North 24 Parganas: শিক্ষকের চাকরি দিকে ৫৩ লক্ষ! ভিডিও ঘিরে শোরগোল
Job Scam:প্রাইমারি ও আপার প্রাইমারিতে চাকরি দেওয়ার নামে, সাড়ে ৫৩ লক্ষ টাকা নিয়েছেন তৃণমূল নেতা ও তাঁর দুই সঙ্গী। চিঠি সিবিআইকে।
ব্রতদীপ ভট্টাচার্য, উত্তর ২৪ পরগনা: ফের তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে চাকরি দেওয়ার নামে টাকা নেওয়ার অভিযোগ। অল্প-স্বল্প টাকা নয়। একেবারে ৫৩ লক্ষ টাকা। নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে তোলপাড় হচ্ছে রাজ্য। তার মধ্যে উত্তর ২৪ পরগনায় এমনই অভিযোগ ওঠায় ফের শুরু হয়েছে তরজা।
কী অভিযোগ:
প্রাইমারি ও আপার প্রাইমারিতে চাকরি দেওয়ার নামে, সাড়ে ৫৩ লক্ষ টাকা নিয়েছেন তৃণমূল নেতা ও তাঁর দুই সঙ্গী। স্বরূপনগরের পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামীর বিরুদ্ধে CBI-কে চিঠি লিখলেন চাকরিপ্রার্থীর স্বামী। অভিযুক্তের টাকার নেওয়ার ভিডিও প্রকাশ্যে এনেছেন অভিযোগকারী। যদিও কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি তৃণমূল নেতার। দলগতভাবে তদন্তের আশ্বাস দিয়েছে নেতৃত্ব।
ভিডিও নিয়ে তরজা:
যে ভিডিও প্রকাশ্য়ে এসেছে তাতে দেখা যাচ্ছে বান্ডিল বান্ডিল টাকা গুনছেন এক ব্যক্তি। গুনছেন আবার প্লাস্টিকের ব্যাগে পুরছেন। অভিযোগকারীর দেওয়া ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি এবিপি আনন্দ। শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে রাজ্যে যখন তোলপাড় পড়েছে, তখন তাতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে চাঞ্চল্যকর এই ভিডিও। ভিডিওতে যে টুকরো টুকরো কথা শোনা যাচ্ছে তাতেই বোঝা যাচ্ছে টাকার লেনদেন নিয়ে কথা হচ্ছে। কোন স্কুলে কবের মধ্যে চাকরি হবে সেই সংক্রান্ত কথাও হচ্ছে। অভিযোগকারীর দাবি, যাঁর সঙ্গে এই কথা হচ্ছে তিনি তৃণমূল নেতা নিখিলরঞ্জন বিশ্বাস। ভিডিওতে যাকে টাকা নিতে দেখা যাচ্ছে তিনিই তৃণমূল নেতা নিখিলরঞ্জন বিশ্বাস। তাঁর স্ত্রী বাসন্তী, তৃণমূল পরিচালিত উত্তর চব্বিশ পরগনার স্বরূপনগরের চারঘাট গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান।
সিবিআইকে চিঠি:
কিন্তু, ওই তৃণমূল নেতা ও তাঁর দুই সঙ্গীর বিরুদ্ধে স্কুলে চাকরি দেওয়ার নামে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে, CBI-কে চিঠি দিয়েছেন, স্বরূপনগরের বাসিন্দা মহম্মদ মাজাহার আলি। কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে লেখা চিঠিতে তাঁর অভিযোগ, নিখিলরঞ্জন বিশ্বাস ও তাঁর সঙ্গী পঙ্কজ দে এবং পবিত্র মণ্ডল এই তিনজন। তাঁর স্ত্রী-সহ মোট ৭ জনকে প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিকে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নামে, ধাপে ধাপে সাড়ে ৫৩ লক্ষ টাকা নিয়েছেন। অভিযোগ, টেট না দিলেও চাকরি হয়ে যাবে বলে দেওয়া হয়েছিল আশ্বাস।
অভিযোগকারী মহম্মদ মাজাহার আলি স্বরূপনগরের বাসিন্দা বলেন, 'বলা হয়েছিল ২০১৪-র টেটে যারা চাকরি পেয়েছে, তাদের ব্যাচেই চাকরি হবে। এই মর্মে বিএলএডের জাল সার্টিফিকেট দেয় এবং ২০১৪-র টেটের অ্যাডমিট কার্ডও বানিয়ে দেয়। বলেছিল - পরীক্ষা দিতে হবে না, অ্যাডমিট থাকলেই হবে। কাউন্সেলিংয়ের মেসেজও এসেছিল। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের জাল ওয়েবসাইটেও নাম দেখানো হয়েছিল। বিকাশ ভবনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, ইন্টারভিউও হয়েছিল।'
বিস্ফোরক এই অভিযোগ ওঠার পর, তৃণমূল নেতা নিখিলরঞ্জন বিশ্বাসের বাড়িতে গিয়েছিলেন এবিপি আনন্দের প্রতিনিধি। ২৬ এপ্রিল, ২৭ এপ্রিল এবং ৯ মে- তিনদিন গিয়েও অভিযুক্তের দেখা মেলেনি। কিন্তু, তিন দিন গিয়েও দেখা মেলেনি অভিযুক্তের। বাড়ির লোকজন বলছেন তিনি নেই, কিন্তু বাইক দেখিয়েই এলাকাবাসীর দাবি উনি আছেন। স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে, তাঁর স্ত্রী, পঞ্চায়েত প্রধানের খোঁজে যাওয়া হলেও তালাবন্ধ ছিল পঞ্চায়েত অফিস।
তৃণমূলের দাবি:
বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস বলেন, 'নিখিল বিশ্বাস সম্পর্কে আমরা শুনেছি। দলগত তদন্ত করছি। অপরাধ করলে থাকলে, তাঁর শাস্তি হবে, এটাই চাই। আইনের প্রতি আমাদের আস্থা আছে, আইন মোতাবেক ব্যবস্থা হবে।'
অভিযুক্ত তৃণমূল নেতার সঙ্গী পঙ্কজ দে-র একটি ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছে। যেখানে তাঁর হাতেও টাকার বান্ডিল দেখা যাচ্ছে। এই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি এবিপি আনন্দ। স্থানীয় সূত্রে দাবি, এই পঙ্কজ দে হলেন নিখিলরঞ্জনের মেয়ের শ্বশুর। তাঁর বাড়িতে গিয়েও দেখা মেলেনি কারও।
আরও পড়ুন: গরমের মরসুমে ত্বকের যত্নে ব্যবহার করুন অ্যালোভেরা, সমাধান পাবেন এইসব সমস্যা থেকে