Purba Medinipur: নোংরা নর্দমা, দুর্গন্ধে প্রাণ ওষ্ঠাগত! দূষণ-তরজায় ভোগান্তি নাগরিকদের
Haldia Pollution: শিল্পসংস্থার দিকে আঙুল উন্নয়ন পর্ষদের, পাল্টা দাবি শিল্পসংস্থাগুলিরও।
বিটন চক্রবর্তী, পূর্ব মেদিনীপুর: দূষণ রোধ করবে কে? শিল্প সংস্থা না কি উন্নয়ন পর্ষদ? হলদিয়ায় দূষণরোধের বিষয়টি নিয়ে সামনে এল এমনই তরজা। বণিকসভার বৈঠকে হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান দাবি করেন, বন্দর শহরের শিল্পসংস্থাগুলি শুধুমাত্র তার সীমার মধ্যেই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিয়ে ব্যস্ত থাকে। তাই হলদিয়াকে আজও দূষণমুক্ত করা যায়নি। কার্যত শিল্প সংস্থাগুলির দিকে আঙুল তোলায় পাল্টা জবাব দিয়েছে তারাও। শিল্পসংস্থার দাবি, সিএসআর প্রকল্পের টাকা অন্যখাতে ব্যয় না করে দূষণরোধে ব্যয় করা যায়।
কারখানার ভিতর একেবারে ঝাঁ চকচকে। কিন্তু কারখানার সীমানার পাঁচিল যেখানে শেষ হয়েছে তার ঠিক বাইরেই ছবিটা আলাদা। নর্দমা দিয়ে বয়ে যাচ্ছে নোংরা জল। এমন দুর্গন্ধ যে ব্যস্ত রাস্তায় নাকে রুমাল চাপা দিতে হচ্ছে। অভিযোগ, কারখানার বর্জ্যের কারণেই দূষণ ছড়াচ্ছে এলাকায়। কিন্তু দূষণ নিয়ন্ত্রণে রাখার দায় কার? তা নিয়ে শুরু হয়েছে চাপানউতোর। হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান ও রাজ্যের শাসকদলের নেতা জ্যোতির্ময় কর বলেন, 'আমি বলতে পারি না, হলদিয়া দূষণমুক্ত। কিন্তু আমি বলব, শিল্প সংস্থাগুলি তাদের কারখানার ভেতরেই সবুজায়ন ও কারখানার সীমার মধ্যেকার জায়গাকেই পরিচ্ছন্ন, দূষণমুক্ত রাখার চেষ্টা করছে।' তিনি আরও বলেন, 'আমি ভেবে দেখার জন্য অনুরোধ করছি- কীভাবে বাইরের পরিবেশও রক্ষা করা যায়। কারণ, আপনারা জানেন - প্রতিবেশীরা ভাল না থাকলে আপনি ভাল থাকতে পারেন না।'
হলদিয়া শিল্পাঞ্চলে IOC, মিৎশুবিশি, এইচপিএল, টাটা, এক্সাইড, হলদিয়া এনার্জি লিমিটেডের মতো ছোটবড় মিলিয়ে শতাধিক শিল্পসংস্থা রয়েছে। কলকারখানা থেকে শিল্পাঞ্চলে দূষণের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় ২০১০ সালে নতুন করে শিল্প স্থাপনের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। পরবর্তীকালে শিল্পসংস্থাগুলি দূষণরোধে একাধিক ব্যবস্থা নেওয়ায় ও শহর জুড়ে প্রচুর গাছ লাগানোর ফলে ২০১৩ সালে দূষণের মাত্রা কমার পর সেই নিষেধাজ্ঞা ওঠে। কিন্তু এখনও পুরোপুরি দূষণমুক্ত হয়নি হলদিয়া। হলদিয়ার এইচপিএল লিংকরোড লাগোয়া এলাকায় একটি ভোজ্যতেল প্রস্তুতকারী সংস্থা রয়েছএ, তার সামনেই নয়ানজুলির জলে মিশছে কারখানায় বর্জ্য। যা নিয়েই বনিকসভার বৈঠকে প্রশ্ন তুলেছেন হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান জ্যোতির্ময় কর।
পাল্টা জবাব দিয়েছে শিল্পসংস্থাগুলি। হলদিয়া এনার্জি লিমিটেডের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার বিনোদ মিশ্র বলেন, 'শিল্পসংস্থাগুলি থেকে সামাজিক দায়বদ্ধতা প্রকল্প বা সিএসআর প্রকল্পের টাকা নিয়ে অন্যখাতে কেন ব্যাবহার করা হবে, সেই টাকা দিয়ে দূষণরোধে নানা ব্যবস্থা করা যায়।'
শুরু রাজনৈতিক চাপানউতোর:
বিএমএস রাজ্য কমিটির সহ সভাপতি প্রদীপ বিজলি বলেন, 'রাজ্যের শাসকদল হলদিয়া শিল্পাঞ্চল থেকে মেলা খেলার নাম করে টাকা তুললে দূষণরোধে কোম্পানিগুলো আর কী করে করবে?' তৃণমূলের তমলুক সাংগঠনিক জেলার সম্পাদক শিবনাথ সরকার বলেন, 'তৃণমূলকে খাটো করতে এইসব বলছে। তাছাড়া হলদিয়ায়তো কেন্দ্রীয় সরকারের অনেক শিল্পসংস্থা আছে, তাদের ভূমিকা কেন দেখা যায় না।'
আরও পড়ুন: উত্তরকাশীতে উদ্ধারকাজে প্রথম দিশা দেখিয়েছিল হুগলির দৌদীপের ক্যামেরা