Paschim Medinipur News: আকাশপথে নেমে আসছে ক্ষেপণাস্ত্র, বাড়ি ফিরলেও ভুলতে পারছেন না ইউক্রেনফেরত অনন্যা
Paschim Medinipur News: ত ২৬ মার্চ কিভে অনন্যা যেখানে থাকতেন, সেখানকার একটি বাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটে। ফোনে সে কথা বাড়ির লোকজনকে জানিয়েছিলেন তিনি।
অমিত জানা, পশ্চিম মেদিনীপুর: বিদেশি ডিগ্রি অর্জন করতে পাড়ি দিয়েছিলেন ইউক্রেন। কিন্তু যুদ্ধ নেমে আসায় শিকেয় ওঠে পড়াশোনা। প্রাণ হাতে নিয়ে ছুটতে হয় এদিক ওদিক। টিভির পর্দায় সেই খবর যত দেখতেন, ততই উৎকণ্ঠা বাড়ত পরিবারের। তবে শেষমেশ ঘরের মেয়ে নিরাপদেই ঘরে ফিরলেন।
পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলদা থানা গড় হরিপুরের পূঁয়া গ্রামের বাসিন্দা অনন্যা পাইক। ডাক্তারি পড়তে ২০২০ সালে ইউক্রেন পাড়ি দিয়েছিলেন। ভর্তি হন কিভ মেডিক্যাল কলেজ ইউনিভার্সিটিতে। ২০২২ সালের ১৬ মার্চ বাড়িতে আসার কথা ছিল অনন্যার। কিন্তু যুদ্ধ শুরু হলে সব পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। সেখানে ইউনিভার্সিটির যে হস্টেলে থাকতেন তিনি, তার ঠিক পিছনের একটি বাড়িতেই ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। তাতেই বাড়ি ফেরার প্রস্তুতি শুরু করেন।
গত ২৬ মার্চ কিভে অনন্যা যেখানে থাকতেন, সেখানকার একটি বাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটে। ফোনে সে কথা বাড়ির লোকজনকে জানিয়েছিলেন তিনি। তার পর থেকে দুশ্চিন্তায় ছিলেন অনন্যার মা-বাবা। খাবার পর্যন্ত মুখে তুলতে পারছিলেন না তাঁরা। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম মারফত মেয়েকে ফেরত আনার আবেদন জানাচ্ছিলেন সরকারের কাছে।
আরও পড়ুন: Ukraine Crisis: অতিকষ্টে পৌঁছেছেন রোমানিয়ায়, উদ্ধারের আবেদন কলকাতার ফারহানার।Bangla News
শনিবার সেই উৎকণ্ঠা কাটল অনন্যার মা-বাবার। কারণ এ দিন সকালেই বাড়ি এসে পৌঁছন তিনি। তাঁকে দেখতে পেয়ে বাড়ির লোকজন তো বটেই, গোটা পাড়ায় কার্যত ঢল নামে মানুষের। ফুলের মালা পরিয়ে, বরণ করে, মিষ্টিমুখ করিয়ে তাঁকে কাছে টানেন মা-বাবা।
অনন্যা জানিয়েছেন, যুদ্ধ হতে চলেছে বলে বাড়ির লোকের কাছেই প্রথমে জানতে পারেন তিনি। সেই মতো সেখানে ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কিন্তু সেখান থেকে তেমন কোনও সহযোগিতা পাননি তিনি। এমনকি নিজের ঝুঁকিতে তাঁকে বেরোতে হবে, এমনটাও জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি করেছেন অনন্যা। উপায় না দেখে, তা-ই করতে হয় তাঁকে। হস্টেল থেকে বেরিয়ে কখনও পায়ে হেঁটে, কখনও ট্রেনে চেপে ভাকজাল পৌঁছন।
খোলা আকাশের নীচে দাঁড়িয়ে আকাশ থেকে ক্ষেপণাস্ত্রও নেমে আসতে দেখেন বলে জানিয়েছেন অনন্যা। মাটি ছোঁয়ার আগেই যদি বিস্ফোরণে উড়ে যায় ক্ষেপণাস্ত্রটি, কিন্তু জীবন বাঁচানোর কারিগর অনন্যা, সেই ভয়াবহতা চাইলেও ভুলতে পারছেন না। তিনি বলেন, "ভাকজালে ট্রেন থেকে নেমে বাস ধরতে যাচ্ছিলাম যখন, উপর থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে আসতে দেখি। পুরো ঢুকতে পারেনি। তার আগেই শেল নেমে এসেছে হয়ত। হস্টেলের পিছনে যখন বিস্ফোরণ হয়, ভেবেছিলাম আর বাঁচব না।"
এই গোটা পর্বে ভারতীয় দূতাবাসের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করেছেন অনন্যা। জানিয়েছেন, ফোন পর্যন্ত ধরেনি দূতাবাস। জরুরি পরিস্থিতিতে ফোনে ৫০ ঘণ্টা কথা বলার যে প্যাক কিনেছিলেন তিনি, তারও মেয়াদ পেরিয়ে যায়। ফলে অন্য কারও কাছে সাহায্য চাওয়ার উপায়ও ছিল না।