![ABP Premium](https://cdn.abplive.com/imagebank/Premium-ad-Icon.png)
Poila Baisakh Tour: পায়ের তলায় সর্ষে? বাংলা নববর্ষে তালিকায় থাকুক বাংলারই আনাচ-কানাচ
Bengali New Year Plan: পশ্চিমবঙ্গেই রয়েছে দুরন্ত সব ঘোরার জায়গা। পাহাড় থেকে সমুদ্র, জঙ্গল থেকে ঐতিহাসিক স্থান। বাংলার বুকে লুকিয়ে সব রত্ন।
![Poila Baisakh Tour: পায়ের তলায় সর্ষে? বাংলা নববর্ষে তালিকায় থাকুক বাংলারই আনাচ-কানাচ Poila Baisakh, Best Places to visit in West Bengal in coming Bengali New year Poila Baisakh Tour: পায়ের তলায় সর্ষে? বাংলা নববর্ষে তালিকায় থাকুক বাংলারই আনাচ-কানাচ](https://feeds.abplive.com/onecms/images/uploaded-images/2023/04/14/c5b2ce9d4d06e8b331bc4b38fae556f21681425995531385_original.jpg?impolicy=abp_cdn&imwidth=1200&height=675)
কলকাতা: কথায় বলে বাঙালির পায়ের তলায় সর্ষে। শীত-গ্রীষ্ম বা বর্ষা, ঘুরতে যাওয়ার নাম শুনলেই উবে যায় সব ক্লান্তি। সামনেই বাংলা নববর্ষ। পয়লা বৈশাখ নিয়ে, শুধু পয়লা কেন, গোটা বৈশাখ নিয়েই বাঙালির মনে সবসময় আলাদা একটি কুঠুরি থাকে। এই বিশেষ সময়ে একটু ঘোরাঘুরি হবে না তা কি হয়?
বাংলা নববর্ষে যদি ঘোরাঘুরি করতেই হয়, তাহলে বাংলারই কোনও জায়গা নয় কেন? বেশিদিন ছুটিও লাগবে না। খরচও বেশি নয়। তাহলে চটপট তালিকাটাও দেখে নেওয়া যাক।
শান্তিনিকেতন:
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিধন্য শান্তিনিকেতন। বছরভর বাঙালির বেড়ানোর অন্যতন জায়গা। রাজ্যের যে কোনও জেলা থেকে সহজেই ট্রেনে বা সড়ক পথে যাওয়া যায় স্টেশনে নেমে বিভিন্ন দূরত্বে অজস্র হোটেল রয়েছে। সোনাঝুরির হাটে রকমারি জিনিস এবং বিশ্বভারতী, উপাসনা গৃহ অবশ্য দ্রষ্টব্য। দোলে এবং পঁচিশে বৈশাখ ভিড় থাকে। এই সময়টা মোটের উপর ফাঁকাই পাওয়া যেতে পারে।
সুন্দরবন:
রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের এই ডেরা দেখতে দেশ-বিদেশ থেকে পর্যটক আসেন। দুই ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে রয়েছে সুন্দরবন। কাকদ্বীপ বা নামখানা থেকে লঞ্চের মাধ্যমে ঘুরে দেখা যায়। এখন পাখিরালয়ে থাকার ব্যবস্থাও রয়েছে। সজনেখালি, সুধন্যখালি, দোঁবাকির মতো একাধিক ওয়াচটাওয়ার রয়েছে দেখার মতো। বাঘের দেখা কপালগুণে হতে পারে। তবে কুমির, হরিণ আর ভাগ্য ভাল থাকলে শুশুকের দেখা মিলতে পারে।
টাকি:
উত্তর ২৪ পরগনার এই এলাকায় পিকনিক স্পট থেকে উইকএন্ড ট্যুর- সবকিছুর জন্য়ই আদর্শ। শিয়ালদা থেকে হাসনাবাদ লোকালে একেবারে টাকি স্টেশন। সেখান থেকে টোটো করে ইছামতীর পাড়। নদীর পাশেই প্রচুর বিভিন্ন দামের হোটেল রয়েছে। খাবারের দোকানও রয়েছে। কাছেই রাজবাড়ির ভগ্নস্তূপ। মিনি সুন্দরবন ঘুরে আসতে পারেন। কাছেই পাবেন লঞ্চঘাট, সেখানে লঞ্চে করে ইছামতী ভ্রমণও সেরে ফেলা যায়। লঞ্চে করে মাঝ নদীর কাছাকাছি গেলেই স্পষ্ট দেখবেন ওপারের বাংলাদেশ।
গোটা দিন হুগলিতে:
কলকাতা থেকে একটু দূরে। একটা লোকাল ট্রেনের দূরত্ব। গঙ্গাপারের এই জেলায় আনাচ-কানাচে ছড়িয়ে পর্তুগিজ, ডাচ ও ফরাসি সংস্কৃতির ছাপ। হুগলি ইমামবড়া, ভদ্রেশ্বর, হংসেশ্বরী মন্দির, শ্রীরামপুর, চন্দননগর-আরও বহু জায়গা রয়েছে, যেখানে গোটা একটা দিন কীভাবে কেটে যাবে টেরও পাবেন না। উত্তরপাড়ার জয়কৃষ্ণ লাইব্রেরি, কোন্নগরের রাজরাজেশ্বরী মন্দির, ঋষি অরবিন্দের বাড়ি, অবনীনন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাগানবাড়ি, রিষড়ায় রাধাবল্লভের মন্দির, উইলিয়ম কেরির সমাধি, বৈদ্যবাটিতে ডাকাত কালি মন্দির, চুঁচুড়ায় ঘড়ি মোড়,আর্মেনিয়ান চার্চ, ব্যান্ডেল চার্চ, কামারপুকুর, তারকেশ্বর মন্দির, ফুরফুরা শরিফ- তালিকার শেষ নেই।
বাঁকুড়ার আনাচ-কানাচ:
এই জেলার অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র মুকুটমনিপুর। এছাড়াও মল্ল রাজাদের প্রাচীন রাজধানী বিষ্ণুপুর, পাহাড়ি উপত্যকা ঝিলিমিলি, শুশুনিয়া পাহাড়, বিহারীনাথ পাহাড়, জয়পুরের জঙ্গল ও মা সারদার পবিত্র জন্মস্থান জয়রামবাটি। বেছে নিতে পারেন যে কোনওটা।
দিঘা-মন্দারমনি:
বাঙালির দিপুদা রয়েছে। দি- অর্থাৎ দিঘা। সমুদ্র দেখতে চাইলেই যেখানে ভিড় জমায় আপামর বাঙালি। সড়কপথে সহজেই যাওয়া যায়। রয়েছে রেল যোগাযোগও। অনেকদিন ধরেই দিঘার পাশাপাশি ভিড় উপচে পড়ছে মন্দারমনিতেও। সমুদ্রে স্নান করতে চাইলে মন্দারমনির সৈকতই ভাল। পাশাপাশি ঘুরে আসতে পারেন তালশারি, শঙ্করপুর।
ঝাড়গ্রাম:
বাংলার পর্যটনের অন্যতম সম্পদ জঙ্গলমহল। সৌন্দর্যের বিচারে টেক্কা দেবে অনেককেই। ঋতু বদলে ক্রমশ বদলে বদলে যায় এই জঙ্গলের রূপ। গাড়ি করে সহজেই পৌঁছনো যায় ঝাড়গ্রামে। রয়েছে ট্রেন যোগাযোগ। এখন আলাদা জেলা হয়েছে ঝাড়গ্রাম। স্টেশনের কাছাকাছিই হোটেল পেয়ে যাবেন। দেখার তালিকাটাও বেশ দীর্ঘ। ঝাড়গ্রাম রাজবাড়ি, চিল্কিগড় রাজবাড়ি, কনকদুর্গা মন্দির, ঝাড়গ্রাম জুলজিকাল পার্ক, লালজল গুহা, খাঁদারানি ঝিল, গাডড়াসিনি পাহাড়, ঝিল্লি---রয়েছে আরও অনেক কিছু। এখান এক থেকে ২ দিন থাকলে ভাল ভাবে ঘোরা যাবে।
নবদ্বীপ-মায়াপুর:
নদিয়ার মায়াপুর ও নবদ্বীপ অন্যতম ধর্মীয় স্থান। শ্রী চৈতন্যদেবের জন্মস্থান। মায়াপুরে রয়েছে বিখ্যাত ইস্কনের মন্দির।
মুর্শিদাবাদ:
ইতিহাসের পাতা থেকে উঠে আসা এই জেলা। হাজারদুয়ারি প্যালেসে, মোতি ঝিল, মুরাদবাগ প্যালেস এবং খোশবাগ সমাধি। কাটরা মসজিদ, নসিপুর প্যালেস, কাঠগোলা প্যালেস, জাফরগঞ্জ সমাধি- দেখার জায়গা অনেক। আর অবশ্যই দেখবেন জাহানকোশা কামান। মুর্শিদাবাদ জেলা সিল্কের শাড়ি বিশেষ করে বালুচরি শাড়ির জন্য বিখ্যাত।
মালদা:
পুরাতাত্ত্বিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ একাধিক সৌধ ও মসজিদ রয়েছে মালদায়। বড় সোনা মসজিদ, দখিল দরওয়াজা, ফিরোজ মিনার, চিকা মসজিদ, কদম রসুল মসজিদ, গুমটি দরওয়াজা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও পান্ডুয়ার একলাখি মসজিদ রয়েছে। বাংলার অন্যতম প্রথম স্কোয়ার ব্রিক গম্বুজ এটি। রয়েছে রামকেলি গ্রাম। যেখানে বেশ কিছুদিন শ্রী চৈতন্যদেব বাস করেছিলেন বলা হয়। রয়েছে আদিনা ইকো টুরিজম পার্ক, মালদা মিউজিয়াম। মালদার হবিবপুর ব্লকের জগজীবনপুর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পুরাতাত্ত্বিক এলাকা।
সাধের পাহাড়:
আগেই বলা হয়েছিল দিপুদা-র কথা। দা-মনে দার্জিলিং। বাঙালির একেবারে ঘরের পাহাড়। সাধ মিটিয়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখার পাহাড়, ইচ্ছেমতো চা আর কব্জি ডুবিয়ে কেক খাবার পাহাড়। দার্জিলিং-কার্শিয়াং এবং কালিম্পং- ঘোরার জায়গা শেষ করা যাবে না। এখন এত অফবিট জায়গা হয়েছে যে, পছন্দমতো কোনও হোমস্টে-তে থেকে নিখাদ ঘরোয়া রান্না খেয়ে পাহাড় আর প্রকৃতি উপভোগ করা যায়। এনজেপি স্টেশন বা বাগডোগরা নেমে কয়েকঘণ্টায় পৌঁছে যাবেন দার্জিলিংয়ে। তবে তার জন্য কয়েকদিন ছুটি ম্যানেজ করা চাই। ট্রেনের টিকিট না পেলেও পরোয়া করবেন না। বহু বাস শিলিগুড়ি যায়। সেখান থেকেও পেয়ে যাবে দার্জিলিং যাওয়ার গাড়ি।
ডুয়ার্সের সান্নিধ্যে:
অনেকবার পাহাড়ে গিয়েছেন? এখন একটু অন্য জায়গা যেতে ইচ্ছে করছে? তাহলে ভাবতে পারেন ডুয়ার্সের কথা। জলপাইগুড়ি-আলিপুরদুয়ার জুড়ে ছড়িয়ে তরাই-ডুয়ার্স। চা বাগান আর জঙ্গলের সৌন্দর্য মন ভাল করবেই। গরুমারা ও জলদাপাড়া অভয়ারণ্যের সাফারি রয়েছে। এছাড়াও মূর্তি, ঝালং, বিন্দু- ঘোরার তালিকায় রাখতেই পারেন। বক্সা ফোর্ট,বক্সা টাইগার রিজার্ভও রয়েছে।
বাংলায় যা যা পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে তা তালিকা করতে বসলে দীর্ঘসময় লাগবে। কোচবিহার,উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর থেকে পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম। সব জেলাতেই রয়েছে প্রাকৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্ভার। শুধু সেখানে পৌঁছে যাওয়ার অপেক্ষা।
আরও পড়ুন: বৈশাখের গরমের আগে পাহাড়ে হাওয়া-বদল! শুধু চাই অল্পস্বল্প রেস্ত আর একটু ছুটি
ট্রেন্ডিং
সেরা শিরোনাম
![ABP Premium](https://cdn.abplive.com/imagebank/metaverse-mid.png)