Mamata Banerjee : জুন-শ্রীকান্ত হ্যান্ডশেক, মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে মিটল বিবাদ
TMC : সূত্রের খবর, সেখানে মুখ্যমন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতোকে বলেন, আমি যাঁদের টিকিট দিই, তাঁদের গুরুত্ব বুঝেই টিকিট দিই। তাই সবার উচিত একে অপরকে সম্মান দেওয়া। তুমি জুনের সঙ্গে বিবাদ মিটিয়ে নাও।
আশাবুল হোসেন, সৌমেন চক্রবর্তী, পশ্চিম মেদিনীপুর : লুটেরা মন্তব্য বিতর্কে জুন মালিয়ার (June Maliya) সঙ্গে বিবাদ মিটল শ্রীকান্ত মাহাতোর (Srikanta Mahata)। সূত্রের খবর, খড়গপুরে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকে তাঁরই নির্দেশে তৃণমূলের তারকা বিধায়কের সঙ্গে করমর্দন করেন ক্রেতাসুরক্ষা প্রতিমন্ত্রী। শ্রীকান্তর দাবি ঝামেলা আগেই মিটে গিয়েছিল। এনিয়ে কটাক্ষ করেছে বিজেপি।
গলল বরফ!
বিজেপির নবান্ন অভিযানের দিন জেলা সফরে পশ্চিম মেদিনীপুরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। গেরুয়া শিবিরের বিক্ষোভ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে যেদিন আগুন জ্বলল, সেদিনই শাসকদলের মন্ত্রী-বিধায়ক সংঘাতে বরফ গলার ইঙ্গিত মিলল! সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে, তাঁর নির্দেশে, মেদিনীপুরের বিধায়ক জুন মালিয়ার সঙ্গে বিবাদ মিটিয়ে নিয়েছেন ক্রেতা সুরক্ষা প্রতিমন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতো।
জুনকে তোপ শ্রীকান্তর
সম্প্রতি দলেরই সাংসদ, বিধায়কদের একাংশকে লুটেরা বলে মন্তব্য করেন তিনি। শালবনির তৃণমূল বিধায়কের ভাইরাল বক্তব্যে, শোনা গিয়েছিল মেদিনীপুরের তৃণমূল (TMC) বিধায়ক জুন মালিয়ার নাম। শালবনির তৃণমূল বিধায়ক ও ক্রেতা সুরক্ষা প্রতিমন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতো বলেছিলেন, এখানে যদি দেবাদিদেব মহাদেব, উমা সোরেন, সন্ধ্যা রায়, মুনমুন সেন, জুন মালিয়া, সায়নী, সায়ন্তিকা, মিমি, ঝিমি, নুসরত, মুসরত, উত্তরা সিংহ, নেপাল সিংহ, সন্দীপ সিংহ যারা লুটেপুটে খাচ্ছে, তারা পার্টির সম্পদ হয়। তাহলে আর পার্টি করা যাবে না।
শ্রীকান্তের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ
যে বিস্ফোরক মন্তব্যের পরই শ্রীকান্ত মাহাতোকে শোকজ করে তৃণমূল। ছাঁটা হয় তাঁর নিরাপত্তা। গত ৩১ অক্টোবর মন্ত্রিসভার বৈঠকে শ্রীকান্ত মাহাতোকে কার্যত ভর্তসনা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্ন সূত্রে দাবি, মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে বলেন, তোমার এরকম মন্তব্য করা উচিত হয়নি। তুমি জুন মালিয়ার কাছে ক্ষমা চাইবে। এমন ভাবে ক্ষমা চাইবে, যেন জুন আমাকে ফোন করে বলে।
মুখোমুখি শ্রীকান্ত-জুন
মঙ্গলবার খড়গপুরের ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে দুই মেদিনীপুরের বিধায়ক ও মন্ত্রীদের নিয়ে বৈঠক ডেকেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ওই ঘটনার পর শ্রীকান্ত মাহাতো ও জুন মালিয়া, দুজনই ওই বৈঠকে প্রথম মুখোমুখি হন। সূত্রের খবর, সেখানে মুখ্যমন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতোকে বলেন, আমি যাঁদের টিকিট দিই, তাঁদের গুরুত্ব বুঝেই টিকিট দিই। তাই সবার উচিত একে অপরকে সম্মান দেওয়া। তুমি জুনের সঙ্গে বিবাদ মিটিয়ে নাও। সূত্রের খবর, বৈঠক শেষ হতেই শ্রীকান্ত মাহাতো জুন মালিয়ার দিকে এগিয়ে যান। দু’জন একে অপরের সঙ্গে করমর্দন করেন।
মেদিনীপুরের তৃণমূল বিধায়ক জুন মালিয়া বলেছেন, 'দিদি আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। দিদি সুন্দর ভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন, একজন অভিভাবকের মতো, আমরা যারা টিপিক্যাল পলিটিক্যাল ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে আসিনি, আমাদের যেন কেউ ডিস্টার্ব না করে।' এবিষয়ে শ্রীকান্ত মাহাতোকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, কোনও ঝামেলা ছিল না। আগেই সব মিটে গিয়েছিল।
যদিও গোটা বিষয় নিয়ে খোঁচা দিতে ছাড়েনি বিজেপি। মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলার বিজেপি সহ সভাপতি সমিতকুমার মণ্ডল বলেছেন, 'একজন মন্ত্রীকে বিধায়কের সামনে ক্ষমতা চাইতে হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীরও লজ্জা পাওয়া উচিত!'
আরও পড়ুন- 'লোক হয়নি, বেলুন ফুটো হয়ে গিয়েছে', নবান্ন অভিযানকে কটাক্ষ মমতার