Sukanta Majumdar: 'হতাশা থেকে মিথ্যে প্রচারের রাজনীতি', উত্তরবঙ্গ নিয়ে BJP বিধায়কেরই নিশানায় সুকান্ত
North Bengal Row:নির্বাচনের ফলাফলে হতাশ হয়ে সুকান্ত হতাশ, মিথ্যে প্রচারের রাজনীতি ঠিক নয় বলে মন্তব্য করলেন তিনি।
কলকাতা: দেশের উত্তর-পূর্বের সঙ্গে উত্তরবঙ্গকে যুক্ত করতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে প্রস্তাব দিয়েছেন বিজেপি-র রাজ্যসভাপতি সুকান্ত মজুমদার। সেই নিয়ে তোলপাড়ের মধ্যে এবার দলের অন্দরেই ক্ষোভের মুখে পড়লেন সুকান্ত। সুকান্তকে নিশানা করলেন কার্শিয়ংয়ের বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা। নির্বাচনের ফলাফলে হতাশ হয়ে সুকান্ত হতাশ, মিথ্যে প্রচারের রাজনীতি ঠিক নয় বলে মন্তব্য করলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে অরুণাচলপ্রদেশ, অসম, মণিপুর, মেঘালয়, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড ও ত্রিপুরা, এই সেভেন সিস্টার্স স্টেট এবং ব্রাদার স্টেট সিকিমের সঙ্গে উত্তরবঙ্গকে যুক্ত করার প্রস্তাব দিয়েছেন সুকান্ত। সেই নিয়ে এবার সুকান্তর বিরুদ্ধে মুখ খুললেন বিষ্ণুপ্রসাদ। তাঁর বক্তব্য, "উত্তরবঙ্গ নিয়ে সুকান্ত মজুমদারের মন্তব্য অবাস্তব। কোনওদিনই সম্ভব নয়। লোকসভা ভোটের ফলাফলে হতাশ উনি। ২০২৬ সালের নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে উত্তরবঙ্গের মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন উনি। পারলে রাজ্য ভাগ করুন। মিথ্যে প্রচার করে রাজনীতি ঠিক নয়।"
সংবাদমাধ্যমে বিষ্ণুপ্রসাদ বলেন, "এটি একটি ইউটোপিয়ান ভাবনা। এটা কোনও দিনই হবে না। কারণ পূর্বতর পরিসর যে কারণে বানানো হয়েছে, সিকিমে ৩৭১ এফ স্পেশাল প্রভিশন আছে, তার জন্যই সিকিমকে NEC-র অন্তর্ভুক্ত করা হয়। বাংলায় তেমন প্রভিশন নেই। বাংলায় থেকে, বাংলার অংশ থেকেই এটা করতে বলেছেন। অর্ধেক রাজ্য কখনও পরিষদে যেতে পারবে না। এটা অবাস্তব ভাবনা। ২০২৪ সালের নির্বাচনী ফলাফলে হতাশ উনি। সেই হতাশা থেকেই ২০২৬ সালে উত্তরবঙ্গ হাতের বাইরে চলে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন। তাই উত্তরবঙ্গের মানুষ, যাঁরা পৃথক রাজ্য চান, তাঁদের বিভ্রান্ত করে রাজনীতি করতে চাইছেন। আমি বিজেপি-র বিধায়ক হয়ে বলছি, আমি এটা মানব না। NEC করতে চাইলে, আগে এলাকাকে বাংলা থেকে ভাগ করে নিন। আলাদা রাজ্য করবেন, না কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করবেন, যা করার করুন। তার পর NEC করুন। তা না করে এমন মিথ্যা প্রচারের রাজনীতি করা ভুল।"
এ বিয়ে সুকান্তকে একহাত নিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার। তাঁর কথায়, "একেবারে ঠিক বলেছেন উনি। একটা অবাস্তব কথা বলে সুকান্ত মজুমদার নিজের দোষ ঢাকার চেষ্টা করছেন। এত খারাপ ফল, পর পর হার নিয়ে চাপ রয়েছে ওঁর উপর। এখন হাওয়ায় ভেসে থাকার জন্য এমন অবাস্তব কথা তুলে ধরছেন। রাজনৈতিক ভাবে, প্রশাসনিক ভাবে অবাস্তব এই দাবি। নড়বড়ে সরকার নিয়ে এখন চারিদিকে এমন অবাস্তব কথা বলছে বিজেপি। রাজ্যভাগ হোক বা রাজ্যের একটা অংশকে উত্তর-পূর্বের সঙ্গে যোগ করে দেওয়া হোক, যত এমন কথা বলবেন, তত মানুষের থেকে দূরে যাবেন আপনারা।"
উত্তরবঙ্গে বিজেপি-র একাধিক সাংসদ রয়েছেন। তাঁরা উত্তরবঙ্গের পর্যটন, বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে মোদি সরকারের কাছে কেন দরবার করছেন না, বাজেটে বরাদ্দর জন্য কেন দাবি জানাচ্ছেন না সেই প্রশ্নও তোলেন জয়প্রকাশ। অন্য দিকে, সুকান্তর দাবি, উত্তরবঙ্গ যদি উত্তর-পূর্বের অন্তর্ভুক্ত হয়, সেক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা বেশি পাওয়া যাবে। কিন্তু সুকান্তর এই দাবি অবাস্তব বলেই দাগিয়ে দিয়েছেন বিজেপি বিধায়ক।