Tamluk Municipality: 'বেশিরভাগই অর্থের জন্য পদ পেয়েছে', রদবদল নিয়ে বিস্ফোরক তমলুকের TMC কাউন্সিলর; 'শুভেন্দুই মুক্তিসূর্য'-তোপ
TMC News: বিধানসভা ভোটের আগে রাজ্যের একাধিক পুরসভায় বড়সড় রদবদল করছে তৃণমূল। আর তা ঘিরে দেখা দিয়েছে কোন্দল।

বিটন চক্রবর্তী, তমলুক : বিধানসভা ভোটের আগে রাজ্যের বিভিন্ন পুরসভায় রদবদল ঘিরে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। এরই মধ্যে তমলুক পুরসভায় টাকা দিয়ে পদ পাওয়ার বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন এই পুরসভারই তৃণমূল কাউন্সিলর। নতুন পুরপ্রধানকে মানতে নারাজ আরেক তৃণমূল কাউন্সিলরও। 'শীতকালের সার্কাস' বলে কটাক্ষ করেছে বিজেপি।
বিধানসভা ভোটের আগে রাজ্যের একাধিক পুরসভায় বড়সড় রদবদল করছে তৃণমূল। আর তা ঘিরে দেখা দিয়েছে কোন্দল। তমলুক পুরসভার চেয়ারম্যান পদ থেকে সরানো হয়েছে দীপেন্দ্রনারায়ণ রায়কে। সরানো হয়েছে পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান লীনা মাভৈ রায়-কেও। নতুন চেয়ারম্যান করা হচ্ছে বিমল ভৌমিককে। আর এর পরই রদবদল নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন তমলুক পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলর পার্থসারথি মাইতি। এসএসসি-র দাগিদের তালিকা প্রকাশের পর, তৃণমূলেরই একাংশকে কাঠগড়ায় তুলে তাঁদের হয়ে কান ধরে ওঠবস করেছিলেন এই কাউন্সিলরই। তমলুক পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলর পার্থসারথি মাইতি বলেন, "আইপ্যাক-এর কথাই বলছি। আইপ্যাক ২০১৯-২০তে এখানে কীভাবে রাজনীতি হয়েছে জানে না। আজকে যাদের পদ দেওয়া হচ্ছে তাঁরা একসময় শুভেন্দুই মুক্তিসূর্য এই আহ্বান রেখেছিল। আমার তো মনে হচ্ছে যারা যারা পদ পেয়েছে দেখেছি তাঁদের বেশিরভাগই অর্থের জন্য পেয়েছে।"
নতুন চেয়ারম্যান দায়িত্ব নেওয়ার আগেই, তাঁর বিরুদ্ধে একপ্রকার বিদ্রোহ ঘোষণা করেছেন তৃণমূলেরই আরেক কাউন্সিলর। তমলুক পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলর দেবশ্রী মাইতি বলেন, "আমি চেয়ারম্যানকে মানতে পারব না। কিছুদিন আগে নাইট ব্যাঙ্কের ভোট হয়েছিল। আমাদের দলীয় কাউন্সিলররাও ছিলেন। তখন এক সাইডে আমি দাঁড়িয়ে ছিলাম। সেখানে বিমলবাবু যে অকথ্য ভাষায় আমার সঙ্গে গালি দিয়ে কথা বলছিলেন, আমি কোনও কিছুর মধ্যেই ছিলাম না। উনি যে অকথ্য ভাষায় কথা বলেছিলেন তাঁকে আমি চেয়ারম্যান, স্যর স্যর করব কী করে?"
চেয়ারম্যান পদ থেকে সরানোয়, অভিমানের সুর শোনা গেছে বিদায়ী চেয়ারম্যানের গলাতেও। বিদায়ী চেয়ারম্যান দীপেন্দ্রনারায়ণ রায় বলেন, "কষ্ট তো আছে, অভিমান হয়তো আছে। কিন্তু, দলের নির্দেশ আমি সবসময় পালন করেছি। দলে যারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরাই এই ব্যাপারটা বলতে পারবেন।"
গোটা বিষয়টি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেছে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। তমলুক সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি সুজিত রায় বলেন, "দল যাকে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেবে, তিনি চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন। সেই ব্যাপারে দলের যা সিদ্ধান্ত হবে সেই সিদ্ধান্ত সবাই মেনে নেবে।"
তমলুক সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সম্পাদক সুকান্ত চৌধুরী বলেন, "শীতকাল এলে সার্কাস আসে। শীতকাল এসেছে এখন। তৃণমূলটা এখন সার্কাস পার্টির মতো। রিংমাস্টার একজনই আছেন। এখানে পদ পেতে গেলে কে চেয়ারম্যান হবে, কে এমএলএ সিটে টিকিট পাবে, ওদের নিলাম হয়।"
২০২২-এর পুরভোটে, রাজ্য়ের ১২১টি পুরসভার মধ্য়ে ১১৯টিতেই জয়ী হয়েছিল তৃণমূল। বিজেপির ঝুলি ছিল শূন্য়। বামেদের হাতে আসে মাত্র একটি। ঝালদা পুরসভায় কংগ্রেস বোর্ড গঠন করলেও, পরে তা দখল করে নেয় তৃণমূল। কিন্তু, গতবছর লোকসভা ভোটের পুরসভাভিত্তিক ফলে এই সমীকরণের আমূল পরিবর্তন হয়। ওয়ার্ড ভিত্তিক ফলাফলের নিরিখে, রাজ্যের ১২১টি পুরসভার মধ্য়ে ৭৪টিতেই ১ নম্বরে পৌঁছে যায় বিজেপি। সেখানে তৃণমূল এগিয়ে ৪১টিতে, কংগ্রেস ৩টিতে ছিল প্রথম স্থানে এবং ৩টি পুরসভায় টাই হয়। সূত্রের খবর, তারপরই সমীক্ষার ভিত্তিতে বিভিন্ন পুরসভায় রদবদলের সিদ্ধান্ত নেয় তৃণমূল নেতৃত্ব!






















