West Bengal Foundation Day: ১লা বৈশাখ পশ্চিমবঙ্গের প্রতিষ্ঠা দিবস হিসেবে পালন করতে বিধানসভায় প্রস্তাব আনতে চায় সরকার, সিদ্ধান্ত বৈঠকে
Poila Boisakh:২০ জুন নয়, পয়লা বৈশাখ পশ্চিমবঙ্গের প্রতিষ্ঠা দিবস হিসেবে পালন করতে চাইছে সরকার। সূত্রের খবর বিধানসভার একটি কমিটির বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে।
আশাবুল হোসেন, কলকাতা: ২০ জুন নয়, পয়লা বৈশাখ পশ্চিমবঙ্গের প্রতিষ্ঠা দিবস (West Bengal Foundation Day) হিসেবে পালন করতে চাইছে সরকার। সূত্রের খবর বিধানসভার (West Bengal Assembly Building) একটি কমিটির (Committee) বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই মর্মে প্রস্তাবও আনা হতে পারে বিধানসভায়। গত ২০ জুন বিজেপি পশ্চিমবঙ্গের প্রতিষ্ঠা দিবস হিসেবে পালন করেছিল। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নির্দেশেই রাজভবনে পশ্চিমবঙ্গের প্রতিষ্ঠা দিবস পালন করেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। বিষয়টি নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রতিষ্ঠা দিবস কবে হবে, সেই নিয়ে বিধানসভায় একটি কমিটি তৈরি হয়। কমিটির উপদেষ্টা হয়েছিলেন বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ সুগত বসু। সদস্য ছিলেন ব্রাত্য বসু, ফিরহাদ হাকিম, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়-সহ অন্যান্যরা। অধ্যক্ষের ঘরে বৈঠকের পর পশ্চিমবঙ্গের প্রতিষ্ঠা দিবস পালন নিয়ে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে খবর। এই নিয়ে এবার বিধানসভায় প্রস্তাব আনা হতে পারে। প্রসঙ্গত, আগামীকাল থেকে ফের শুরু হতে চলেছে বিধানসভা অধিবেশন।
কেন বিতর্ক?
গত ২০ জুন, রাজভবনে পশ্চিমবঙ্গ প্রতিষ্ঠা দিবস পালন নিয়ে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত চরমে পৌঁছয়। প্রত্য়েক রাজ্যের প্রতিষ্ঠা দিবস পালনের সিদ্ধান্ত ছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের, সেই অনুযায়ীই পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালনের সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে। তার আওতায় NCC-র অনুষ্ঠানের পাশাপাশি, রাজভবনে স্কুল পড়ুয়াদের জন্য বসে আঁকো প্রতিযোগিতারও আয়োজন করা হয়েছে। এই উদ্যোগ নিয়েই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মমতা। বিষয়টিকে 'সংবিধান সম্মত' নয় বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। ফোনে কথা বলার সেই নিয়ে রাজ্যপালকে চিঠিও দিয়েছেন মমতা। রাজভবনে পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালন নিয়ে ইতিমধ্যেই শুভেচ্ছা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। কিন্তু শুধুমাত্র রাজ্য সরকার নয়, এই উদ্যোগ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহলেই। কারণ ২০ জুন দিনটির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বঙ্গভঙ্গের যন্ত্রণাময় ইতিহাস। তাই সেই দিনে আনন্দ-আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
বিশেষজ্ঞ মহলের বক্তব্য, পশ্চিমবঙ্গ দিবস বলে যে দিনটি ঘিরে এত আয়োজন, ১৯৪৭ সালের সেই ২০ জুন তৎকালীন অখণ্ড বাংলা বিভাজনের বিষযটি উত্থাপিত হলে, বঙ্গভঙ্গের পক্ষে বেশি ভোট পড়ে। ফলে দু'টুকরো হয়ে যায় বাংলা। তৈরি হয় তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমানে বাংলাদেশ) এবং একটি অংশ ভারতে রয়ে যায় পশ্চিমবঙ্গ নামে। এর পর ১৯৪৭ সালের ১৫ অগাস্ট স্বাধীনতা অর্জন করে ভারত। কিন্তু সেই স্বাধীনতা অর্জিত হয় পঞ্জাব এবং বাংলা বিভাজনের মাধ্যমে। আজও সেই যন্ত্রণাময় ইতিহাস কুরে কুরে খায় শিকড় বিচ্ছিন্ন মানুষদের। ইংরেজ চলে গেলেও, তাদের টেনে যাওয়া বিভাজনের ক্ষত রয়ে গিয়েছে। তাই পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালনের সিদ্ধান্তে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
আরও পড়ুন:'UGC-র গাইডলাইন মানা হোক', যাদবপুরকাণ্ডে জনস্বার্থ মামলা দায়ের বিজেপির