করেছি, তার পাশে পুলিশ একের পর এক লাশ তুলছে, পাশে ফেলছে, কম্বল দিয়ে ঢাকছে। পাশে কতজন পুলিশ গার্ডে ছিল তারা শুধু ওখানে আমাদের ক্যামেরা করতে দিচ্ছে না। একের পর এক অ্যাম্বুল্যাস আসছে, সমানতালে টেনে নিয়ে চলে যাচ্ছে। যত কমই হোক ১০০-র ওপরে লোক ওখানে মারা গেছে।'' মহাকুম্ভ থেকে ফেরা আরেক পুণ্যার্থী সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, "ছোট বাচ্চা থেকে শুরু করে মহিলা এবং বয়স্ক লোক এবং অনেক প্রতিবন্ধী লোক যারা ওখানে অমৃত স্নানের আশায় আসে, হয়তো তারাও আর বেঁচে ফিরতে পারেনি। নিজের চোখে অনেক লাশ আমরা দেখেছি।''
পুণ্যার্থীদের দাবি, বুধবার রাত একটা থেকেই স্নানের জন্য তাড়া দিতে থাকে পুলিশ। এক পুণ্যার্থী বলেন, "রাত ১টার সময় আমরা সবাই আরাম করছিলাম। ওরা (পুলিশ) বলে ওঠো ওঠো, খালি কর, স্নান করতে যাও। বার বার পুলিশ আমাদের তাড়া দিচ্ছিল। বলে বলে আমাদের নিয়ে আসে।'' সূত্রের খবর, এরপরই রাত ২টো নাগাদ ত্রিবেণী সঙ্গমের কাছে ভিড়ের চাপে ব্যারিকেড ভেঙে যায়। মাটিতে পড়ে যান অনেকে। দৌড়োদৌড়ি শুরু হয়। তাঁদের মাড়িয়ে চলে যান হাজারা হাজার মানুষ।
কিন্তু যে মেলার আয়োজনে হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ, দীর্ঘদিনের প্রস্তুতি সেখানে এমন ঘটনা ঘটল কী করে? অতিরিক্ত ভিড়ের চাপ? ব্যারিকেড ভেঙে যাওয়াতেই বিপত্তি? নাকি অপর্যাপ্ত ব্যবস্থাপনার ফল? গাইঘাটার বাসিন্দা সায়ন সরকার মহাকুম্ভ থেকে ফিরেছেন। তিনি জানান, "এটার মূল কারণ ভিআইপি পাসের জন্য। ভিআইপি-রা আসল, তারপর শুরু হয়ে গেল পুলিশের ধ্বস্তাধস্তি। কাইকে বসতে দেবে না, কাউকে দাঁড়াতে দেবে না, ভিআইপি-রা স্নান করবে। আর সাধারণ মানুষ, মানুষ না তাঁদের কাছে।''
উত্তর ২৪ পরগনার পলতা থেকেও মহাকুম্ভে গিয়েছিলেন কয়েকজন বন্ধু। ফিরে এসেছেন সবাই। দায়ী করেছেন আয়োজনের অব্যবস্থাকে। মহাকুম্ভ থেকে ফেরা পুণ্যার্থী আরাধনা দত্ত বিশ্বাস বলেন, "কিলোমিটারের পর কিলোমিটার হাঁটার মানসিক প্রস্তুতি নিয়েই আমরা এসেছিলাম। কিন্তু এটা ভেবে আসিনি, চেঞ্জিং রুম পাব না, খাবার পাব না, থাকতে পাব না, রাতে শুতে পাব না।''
ট্রেন্ডিং
সেরা শিরোনাম
