Malaria Updates: একবছরে আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণ, ম্যালেরিয়ায় দেশের মধ্যে দ্বিতীয় বাংলা, জানাল স্বাস্থ্যমন্ত্রক
Malaria Updates: ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যার নিরিখে দেশের মধ্যে বাংলা রয়েছে দ্বিতীয় স্থানে। প্রথম স্থানে রয়েছে ছত্তীসগঢ়।
সন্দীপ সরকার, কলকাতা: করোনার প্রকোপের মধ্যে এ বার চোখরাঙানি ম্যালেরিয়ার। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের (Union Health Ministry) ২০২১ সালের তথ্য অনুযায়ী, ম্যালেরিয়ায় (Malaria) আক্রান্তের সংখ্যার নিরিখে রাজ্যগুলির মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বাংলা। আর প্রাণঘাতী প্লাজমোডিয়াম ফ্যালসিফেরাম ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যায় বাংলা রয়েছে চতুর্থ স্থানে। ২০২১ সালে দেশের ম্যালেরিয়া পরিস্থিতি নিয়ে তৈরি হয়েছে এই রিপোর্ট (Maleria in West Bengal)।
সূত্রের খবর, রাজ্যগুলির পাঠানো তথ্যের ওপর ভিত্তি করে ন্যাশনাল ভেক্টুর বর্ন ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রামের তৈরি করা পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলায় ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন ২৮ হাজার ৮৪১ জন। ২০২০-তে রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৪ হাজার ৪৯। অর্থাৎ একবছরে দ্বিগুণ হয়েছে আক্রান্তের সংখ্যা।
ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যার নিরিখে দেশের মধ্যে বাংলা রয়েছে দ্বিতীয় স্থানে। প্রথম স্থানে রয়েছে ছত্তীসগঢ়। তবে আতঙ্কের বিষয়, প্রাণঘাতী প্লাজমোডিয়াম ফ্যালসিফেরাম ম্যালেরিয়া ২০২০-র তুলনায় ২০২১-এ বেড়েছে চারগুণ। পরিসংখ্যান বলছে, ২০২০-তে রাজ্যে প্লাজমোডিয়াম ফ্যালসিফেরাম ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন ২ হাজার ৩৯৯ জন। ২০২১-এ তা বেড়ে হয় ৯ হাজার ৬২৪। এ ক্ষেত্রে দেশের মধ্যে চতুর্থ স্থানে রয়েছে বাংলা। প্রথম স্থানে ছত্তীসগঢ়। দ্বিতীয় ওড়িশা। তৃতীয় মহারাষ্ট্র।
আরও পড়ুন: Tiljala Shoot: তিলজলা গুলিকাণ্ডে ৩১ মার্চ পর্যন্ত ধৃত ৩ জনের পুলিশ হেফাজত।
ম্যালেরিয়ার এই বাড়বাড়ন্ত চিন্তায় ফেলেছে চিকিত্সকদের। চিকিৎসক জয়দেব রায় বলেন, “কিছু দিন আগে আমরা ভেবেছিলাম দেশ থেকে ম্যালেরিয়া নির্মূল হবে। সেই জায়গায় এই রিপোর্ট এসেছে, যেটা উদ্বেগের। আমাদের নজর এ বার ম্যালেরিয়ার দিকে। পেরোতেই হবে। যেটা দেখা যাচ্ছে, অনেক পিএফ কেস পাওয়া যাচ্ছে। পিএফ প্রাণঘাতী হয়। রেনাল ফেলিওর, ব্লিডিং, অ্যানিমিয়া, অনেককিছুই হয়। তাই আর্লি ডেটেকশন ও আর্লি ট্রিটমেন্ট জরুরি। ম্যালেরিয়ার চিকিত্সা পরিকাঠামো আমরা অন্য জায়গায় ব্যবহার করেছি কি না, দেখতে হবে।”
চিকিৎসক শিবব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “২০২০ এবং ২১-এ আমরা অনেক ঝড় বয়ে যেতে দেখেছি। জল জমেছিল, বেশি বৃষ্টিপাতও হয়েছে। অনেকগুলি নিম্নচাপ গিয়েছে। বেশি জল জমা মানেই মশার বংশবৃদ্ধি। শহর ও শহরতলিতে ম্যালেরিয়া আধিক্য দেখা গিয়েছে। ২০২০-২১- কোভিড ঝড় বয়ে গিয়েছে। সমস্ত স্বাস্ত্য পরিকাঠামো কোভিডে মনসংযোগ করেছিল। এবার ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গির দিকে নজর দিতে হবে।”
চিকিত্সকদের একাংশের মতে, প্রাণঘাতী প্লাজমোডিয়াম ফ্যালসিফেরাম ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা যে ভাবে বাড়ছে, তা উদ্বেগের। চিকিৎসক অনির্বাণ দলুই বলেন, “বাংলা ম্যালেরিয়া এনডেমিক প্রবণ। ম্যালেরিয়া ছিল, আছে। থাকবে কি না ভবিষ্যৎ বলবে। বিভিন্ন পুরসভা তাদের সব কর্মীদেপ কোভিডে লাগিয়েছিল। ম্যালেরিয়ার ক্ষেত্রে ফাঁক থাকতেও পারে। এটা চিন্তুার কারণ। তবে সব থেকে বেশি চিন্তার বিষয় হল, ফ্যালসিফেরাম বাড়ছে। এটি মাল্টি অর্গান ফেলিওর করে দেয়। মৃত্যুহার বেশি। জ্বর এলেই পরীক্ষা করান।”
তবে আক্রান্তের সংখ্যা অনেকটা বাড়লেও ২০২১ সালে রাজ্যে ম্যালেরিয়ায় মৃত্যু হয়েছে ২ জনের। সারা দেশে ওই বছরে ৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে।