Nandigram Molestation : 'লজ্জায় মেয়ে কিছু বলতে পারেনি' ডুকরে উঠলেন নন্দীগ্রামের ১৩ বছরের নির্যাতিতা মেয়ের বাবা
Nandigram News : বেধড়ক মারধরের পর বিবস্ত্র করে তাঁকে টানতে টানতে প্রায় ৩০০ মিটার নিয়ে যাওয়া হয়। নির্যাতিতাকে উদ্ধার করে নন্দীগ্রাম থানার পুলিশ।
বিটন চক্রবর্তী, পূর্ব মেদিনীপুর: ফের নারী নির্যাতন। সম্মান হরণ। শৈশবের শ্লীলতাহানি। এবার নারীর সম্মানহানির অভিযোগ উঠল নন্দীগ্রামে। অভিযোগ করেছেন নন্দীগ্রামের তৃণমূল কর্মী। অভিযোগ, তাঁর স্ত্রী ও নাবালিকা মেয়ের শ্লীলতাহানি করেছে স্থানীয় এক বিজেপি নেতা। রবিবার নন্দীগ্রামে গিয়ে নির্যাতিতার সঙ্গে কথা বললেন তৃণমূল প্রতিনিধিরা। নন্দীগ্রাম থানাতেও যান তাঁরা। এখন নির্যাতিতাকে এসএসকেএমে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নির্যাতিতার স্বামী রবিবার ডুকরে উঠে বললেন, শুধু তাঁর স্ত্রী নন, নিগৃহীতা তাঁর ১৩ বছরের মেয়েও। তিনি বলেন, স্ত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনেছিলেন আগেই। তখন বোঝেননি অত্যাচার করা হয়েছে তাঁর মেয়েকেও। সেও লজ্জার খাতিরে বলতে পারেনি। তারপর জানতে পারেন শ্যালিকার থেকে। প্রথমে পায়ে আঘাতের দাগ দেখে ভেবেছিলেন অভিযুক্ত তার পায়ে মেরেছে, কিন্তু এত ভয়াবহ কাণ্ড যে মেয়ের সঙ্গে ঘটে গেছে, ভাবেননি বাবা। বললেন, বাবা হিসেবে আর আমার বাঁচতে ইচ্ছা করছে না।
জমি বিবাদের জেরে পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামে তৃণমূল কর্মীর স্ত্রীকে বেধড়ক মারধর ও বিবস্ত্র করে অত্য়াচারের অভিযোগের পর এবার তাঁর নাবালিকা মেয়েরও শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠল বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে। তৃণমূল বিধায়ক শিউলি সাহা বলেন, ' অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে মেয়ে তার গায়ে হাত দিয়েছে' । বিধায়িকার দাবি , খুব খারাপ ভাবে নাবালিকাকে স্পর্শ ও আঘাত করা হয়েছে।
রবিবার দলীয় কর্মীর নির্যাতিতা স্ত্রীকে দেখতে নন্দীগ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে আসেন কুণাল ঘোষ, বীরবাহা হাঁসদা, শিউলি সাহা, দোলা সেন, সায়নী ঘোষ সহ তৃণমূলের ৮ জনের প্রতিনিধি দল। নির্যাতিতা ও তাঁর স্বামীর সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। এরপর নন্দীগ্রাম থানায় যান তৃণমূলের প্রতিনিধিরা। নির্যাতিতাকে নিজেদের কনভয়ে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে আসেন কুণাল ঘোষরা।
আর জি কর মেডিক্য়াল কলেজে চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের প্রতিবাদে তোলপাড়ের আবহেই গত ১৫ অগাস্ট নন্দীগ্রামে তৃণমূল কর্মীর স্ত্রীর ওপর নৃশংস নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ, রাতে বাড়িতে চড়াও হয় কয়েকজন। বেধড়ক মারধরের পর বিবস্ত্র করে তাঁকে টানতে টানতে প্রায় ৩০০ মিটার নিয়ে যাওয়া হয়। নির্যাতিতাকে উদ্ধার করে নন্দীগ্রাম থানার পুলিশ। নন্দীগ্রাম থানায় অভিযোগ দায়ের করেন নির্যাতিতা। অভিযুক্ত বিজেপি সমর্থক বলে পরিচিত বাপ্পা দাসকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর থেকেই মামলা তুলে নিতে চাপ দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ।
নির্যাতিতার স্বামীর অভিযোগ, তাঁর উপর অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। একই অভিযোগ করেছেন কুণাল ঘোষও। তৃণমূলের প্রাক্তন রাজ্য় সাধারণ সম্পাদকের দাবি, বিজেপির প্রভাবশালী মহল থেকে ওঁর উপর চাপ আসছে যে এটাকে মিটিয়ে ফেল, মিটিয়ে ফেল, এগিও না।
অন্যদিকে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও বলেন, ঘটনা ন্যক্কারজনক, নিন্দনীয়। তবে এই ঘটনা পারিবারিক বিবাদ থেকে. এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। সেই সঙ্গে তিনি প্রশ্ন তোলেন, ' যারা মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের কোম্পানির কর্মচারীরা এসেছিলেন, তাদেরকে আমি বলব রথিবালা আড়ির বাড়িটা গেলেন না কেন'
ঘটনায় আরও ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতরা বিজেপি সমর্থক বলে পরিচিত।
আরও পড়ুন, 'শুধু জিজ্ঞাসাবাদ কেন? কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না সন্দীপ ঘোষকে?' প্রশ্ন তুলল নির্যাতিতার পরিবার