Humayun Kabir: 'মমতার ঘনিষ্ঠরা কতটা তাঁর ভাল চান, তা নিয়ে সন্দেহ আছে', ফের বিস্ফোরক হুমায়ুন
Mamata Banerjee:ফিরহাদের উপর ভরসা করা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন যেমন, তেমনই আবারও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হয়ে ব্যাট ধরলেন হুমায়ুন।
![Humayun Kabir: 'মমতার ঘনিষ্ঠরা কতটা তাঁর ভাল চান, তা নিয়ে সন্দেহ আছে', ফের বিস্ফোরক হুমায়ুন TMC MLA Humayun Kabir raises questions about party reshuffle bats for Abhishek Banerjee claims questios Mamata Banerjee choice Humayun Kabir: 'মমতার ঘনিষ্ঠরা কতটা তাঁর ভাল চান, তা নিয়ে সন্দেহ আছে', ফের বিস্ফোরক হুমায়ুন](https://feeds.abplive.com/onecms/images/uploaded-images/2024/11/26/acede1b7e54c1d308cfc2f7518d1f02c1732607031514338_original.jpg?impolicy=abp_cdn&imwidth=1200&height=675)
কলকাতা: কর্মসমিতির বৈঠকে দলের অন্দরে রদবদল ঘটেছে। দলের প্রবীণ নেতাদের গুরুত্ব দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই নিয়ে ফের গর্জে উঠলেন তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবির। মমতা যাঁদের ঘনিষ্ঠ বলে ভাবছেন, তাঁরা ক'জন তাঁর ভাল চান, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে বলে মন্তব্য করলেন হুমায়ুন। ফিরহাদের উপর ভরসা করা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন যেমন, তেমনই আবারও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হয়ে ব্যাট ধরলেন হুমায়ুন। শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কেও বিঁধলেন তিনি। (Humayun Kabir)
উপনির্বাচন মিটতেই সোমবার কালীঘাটে দলের কর্মসমিতির বৈঠক করেন মমতা। সেখানে দলের অন্দরে ব্যাপক রদবদল হয়, প্রবীণ নেতাদের গুরুত্ব কার্যত বাড়ান মমতা। দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটিতে রাখা হয়নি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তাঁকে জাতীয় স্তরে দলের হয়ে কথা বলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আর একদিন পেরোতে পেরোতেই সেই নিয়ে সরব হয়েছেন হুমায়ুন। (Mamata Banerjee)
এদিন এবিপি আনন্দের মুখোমুখি হয়ে দলে রদবদল নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন হুমায়ুন। তিনি বলেন, "অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক, সাংসদ। তিনি স্বাভাবিক ভাবেই দিল্লির দায়িত্বে থাকবেন। যেদিন সর্বভারতীয় সম্পাদক হন, সেদিনই দলের দু'নম্বর হয়ে যান। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিষেকেরও নেত্রী, সকলের নেত্রী তিনি। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে যে কয়েক জন ঘিরে রয়েছেন, যে ক'জন নিজেদের পরিকল্পনার মধ্যে রেখেছেন, তাঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কতটা ভাল চান, দীর্ঘমেয়াদি ভাবে পশ্চিমবঙ্গের শাসক হিসেবে দেখতে চান, তা নিয়ে আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে। যাঁরা ক্ষমতায় আছেন, যাঁরা দলটাকে গুলিয়ে দিতে চাইছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের কাছে নিজের জায়গা ঠিক রাখতে চাইছেন, কানে মন্ত্রণা দিচ্ছেন, ২০২৬ সালে তাঁরা জবাব পাবেন। আমি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নেতা মানি। তৃণমূল যদি আগামীতে আমাকে টিকিট না দেয়, বেঁচে থাকলে অপকর্মের জবাব দেব। "
দলের তিনটি শঙ্খলা কমিটিতে যাঁদের রাখা হয়েছে, সেই নিয়েও প্রশ্ন তোলেন হুমায়ুন। তাঁর কথায়, "ঘুরেফিরে তিনটি জায়গাতে যাঁদের প্রাধান্য, ঘুরে ফিরে যাঁরা দায়িত্বে এসেছেন... গোটা রাজ্যটাকে কী ভাবে চেনেন তাঁরা? মানুষের কাছে কী পরিচিতি তাঁদের? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ছাড়া কোনও নির্বাচনে জিতে আসা সম্ভব নয় এঁদের পক্ষে। চ্যালেঞ্জ করে বলছি আমি।"
হুমায়ুন জানান, মমতার উপর সাধারণ মানুষের আস্থা ছিল, আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। কিন্তু মমতা যাঁদের নিয়ে সরকার চালাচ্ছেন, যে যে জেলায়, যাঁদের দায়িত্ব দিয়েছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন হুমায়ুন। গতকাল ফিরহাদ হাকিমকে মুর্শিদাবাদের দায়িত্ব দেন মমতা। সেই নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন হুমায়ুন। তাঁর কথায়, "মুর্শিদাবাদ একটি বড় জেলা, তিন সাংসদ, ২০ বিধায়ক রয়েছেন। গত সাড়ে তিন বছরে রাজনৈতিক ভাবে যে জেলা দেখছেন, জেলার বিধায়কদের সঙ্গে ক'দিন বৈঠক করেছেন, ক'দিন অভাব-অভিযোগ শুনেছেন, কোন সমস্যার কথা শুনেছেন? বেলডাঙায় গন্ডগোল হল, সেখানে কখন হস্তক্ষেপ করলেন ববি হাকিম? বিপদগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন, ক'দিন খোঁজ নিয়েছেন? আমাদেরকেই সব ফেস করতে হয়।"
এদিন হুমায়ুন প্রশ্ন তোলেন, মুর্শিদাবাদের মানুষ ভোট দিয়ে সরকার গঠন করবেন, আর সেই সরকার বুলডোজার চালাবে, পুলিশ-প্রশাসন মামলা করবে, নিরপরাধ ছেলেমেয়েদের জেলে ভরে দেবে, এটা কি সমাধান? আজ আবারও অভিষেকের নেতৃত্বের জন্য সরব হন হুমায়ুন। বলেন, "অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে আগামী দিনে যোগ্য (নেতা হিসেবে দেখতে চাই)। তৃণমূলের নেত্রী তো তাঁকে যোগ্য উত্তরসূরি মনে করেছেন। হুমায়ুন কবিরের কোনও মতামতের দরকার হয়নি। তাঁকে সর্বভারতীয় সম্পাদক তো মমতা করেছেন! অভিষেকের পাশে থাকা, সমর্থন করা কি মমতার বিরোধিতা করা? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমার নেত্রী, নম্বর ২ হচ্ছেন অভিষেক। আগামী নির্বাচনে গোটা রাজ্যে আমি যাব না। মুর্শিদাবাদে ২২টি জেলা রয়েছে। আগামী দিনে মুর্শিদাবাদে অভিষেকের নেতৃত্বে বিধানসভার রেজাল্ট করে দাবি জানাব। একজন বলেছেন, হুমায়ুন কবির কে? কেন আমার কথা বলার অধিকার নেই?"
এর আগে, অভিষেককে পুলিশমন্ত্রী করার দাবি তুলেছিলেন হুমায়ুন। আজ তিনি জানান, ২০২৬-এর নির্বাচন এখনও বাকি। তাঁ-র দাবি নাও মানতে পারেন নেতৃত্ব। কিন্তু অভিষেকের যোগ্যতা নিয়ে কথা বলবেন তিনি। রাজনীতিতে অভিষেকের গ্রহণযোগ্যতা যথেষ্ট, প্রশাসন চালানোর ক্ষমতাও রয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। অভিষেক এলে তৃণমূলের শক্তি আরও বাড়বে, মমতার শক্তি বাড়বে বলে মত হুমায়ুনের। হুমায়ুনের কথায়, "যাঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভুল বোঝাতে চেষ্টা করছেন, ঘেরাটোপে রাখতে চাইছেন, ভবিষ্যতে জবাব পাবেন। যাঁরা সবকিছু ঘিরে বসে রয়েছে, কেউ চিরটি, কেউ তিনটি দফতর, কেউ মেয়র আবার দফতরেও...এঁরা এত শক্তিমান হয়ে গিয়েছেন! তাতে অভিষেককে শামিল করতে অসুবিধে কী? এতে আমাকে শোকজ করলে করুক। জবাব দিয়ে দেব।" মমতার প্রতি অনাস্থা প্রকাশের হুমায়ুন কে বলে এর আগে আক্রমণ শানিয়েছিলেন কল্যাণ। তাঁকেও বুঝিয়ে দেবেন বলে জানান হুমায়ুন।
হুমায়ুনের দাবি, নম্বর ২ নয়, প্রশাসনিক ভাবে অভিষেককে আরও গুরুত্ব দিতে হবে। তাঁর দাবি, মমতার নামে ক্ষমতার অপব্যবহার হচ্ছে। মুর্শিদাবাদের কিছু ব্লকে ভূমি বিভাগের আধিকারিক এবং থানার আধিকারিকরা দুর্নীতি করছেন। আগামী দিনে এসব তুলে ধরবেন তিনি, তখন জবাব দিতে হবে ফিরহাদকে। জানুয়ারি মাস পর্যন্ত তিনি দেখবেন বলে জানিয়েছেন হুমায়ুন।
ট্রেন্ডিং
সেরা শিরোনাম
![ABP Premium](https://cdn.abplive.com/imagebank/metaverse-mid.png)