South 24 Pargana News: ভরা কটালে সমুদ্র বাঁধের ফাটল দিয়ে জল ঢুকছে গ্রামে, আশঙ্কায় গ্রামবাসীরা
ইতিমধ্যেই অনেক চাষের জমি চলে গেছে জলের তলায়। বাঁধের কাছাকাছি কয়েকটি বাড়ি জলমগ্ন হয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা: ভরা কটালে সমুদ্র বাঁধের ফাটল দিয়েই দক্ষিণ ২৪ পরগনার (South 24 Pargana) সাগরের মহিষমারিতে গ্রামে জল ঢুকতে শুরু করেছে। গ্রামবাসীদের দাবি, ইতিমধ্যেই অনেক চাষের জমি চলে গেছে জলের তলায়। বাঁধের কাছাকাছি কয়েকটি বাড়ি জলমগ্ন হয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তবে সূত্রের খবর, স্থানীয় প্রশাসনের দাবি, বাঁধ মেরামতির জন্য সরঞ্জাম থাকলেও ভরা কটালের জন্য মেরামতির কাজ করা যাচ্ছে না।
নদীবাঁধ নিয়ে অভিযোগ: নামখানা ব্লকের অন্তর্গত পাতিবুনিয়া গ্রাম। গ্রামে নদীবাঁধ একেবারে ভাঙাচোরা অবস্থায়। অশনির মতো দুর্যোগের প্রভাবে ক্রমশ উত্তাল হয়েছে সমুদ্র। দুর্যোগের মেঘ যত ঘনীভূত হয়েছে, জলোচ্ছ্বাসে বানভাসি হওয়ার আশঙ্কায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার সমুদ্র ও নদী উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে ততই যেন জাঁকিয়ে বসেছে। সেবারও বাঁধ ভেঙে বিপর্যয়ের আশঙ্কা করেছেন প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ভুক্তভোগী মানুষগুলো। বঙ্গোপসাগর ও চিনাই নদীর মোহনায় অবস্থিত এই গ্রামে নদীবাঁধের যা অবস্থা, তাতে প্রবল জলোচ্ছ্বাস তো দূরের কথা, একটু জোরাল স্রোতের ধাক্কাও সামলাতে পারবে কি না, তা নিয়ে গ্রামবাসীদেরই সন্দেহ রয়েছে। বাসিন্দা নন্দন বর্মন যেমন বললেন, ' কোনও কাজ হয় না। যখনই দুর্যোগ আসে, তখনই জেসিবি এনে কাজ দেখানো হয়। '
পূর্ব মেদিনীপুরে বাঁধ নির্মাণে দুর্নীতি: দায়সারা ভাবে, নিম্নমানের সামগ্রী (low quality products) দিয়ে তৈরি হচ্ছে পাকা বাঁধ। এই অভিযোগ তুলে হলদি নদীর পাড়ে কংক্রিটের (concrete) বাঁধ (dam) তৈরির কাজ বন্ধ করে দেন হলদিয়ার (Haldia) বাঁশখানা জালপাই গ্রামের বাসিন্দারা। পরিদর্শনে গিয়ে বিক্ষোভের (agitation) মুখে পড়লেন সেচ দফতরের সুপার ভাইজার। উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন।
'লক্ষ্মীর ভাণ্ডার চাই না, বাঁধ চাই': ঘূর্ণিঝড় (Cyclone) আমফান (Amphan) এবং ইয়াসের (Yaaas) সময়, জলোচ্ছ্বাসে কাঁচা বাঁধ (Dam) ভেঙে, ভেসে গিয়েছিল নদী-তীরবর্তী বহু গ্রাম। তার পর থেকেই কংক্রিটের পাকা বাঁধের দাবিতে সরব, এই সব গ্রামের বাসিন্দারা। কিন্তু, সেই বাঁধ কি তৈরি হয়েছে? তা দেখতেই আমরা পৌঁছেছিলাম বিভিন্ন গ্রামে।
আমফান এবং ইয়াসের সময় প্রকৃতির রুদ্রমূর্তির সামনে অসহায় আত্মসমর্পণ করতে হয়েছিল দুই ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুরের বহু গ্রামের বাসিন্দাকে। কাঁচা বাঁধ ভেঙে গ্রাম কে গ্রাম ভাসিয়ে দিয়েছিল নদীর জল। পাকা বাঁধ না থাকার মাসুল গুনেছিলেন এই গরিব মানুষগুলো। এবার অশনিতে আবার নদী ফুঁসে উঠলে, সেই ধাক্কা সামলাতে বাঁধগুলো কতটা তৈরি? কতটা বাঁধ কংক্রিটের হয়েছে? জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, নামখানা ব্লকে প্রায় ২৫১ কিলোমিটার বাঁধ আছে। তার মধ্যে পাকা বাঁধ মাত্র ২১ কিলোমিটার। কাঁচা বাঁধ ২৩০ কিলোমিটার। নামখানা ব্লকের পাতিবুনিয়া গ্রামে এই বাঁধের অবস্থা দেখেই বোঝা যায়, জলোচ্ছ্বাস আটকানোর ক্ষমতা তার নেই।