(Source: ECI | ABP NEWS)
RG Kar Case : 'আপনার মেয়ে কিছুটা মারা গেছে' বলা হয়েছিল তাঁকে, বুকে দগদগে ক্ষত নিয়েই রায়ের অপেক্ষা মায়ের
'আপনাদের মেয়ে হয়ত সুইসাইড করেছে, কিছুটা মারা গেছে'। মৃত চিকিৎসকের মা-বাবা হতবাক, সেই সুচরিতা, যিনি প্রথম খবর দিয়েছিলেন তাঁদের তাঁকেও সিবিআই সাক্ষী হিসেবে হাজির করেনি।

কলকাতা : শনিবার শিয়ালদা কোর্টে আর জি কর মামলার রায় ঘোষণা। কিন্তু এখনও বহু বহু প্রশ্নের উত্তর অজানা। এখনও গত ৯ অগাস্টের কথা ভেবে শিউরে উঠছেন নির্যাতিতার মা বাবা। সেদিন কতটা অমানবিক ব্যবহারের সম্মুখীন হতে হয়েছিল তাঁদের, সে-কথা ভাবলে এখনও ডুকরে উঠছেন তাঁরা। রায় ঘোষণার আগে ঘণ্টাখানেক সঙ্গে সুমন অনুষ্ঠানে এসে নির্যাতিতার মা জানালেন, সেদিন তাঁর কাছে ফোন গিয়েছিল এক মহিলারর কাছ থেকে। তখন তাঁরা রাস্তায়। বলেছিলেন 'আপনার মেয়ে অসুস্থ, তাড়াতাড়ি আসুন'। তখন আবার ফোন করলে তিনি বলেন, 'কী হয়েছে আমি তো বলতে পারব না, আমি তো ডাক্তার নই, ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে'। পরে সেই সুচরিতাই আবার বলেন, 'আপনাদের তো সেটাই বলার চেষ্টা করছিলাম। 'আপনাদের মেয়ে হয়ত সুইসাইড করেছে, কিছুটা মারা গেছে'। মৃত চিকিৎসকের মা-বাবা হতবাক, সেই মহিলা, যিনি প্রথম খবর দিয়েছিলেন তাঁদের তাঁকেও সিবিআই সাক্ষী হিসেবে হাজির করেনি।
এখনও নির্যাতিতার মা-বাবার দৃঢ় বিশ্বাস, এই ঘটনা একা সঞ্জয় রায়ের কাজ নয়, হাসপাতালের মধ্যে কারও যোগ-সাজোস না থাকলে, কীভাবে এক জনবহুল হাসপাতালে এমন ঘটনা ঘটে। আর যদিও বা ঘটে , তাহলে নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে এত দুর্ব্যবহার কেন, কেনই বা তড়িঘড়ি জোর করে দেহ দাহ করে দেওয়া? পুলিশের পায়ে ধরে কেঁদেছিলাম....আমাদের একবার ঢুকতে দিন...টাচ করব না...পুলিশ সেদিন যা অমানবিক ব্যবহার করেছে, তা যেন কখনও অন্য কোনও বাবা-মার সঙ্গে যেন না হয় ! ' কেঁদে ফেললেন আরও একবার।
নির্যাতিতার মায়ের অভিযোগ, তিনি চানইনি ওই হাসপাতালে পোস্টমর্টেম হোক, কারণ সেখানেই তিনি ধর্ষিত ও খুন হয়েছে। তিনি সেদিন চাননি দেহ দাহ করতে, চেয়েছিলেন দেহের দ্বিতীয় পোস্টমর্টেম হোক, সেই ইচ্ছেপ্রকাশ করার কোনও সুযোগই পাননি তাঁরা। তাঁদের গাড়ি থেকে নামতে দেওয়া হয়নি। দু-তিনশ পুলিশ ঘিরে ফেলে দেহ দাহ করিয়ে দেয়। সেই বিভীষিকা থেকে এখনও বের হতে পারেননি তাঁরা।
আগেও এই অভিযোগ জানিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু তাতে বড় একটা কিছু হয়নি। সুপ্রিম কোর্ট সিবিআই-কে নির্যাতিতার মা-বাবার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখার নির্দেশ দিয়েছিল,তা মানা হয়নি একটুও, অভিযোগ পরিবারের। তাই বুকে দগদগে ক্ষত নিয়েই আরজিকর খুন-ধর্ষণ মামলার রায়ের দিকে তাকিয়ে তাঁরা।
ডিসেম্বর মাসে ৪২টি প্রশ্ন নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন নিহত চিকিৎসকের মা-বাবা। তাঁরা প্রশ্ন তুলেছিলেন, কেন তাঁদের মেয়ের শেষকৃত্য় তড়িঘড়ি করা হয়েছিল? কেন স্থানীয় বিধায়ক এবং কাউন্সিলরের নজরদারিতে তড়িঘড়ি মৃতদেহ সৎকার হয়েছিল? বাবা দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত চাওয়া সত্ত্বেও, কেন তা ইচ্ছাকৃতভাবে উপেক্ষা করা হয়েছিল? মৃতদেহ উদ্ধারের দীর্ঘক্ষণ পর কেন মৃত ঘোষণা করা হয়েছিল? তরুণীকে যখন উদ্ধার করা হয়েছিল, তখন কি তিনি বেঁচে ছিলেন? ইচ্ছাকৃতভাবেই কি তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা করা হয়নি? নিহত চিকিৎসকের মোবাইল ফোনের ফ্রিঙ্গারপ্রিন্ট পরীক্ষা কি করা হয়েছে? ঘটনার পর কি ক্রাইম সিন সাজানো হয়েছিল? এই প্রশ্নের উত্তর কি আদৌ মিলবে কোনদিন?























