Chiranjeet Chakraborty: “এ তো লোক ঠকানো! আগেও বলেছিলাম, লাভ হয়নি”, তৃণমূলে বায়রনের অন্তর্ভুক্তিতে অখুশি চিরঞ্জিৎ
Bayron Biswas: দিল্লির কংগ্রেস নেতৃত্বও এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তৃণমূলের দল ভাঙানোর রাজীনীতিকে তুলোধনা করছেন তাঁরা।
কলকাতা: কংগ্রেসের (Congress) টিকিটে জিতে তৃণমূলে (TMC) বায়রন বিশ্বাস (Bayron Biswas)। সেই নিয়ে এবার মুখ খুললেন চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তী (Chiranjeet Chakraborty)। তৃণমূল বিধায়ক চিরঞ্জিৎ কার্যত তুলোধনা করলেন নিজের দলকেই। এক দলের প্রতীকে ভোটে জিতে, অন্য দলে চলে আসার রীতি নিয়ে প্রশ্ন তুললেন। এ ভাবে দলবদল করা লোকঠকানো ছাড়া কিছু নয় বলে মন্তব্য করলেন তিনি।
সাগরদিঘি উপনির্বাচনে বাম-কংগ্রেসের সমর্থনে জয়ী হন বায়রন। তাঁর হাত ধরে রাজ্য বিধানসভায় প্রত্যাবর্তন ঘটে কংগ্রেসের। কিন্তু তিন মাসের মাথাতেই জোড়াফুলে যোগ দিলেন তিনি। সেই নিয়ে উত্তাল বঙ্গ রাজনীতি। প্রদেশ কংগ্রেস তো বটেই, দিল্লির কংগ্রেস নেতৃত্বও এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তৃণমূলের দল ভাঙানোর রাজীনীতিকে তুলোধনা করছেন তাঁরা।
সেই আবহেই নিজের দলের ভূমিকায় সরব হলেন চিরঞ্জিৎ। তাঁর বক্তব্য, "একজনের ভোটে জিতে কীভাবে অন্য দলে চলে গেলেন? এটা উচিত নয়। আমি এসব পছন্দ করি না। যে চিহ্ন দেখে মানুষ ভোট দিয়েছিলেন, তাহলে সেই চিহ্নেরই মূল্য থাকল না! তাহলে তো লোক ঠকানো হয়! দলবদল কেউ করতেই পারেন। কিন্তু এক বছর তাঁকে বড় পদ দেওয়া উচিত নয়। আমি অর্জুনের ক্ষেত্রেও একই কথা বলেছিলাম। লাভ হয়নি।"
এই প্রথম বার নয়, এর আগেও দলবদল নিয়ে একাধিক বার মুখ খুলেছেন চিরঞ্জিৎ। অর্জুন সিংহ যখন বিজেপি থেকে জোড়াফুলে প্রত্যাবর্তন করেন, খোদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে জলে যোগদান করান। সেই সময়ও সরব হয়েছিলেন চিরঞ্জিৎ। আজ এই ডাল, কাল ওই ডাল, করা নেতাদের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। শুধু তাই নয়, দলবদলকারীদের ফেরত নেওয়া বাকিদের সঙ্গে অবিচার বলেও দাবি করেন।
আরও পড়ুন: Bhangar News: ফের তৃণমূলে ভাঙন, আরাবুলের পাড়া থেকেই ISF -এ যোগ প্রায় শতাধিক TMC কর্মীর
বিজেপি থেকে তৃণমূলে আসা বাবুল সুপ্রিয়কে নিয়েও মুখ খুলেছিলেন চিরঞ্জিৎ। বিধানসভা উপনির্বাচনে জোড়াফুল টিকিটে বালিগঞ্জ থেকে জয়লাভ করেন বাবুল। কিন্তু সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের মতো ব্যবধান পাননি তিনি। তা নিয়ে মুখ খুলেছিলেন চিরঞ্জিৎ। তৃণমূল এমনিতেও জিততো, বাবুলকে আনায় ব্যবধান কমল বলে সেই সময় মন্তব্য করেছিলেন তিনি। এ বারও বায়রনকে দলে নেওয়ায় তৃণমূলের ভূমিকা নিয়ে সরব হলেন চিরঞ্জিৎ।
অন্য দলবদলকারীদের মতো বায়রনও গাছেরও খেতে চাইছেন, আবার তলারও কুড়োতে চাইছেন, এমন কটাক্ষও ছুড়ে দেন চিরঞ্জিৎ। তাঁর কথায়, "বিধায়ক পদ থেকে বায়রন পদত্যাগ করবে কেন? যখন দু’টোই ভোগ করা যাবে? বায়রন কংগ্রেসেরই বিধায়ক থেকে যাবে, যেমন অর্জুন বিজেপি-র সাংসদ। সব সুবিধা ভোগ করবে।"
বাম-কংগ্রেস জোটের কাছে উপনির্বাচনে সাগরদিঘি হাতছাড়া হয় তৃণমূলের। বামেদের সমর্থনে, সেখানে জয়লাভ করেন কংগ্রেস প্রার্থী বায়রন। তার পর প্রকাশ্যে বাম-কংগ্রেস জোট নিয়ে কটাক্ষ করতে শোনা যায় তৃণমূল নেতৃত্বকে। এমনকি এর নেপথ্যে বিজেপি-র ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তাঁরা। কিন্তু তার পর মাস তিনেক কাটতে না কাটতেই কংগ্রেস ছেড়ে জোড়াফুল শিবিরে যোগ দিলেন বায়রন। ফলে রাজ্য বিধাসভায় ফের শূন্যে পৌঁছে গেল কংগ্রেস। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে, বায়রনের হাত ধরে সাগরদিঘি হস্তগত হওয়ায় তাই খুশির আমেজ তৃণমূলে। কিন্তু চিরঞ্জিতের মন্তব্য খানিকটা হলেও অস্বস্তিতে ফেলল তৃণমূলকে।