Mohammad Manik: 'অনেক শিশু ভেসে যাচ্ছিল, আমার বাচ্চাটার মুখটা মনে পড়ে, আর কিছু না ভেবে ঝাঁপ দিয়েছি'
Malbazar Flash Flood: পুরো নাম মহম্মদ মানিক। মালবাজারের এই যুবকের জন্যই সেই দুর্যোগের রাতে প্রাণে বেঁচেছেন বেশ কয়েকজন।
রাজা চট্টোপাধ্যায়, মালবাজার, জলপাইগুড়ি: আঁধার নেমেছে। তাতে যেন চেনা যাচ্ছে না আপাতশান্ত মাল নদীর ভয়ঙ্কর রূপ। হড়পা বানের উপচে পড়েছে নদী। সেই জলের ধাক্কায় ভেসে যাচ্ছেন কতজন। দশমীর রাতে জলপাইগুড়িতে মালবাজারের ওই ভয়ঙ্কর ঘটনার ভিডিও ইতিমধ্যেই ভাইরাল। হড়পা বান, প্রশাসনিক ব্যবস্থা, ক্ষতিপূরণের অঙ্ক- সব নিয়েই এখন তুমুল রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। তারই মধ্যে আশা জাগিয়েছেন মানিক। পুরো নাম মহম্মদ মানিক (Mohammad Manik)। মালবাজারের (Malbazar) এই যুবকের জন্যই সেই দুর্যোগের রাতে প্রাণে বেঁচেছেন বেশ কয়েকজন।
মালবাজার ব্লকের পশ্চিম তেসিমলা গ্রামে বাড়ি মহম্মদ মানিকের। পেশায় গ্রিল, ওয়েল্ডিংয়ের কারিগর। বাড়িতে রয়েছেন বাবা, মা, ছোট ভাই ও বোন। বিয়ে করেছেন মানিক। এক শিশু সন্তানও রয়েছেন। একেবারে সাধারণ নিম্ন মধ্যবিত্ত এই পরিবারের রোজগারের মূল দায়িত্ব মানিকেরই কাঁধে। এত পিছুটান, এত দায়িত্ব। কিন্তু সেই বিপদের সামনে দাঁড়িয়ে কোনওরকম পিছুটানের কথা ভাবেননি তিনি।
'বাচ্চার মুখটা মনে পড়েছিল'
অত রাতে ওই রকম ভয়ঙ্কর নদীতে ঝাঁপ দেওয়ার সাহস পেলেন কী করে? মানিক বলেন, 'ওই বানে অনেক শিশু ভেসে যাচ্ছিল। সেদিকে তাকিয়ে আমার বাচ্চাটার কথা মনে পড়ে গিয়েছিল। আর কোনওকিছু না ভেবে ঝাঁপ দিয়েছি।' প্রতিবছরই বিসর্জন দেখতে ওই জায়গায় যান মানিক। অত সমারোহ, উৎসব দেখতে ভাল লাগে তাঁর। এবারও গিয়েছিলেন। কিন্তু, চোখের নিমেষে চেনা আনন্দের ছবি আতঙ্কের ছবিতে পরিণত হয়েছিল। প্রাণহানি রুখতেই ওরকম নদীতে ঝাঁপ দিয়েছিলেন তিনি।
রয়েছে আক্ষেপ:
প্রায় ১০ জনকে বাঁচাতে পেরেছিলেন মহম্মদ মানিক। কিন্তু তারপরে পায়ে চোট পান তিনি। সেই চোট নিয়ে ওরকম বানের মধ্যে আর কাউকে বাঁচানো তাঁর পক্ষে সম্ভব হয়নি। সেই নিয়ে আক্ষেপ রয়েছে তাঁর। ছেলের জন্য গর্বিত বাবা আব্দুল খালেকও। তবে সেই আক্ষেপ রয়েছে তাঁর মনেও।
পড়শিরা জানাচ্ছেন, মানিককে এলাকার সবাই পরোপকারী হিসেবেই চেনে। যেকোনও সময় কারও বিপদ হলে ঝাঁপিয়ে পড়েন তিনি। তাই মানিকের এই কাজে গর্বিত হলেও আশ্চর্য হচ্ছেন না গ্রামবাসীরা।
হড়পা বানে (Flash Flood) স্বজনহারার এদিন অভিযোগ দায়ের হয়েছে মালবাজার থানায় (Malbazar Poilce Station)। মালবাজার পুরসভা (Malbazar Municipality) ও সেচ দফতরের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগে মালবাজার থানায় অভিযোগ দায়ের স্বজনহারা দিলীপ পণ্ডিতের।
আরও পড়ুন: '১৮ কোটি টাকার ফিক্সড ডিপোজিট', গরু পাচার মামলায় অনুব্রতর বিরুদ্ধে CBI চার্জশিট