East Burdwan: সাধারণ মানুষের সমস্যা মেটাতে এবার অনলাইন পরিষেবা চালুর সিদ্ধান্ত বর্ধমান পুরসভার
বর্ধমান পুরসভাতে চালু হয়ে গেল ডিজিটাল পুরসভার কাজ। এক ক্লিকেই ঘরে বসে সমস্যার সমাধানে উদ্যোগী নতুন প্রশাসক বোর্ড। ইতিমধ্যেই পুরসভার পুর প্রশাসক প্রণব চট্টোপাধ্যায় নাগরিক সনদ প্রকাশ করেছেন।
কমলকৃষ্ণ দে, পূর্ব বর্ধমান: পুরসভায় সাধারণ মানুষের হয়রানি ঘোচাতে এবার অনলাইনে অ্যাপ পরিষেবা শুরু করতে চলেছে বর্ধমান পুরসভা। বাড়িতে বসেই এক ক্লিকে সব সমস্যার সমাধান করতে পারবেন নাগরিকরা।
এবার বর্ধমান পুরসভাতেও চালু হয়ে গেল ডিজিটাল পুরসভার কাজ। এক ক্লিকেই ঘরে বসে সমস্যার সমাধানে উদ্যোগী নতুন প্রশাসক বোর্ড। ইতিমধ্যেই পুরসভার পুর প্রশাসক প্রণব চট্টোপাধ্যায় নাগরিক সনদ প্রকাশ করেছেন। পুরকতৃপক্ষ জানিয়েছেন, বর্ধমান পুরসভার বদনাম এবং মানুষের হয়রানি কমাতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। খুব সামান্য কাজের জন্যও দিনের পর দিন সাধারণ মানুষকে হয়রানির শিকার হতে হয়, পুরসভার এমন বদনাম ঘোচাতেই তাঁরা এই উদ্যোগ নিয়েছেন।
নাগরিক সনদ প্রকাশ করে কোন দফতরের কাজ কতদিনের মধ্যে সমাধান করা হবে তা লিখিত আকারে দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিকদের নামও দেওয়া হয়েছে। আধুনিকতার ছোঁয়ায় এখন ঘরে বসেই যেকোনও বিষয়ে যেমন অভিযোগ জানানো যাবে তেমনই অনলাইনে অভিযোগের নিস্পত্তি করে তা সংশ্লিষ্ট নাগরিককে জানিয়েও দেওয়া হবে।
এবার থেকে যেমন অনলাইনেই দেওয়া যাবে ট্যাক্স, মেটানো যাবে মিউটেশন, সেপারেশনের মত সমস্যাগুলি, পাশাপাশি জন্ম-মৃত্যু থেকে বাড়ির প্ল্যান পাসের সমস্যাগুলি মেটানো যাবে অনলাইনেই। পুরসভার অন্যতম সহ প্রশাসক আইনুল হক জানিয়েছেন, পুরসভার দুয়ারে নয়, বর্ধমান পুরসভাই এবার নাগরিকের দুয়ারে পৌঁছতে চাইছে। সেই কারণে তৈরি করা হয়েছে বিশেষ অ্যাপ। সেই অ্যাপের মাধ্যমেই নির্দিষ্ট অভিযোগ জানানো যাবে। অভিযোগ জানানোর সঙ্গে সঙ্গেই একদিকে এসএমএসের মাধ্যমে অভিযোগকারীর কাছে পৌঁছে যাবে আইডি নম্বর, বিভাগীয় প্রধানের মোবাইলেও পৌঁছে যাবে অভিযোগের বিষয়।
অন্যদিকে অনেক সময়ই অভিযোগকারী এমন অভিযোগ জানান যার সত্যতা থাকে না। কিন্তু তাঁরা সম্পূর্ণ আশাবাদী যে যা অভিযোগ আসবে তা ভিত্তিহীন হবে না। একইসঙ্গে জানানো হয়েছে অভিযোগের সত্যতা থাকলেই দ্রুততার সঙ্গে তা মেটানো হবে। পাশাপাশি নাগরিক সনদ প্রকাশ করে কতদিনের মধ্যে সমাধান হবে তাও তাঁরা উল্লেখ করেছেন পুর কতৃপক্ষ। এমনকী যাঁদের অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন নেই তাদের জন্য চালু হয়েছে হেল্প ডেস্কও। ৮০০১৬০৫০০০ এই নম্বরে কাজের সময় ফোন করলে হেল্প ডেস্কে থাকা দুজন কর্মী সহায়তা করবে নাগরিকদের। এখানেও রাখা হয়েছে হয়রানি বন্ধের প্রক্রিয়া। হেল্প ডেস্কে থাকা কর্মী ফোন না ধরলে,তা বিভাগীয় প্রধানের কাছে চলে যাবে। আবার তিনি না ধরলে সরাসরি তা চলে যাবে পুর প্রশাকদের কাছে।
এছাড়াও পুজোর পরেই চালু হচ্ছে টোকেন ব্যবস্থা। যিনি পুরসভায় যাবেন তাঁকে টোকেন নিতে হবে এবং তিনি ফিরে যাবার সময় সেই টোকেন জমা দেওয়ার পাশাপাশি পরিষেবা নিয়ে মতামত জানিয়ে যেতে পারবেন। অন্যদিকে পুর এলাকার রাস্তাঘাটের তথ্য থেকে শুরু করে বাড়ির অবস্থান ও বাড়িটি দ্বিতল না ত্রিতল তা তথ্য রাখার জন্য করা হচ্ছে জিপিএস ম্যাপিং। যার মাধ্যমে কোন রাস্তা মেরামত করা হচ্ছে তা জানা যাবে, তেমনই বাড়ির প্ল্যান পাসের সময় দেখে নেওয়া যাবে বাড়িটি বর্তমানে একতলা না দোতলা।
পুজোর পরই তাঁরা কলকাতার অনুকরণে বর্ধমান পুরসভাতেও চালু করতে চলেছেন 'টক টু এ্যাডমিনিস্ট্রেটর' পরিষেবা। সরাসরি প্রশাসকমণ্ডলীর সঙ্গে কথা বলতে পারবেন নাগরিকরা। এই অনলাইনে পুর পরিষেবা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। বিজেপির বর্ধমান দক্ষিণ বিধানসভার কনভেনার কল্লোল নন্দনের অভিযোগ, 'কয়েকদিন আগেই বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পুর এলাকার বেশ কিছু জায়গা জলমগ্ন হয়ে গিয়েছিল। ডিজিটাইসেশনের আগে পুরসভার রাস্তাঘাট, লাইট ঠিক করা উচিত। এগুলো সব ঠিকভাবে করা সম্ভব তখনই যখন পুর নির্বাচন হবে। যদি এটি করতে পারে তাহলে ভাল।'
যদিও বিজেপির অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে তৃণমূলের জেলা মুখপাত্র প্রসেনজিত দাসের বক্তব্য, 'মানুষ পরিষেবা পেয়েছে। বিজেপি অভিযোগ করতে হয় তাই করছে। মানুষ অনলাইনে অভিযোগ জানালে ৭ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করা হবে। দুয়ারে সরকারের মতো দুয়ারে পুরসভা।'
যদিও বর্ধমান পুর এলাকার একাংশ নাগরিকদের দাবি কয়েক বছরে পুর পরিষেবা তলানিতে গিয়ে ঠেকেছিল। বর্তমানে অনলাইন পরিষেবা বাস্তবে সঠিক ভাবে রূপায়িত হলে মানুষের সুবিধা হবে।
আরও পড়ুন: Purulia: পুরুলিয়ায় শরীরে সূচ ঢুকিয়ে শিশু খুনের মামলায় মা ও মায়ের প্রেমিককে মৃত্যুদণ্ড দিল আদালত