(Source: ECI/ABP News/ABP Majha)
TATA Motors:'সিঙ্গুরে কারখানা না হওয়ায় টাটাকে সুদসহ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে WBIDC-কে', রায় মধ্যস্থতাকারী ট্রাইবুনালের
Singur, TATA Motors: মামলার খরচের জন্য আরও ১ কোটি টাকা দিতে হবে ডব্লুবিআইডিসি-কে', জানিয়েছে টাটা মোটরস, খবর এএনআইয়ের।
নয়া দিল্লি: ১৫ বছর পর ফের সিঙ্গুরে (Singur) ধাক্কা খেল রাজ্য সরকার (West Bengal Govt)। সিঙ্গুরে (Singur) কারখানা (TATA Nano Factory) না হওয়ায় টাটাকে সুদসহ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে ওয়েস্ট বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড বা ডব্লুবিআইডিসি-কে। টাটা মোটরসের (TATA Motors) তরফে জানানো হয়েছে, তাদের পক্ষে সর্বসম্মত রায় দিয়েছে মধ্যস্থতাকারী ট্রাইবুনাল। সুদ ছাড়া সেই টাকার পরিমাণ ৭৬৫ কোটি ৭৮ লক্ষ টাকা।
২০১৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে যতক্ষণ না ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে সেই মোতাবেক ১১ শতাংশ হারে সুদ সহ ৭৬৫ কোটি ৭৮ লক্ষ টাকা দিতে হবে। তিন সদস্যর বেঞ্চে এই মামলা দীর্ঘদিন ধরে চলছিল। এখানে মামলাকারী ছিল- টাটা মোটরস লিমিটেড এবং রাজ্য শিল্পোন্নয়ন নিগম (West Bengal Industrial Developement Corporation) ছিল প্রতিপক্ষ। দু'পক্ষের সওয়াল-জবাব হওয়ার পর তিন সদস্যর আরবিট্রাল ট্রাইব্যুনাল সর্বসম্মতিক্রমে এই নির্দেশ দিয়েছে বলে জানা গিয়েছে সংবাদসংস্থা এএনআই সূত্রে।
পাশাপাশি মামলার খরচ বাবদ ১ কোটি টাকাও দিতে হবে রাজ্যকে, এমনটাও জানিয়ে দেওয়া হয়। এ প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, 'আরব্রিট্রেশন অ্যাওয়ার্ড হয় তিন জনের প্যানেলে, সর্বসম্মতভাবে। সেখানের নির্দেশ মোতাবেক টাটাকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। তবে এই রায়ের বিরুদ্ধে WBIDC আদালতে যেতে পারে। এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জও করতে পারে। সেই সুযোগ রয়েছে রাজ্যের কাছে।' অশোক গঙ্গোপাধ্যায়ের কথায়, 'section 34 of arbitration and conciliation act- অনুযায়ী এই নির্দেশকে হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ করতে পারে রাজ্য।'
Singur Plant case | Tata Motors says, "The aforesaid pending arbitral proceedings before a three-member Arbitral Tribunal has now been finally disposed of by a unanimous award in favour of Tata Motors Limited (TML) whereby the claimant (TML) has been held to be entitled to… pic.twitter.com/ivr34191GM
— ANI (@ANI) October 30, 2023
প্রসঙ্গ সিঙ্গুর
২০০৬ সালে সপ্তম বামফ্রন্ট সরকারের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার দিনেই রতন টাটাকে পাশে নিয়ে সিঙ্গুরে ছোট গাড়ি তৈরির কারখানার কথা ঘোষণা করেছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। ২০০৭ সালে সিঙ্গুরে টাটার কারখানা তৈরির কাজ শুরু হয়। আর সেই সময়ই জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামেন কৃষকদের একাংশ। কৃষকদের ক্ষোভকে হাতিয়ার করেই ময়দানে নামে বিরোধী দল তৃণমূলও। গোটা দেশের রাজনীতিকে নাড়িয়ে দিয়েছিল এই সিঙ্গুর আন্দোলন। শেষে ২০০৮ সালের ৩ অক্টোবর বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর সঙ্গে বৈঠকের পর সিঙ্গুর থেকে সরে যাওয়ার কথা ঘোষণা করেন রতন টাটা।
এরপর থেকেই জমি নিয়ে আইনি টানাপোড়েন জারি ছিল। এরপর ক্ষমতায় এসে প্রথম মন্ত্রিসভার বৈঠকেই সিঙ্গুরে জমি ফেরানোর সিদ্ধান্ত নেয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর, সিঙ্গুরে গিয়ে জমি ফিরিয়ে দেন মমতা। ভেঙে ফেলা হয় টাটার কারখানার কাঠামো।
এদিকে, যখন জমি নিয়ে আইনি টানাপোড়েন চলছে, তখনও রতন টাটা স্পষ্ট জানিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে খুবই সম্মান করি। বিশ্বাস করি পশ্চিমবঙ্গের শিল্পায়নের জন্য তিনি আগ্রহী ছিলেন। সিঙ্গুরে কারখানা হলে ৭ থেকে ৮ হাজার চাকরি হত। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য চেয়েছিলেন টাটা গোষ্ঠী থাকুক। তার জন্য তিনি নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করারও আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ দিয়ে কারখানা চালানো যায় না।
যদিও সিঙ্গুর থেকে টাটাদের বিদায় নিয়ে পঞ্চায়েত ভোটের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছিলেন, টাটাকে আমি তাড়াইনি, তাড়িয়েছে সিপিএম। মমতার কথায়, আপনারা লোকের জমি জোর করে দখল করতে গেছিলেন। আমরা জমি ফেরত দিয়েছি। জায়গার তো অভাব নেই, আমি জোর করে কেন জমি নেব? আমরা এত প্রোজেক্ট করেছি, জোর করে তো জমি নেইনি।
তবে মধ্যস্থতাকারী ট্রাইবুনালের এই রায়ের পর কোন পথে হাঁটবে রাজ্য, সেদিকেই তাকিয়ে ওয়াকিবহাল মহল।