Mamata Banerjee: বাংলাকে না বলে জলচুক্তি কেন? তীব্র ক্ষোভ মমতার, মোদিকে পাঠালেন চিঠি
Mamata Letter to PM Modi: বাংলাটাকে শেষ করে দেওয়ার জন্য ভাতে মারার চক্রান্ত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আশাবুল হোসেন ও দীপক ঘোষ, কলকাতা ও নয়া দিল্লি: মেয়াদ ফুরনোর আগেই গঙ্গা জলচুক্তি পুনর্নবীকরণ নিয়ে কথা বলার সিদ্ধান্ত নিয়ে ভারত-বাংলাদেশ। তারপরেই সেই বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে তৃণমূল। বাংলার সঙ্গে আলোচনা না করেই কেন জলচুক্তি নিয়ে আলোচনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল। সোমবার নবান্নের সভায় পুরসভার পরিষেবা নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশের সময়ে মমতার মুখে উঠে এল তিস্তা জলচুক্তি প্রসঙ্গ।
গঙ্গার জলবণ্টন (Ganga Water Treaty) নিয়ে ১৯৯৬ সালে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে চুক্তি হয়েছিল। সেই চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২০২৬ সালে। তার দেড় বছর আগেই, 'গঙ্গা জলচুক্তি ১৯৯৬' পুনর্নবীকরণের আলোচনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকের পর, যৌথ সাংবাদিক বৈঠক করে শনিবার সেই কথা নিজেই জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মোদি বলেছিলেন, 'আমরা ১৯৯৬ সালের গঙ্গা জলচুক্তির পুনর্নবীকরণের জন্য প্রযুক্তিগত স্তরে আলোচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বাংলাদেশে তিস্তা নদীর সংরক্ষণ ও পরিচালন পদ্ধতির উন্নয়নের জন্য শীঘ্রই প্রযুক্তিবিদদের একটি দল বাংলাদেশে যাবে।' আর এই নিয়েই সোমবার তীব্র আপত্তি জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। বাংলাকে না জানিয়েই এইসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে বলে দাবি করেছেন তিনি। একতরফা সিদ্ধান্ত হলে আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee)। তিনি বলেন, 'আগে এগুলো নিয়ে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হয়েছে। বাংলাকে টোটাল বাদ দিয়ে। জলের আরেক নাম জীবন। ওরা জানে না উত্তরবঙ্গের একটা মানুষ আগামী দিন পানীয় জল পাবে না। জল নেই তিস্তায়। গায়ের জোরে, ভাবছে নর্থ বেঙ্গল থেকে জিতেছি বলে নর্থ বেঙ্গলের মানুষকে অবহেলা করব। আমি একটা স্ট্রং চিঠি আজকে প্রধানমন্ত্রীকে দিচ্ছি। বাংলাটাকে শেষ করে দেওয়ার জন্য ভাতে মারার চক্রান্ত। আবার বলছে তিস্তার জল দেব, যেন মনে হচ্ছে মহারাজ সব। মহা অধিপতি হয়ে গেছে সব। দরকার হলে যদি না শোনে, একতরফা কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তাহলে কিন্তু বাংলাজুড়ে আন্দোলন চলবে, দেশজুড়ে চলবে।'
কেন্দ্রীয় সরকার সূত্রে দাবি, ১৯৯৬ সালের গঙ্গা জলবণ্টন চুক্তি নিয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী যে দাবি করছেন তা সম্পূর্ণ ভুল। ১৯৯৬ সালের ভারত-বাংলাদেশ চুক্তি নিয়ে পর্যলোচনার জন্য, গত বছর ২৪ শে জুলাই, ভারত সরকারের তরফে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছে মনোনীত প্রতিনিধি চাওয়া হয়েছিল। ২৫ অগাস্ট, সেচ ও জলপথ দফতরের ইঞ্জিনিয়ারকে এর জন্য নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে। আর চলতি বছরের ৫ এপ্রিল, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সেচ ও জলপথ দফতরের যুগ্ম সচিব জানিয়ে দেন আগামী ৩০ বছর ফরাক্কার নিম্ন অববাহিকা থেকে কত পরিমাণ জল রাজ্যের লাগবে।
১৯৯৬ সালের চুক্তি অনুযায়ী, জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে প্রতিদিন ৪০ হাজার কিউসেক করে জল পায় ভারত। ফরাক্কা ব্যারাজ থেকে ফিডার ক্যানাল হয়ে কলকাতা বন্দরে যায় সেই জল। অবশিষ্ট জল মূল ব্যারেজ হয়ে যায় বাংলাদেশে। চুক্তি অনুযায়ী, মার্চ মাসে ২০ দিন বাংলাদেশে ৩৫ হাজার কিউসেক করে জল যায়। পরবর্তী ১০ দিন ভারত পায় একই পরিমাণ জল। এপ্রিলে উল্টো। ওই মাসে ভারত ২০ দিন পায় ৩৫ হাজার কিউসেক জল। বাংলাদেশ শেষ ১০ দিন পাবে একই পরিমাণ জল। বাকি সময় নদীতে যে জলপ্রবাহ থাকবে, তা সমান ভাবে পাবে দু’দেশ।,
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।
আরও পড়ুন: প্রথম দিনেই ৬৮ হাজার আবেদন! কেমন কাজ করল কলেজে ভর্তির পোর্টাল?