Sukanta Majumdar: মমতার উপর গোয়েন্দা নজরদারি? জামাতের সঙ্গে তুলনা, যা বললেন সুকান্ত...
Mamata Banerjee: ভারত বিরোধী শক্তির সঙ্গে যোগসাজশের জন্য মমতার উপর নজরদারি চালানোর কথাও বলেন সুকান্ত।
কলকাতা: আর জি করের ঘটনায় রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে। মূলত তৃণমূল বনাম বিজেপি-র দ্বন্দ্ব নয়া মাত্রা পেয়েছে। বুধবার বিজেপি-র ডাকা ধর্মঘট ঘিরে অশান্তি দেখা দেওয়ায় আবারও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করলেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি সুকান্ত ভট্টাচার্য। পুলিশের ভূমিকার সমালোচনা করার পাশাপাশি, মমতাকে তীব্র আক্রমণ করেন তিনি। ভারত বিরোধী শক্তির সঙ্গে যোগসাজশের জন্য মমতার উপর নজরদারি চালানোর কথাও বলেন সুকান্ত। (Sukanta Majumdar)
আর জি করের ঘটনাকে সামনে রেখে কিছু গোষ্ঠী রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করছে বলে বুধবার অভিযোগ করেন তৃণমূল নেতৃত্ব। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের অনুষ্ঠান থেকে বুধবার মমতা ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দু'জনই এই অভিযোগ করেন। মমতা জানান, বাংলায় পরিকল্পিত ভাবে অশান্তি বাঁধানো হচ্ছে। এমন চললে অসম, মণিপুর, উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলি তো বটেই, দিল্লিও তপ্ত হয়ে উঠবে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির গদি টলমল করবে বলে মন্তব্য করেন মমতা।
মমতার সেই মন্তব্যকে হাতিয়ার করেই এদিন মমতার বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের নজরদারির দাবি তোলেন সুকান্ত। তাঁর বক্তব্য, "ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোয় থেকে মমতা যেভাবে অসম, মণিপুর, উত্তর-পূর্ব অশান্ত হবে বলে মন্তব্য করেছেন, তা বাংলাদেশের জামাতের ভাষা, ভারত বিরোধী শক্তির ভাষা। কেন্দ্রীয় সংস্থা, যাঁরা দেশের জাতীয় নিরাপত্তার দিকটি দেখেন, তাঁদের বলব, সতর্ক নজর রাখুন। কোন বিদেশিরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করছেন, কোন বিদেশি শক্তির সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ রয়েছে, সতর্ক দৃষ্টি রাখা প্রয়োজন।"
আর বনধ ডেকেছিল বিজেপি, সেই নিয়ে সকাল থেকে উত্তপ্ত ছিল পরিস্থিতি। সে প্রসঙ্গে সুকান্ত বলেন, "গতকাল ছাত্রদের আন্দেলনে পুলিশ এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আক্রমণ, আজকের বনধ বানচাল করার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যে প্রচেষ্টা, তা একটা জিনিস প্রমাণ করে দিয়েছে যে, তিনি ভয় পেয়েছেন। তাই আমরা বলছি, ভয় পেয়েছে দিদিভাই, ইস্তফা ছাড়া গতি নাই। এখন অনেক কথা বলছেন উনি। সাপের কথা বলছেন, ফোঁস করার কথা বলছেন।" (Mamata Banerjee)
তৃণমূলের ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে বুধবার মেয়ো রোডের অনুষ্ঠান থেকে বক্তৃতা করেন মমতা। সেখানে তিনি জানান, বদলা নয়, বদল চাই নীতিতেই বিশ্বাসী তিনি। কিন্তু লাগাতার আক্রমণ নেমে এলে, উল্টো দিক থেকে কেউ কামড়াতে এলে, ফোঁস করার অধিকার রয়েছে। বাংলাকে পরিকল্পিত ভাবে অশান্ত করে তোলা হচ্ছে, আগামী দিনে তার প্রভাব অসম, মেঘালয় এমনকি দিল্লি-সহ একাধিক রাজ্যে পৌঁছবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সেই প্রসঙ্গ টেনে সুকান্ত বলেন, "নিজে হিংসায় উস্কানি দিচ্ছেন উনি। বাংলার মানুষের বিরুদ্ধে হিংসার কথা বলছেন উনি, কারা আন্দোলনে নেমেছিলেন ১৪ অগাস্ট? কাল ছাত্ররা মিছিলে নেমেছিলেন। এখন নিজের হার্মাদদের যা করার করতে বলছেন। উনি বাংলার মানুষকে মারতে, পিটতে বলছেন। আমি পরিষ্কার বলছি, আপনি যদি ভাবেন আপনার গুন্ডাবাহিনী বাংলার মানুষের উপর হামলা চালাবে, বিজেপি চুপ করে বলে থাকবে না।"
সুকান্ত আরও বলেন, "এই প্রথম দেখলাম, একজন মুখ্যমন্ত্রী সাংবিধানিক পদে বসে থেকে কর্মীদের বাংলার মানুষের উপর অত্যাচার, ফোঁস করার কথা বলছেন। এঁর কথা ভেবেই হয়ত সুকুমার রায় লিখেছিলেন, 'সেই সাপ জ্যান্ত, গোটা দুই আন তো'! বাংলায় দুই সাপই আছে এখন। তাঁদের জন্য মানুষ কী ট্রিটমেন্ট করবেন, তাও লিখে গিয়েছেন, 'তেড়ে মেড়ে ডান্ডা, করে দিই ঠান্ডা'। যারা ফোঁস করতে আসবে, এই ট্রিটমেন্ট হবে। তাই মুখ্যমন্ত্রী এবং তাঁর ভাইপো, দুই জ্যান্ত সাপ যতই ফোঁস করুন, বাংলার মানুষ মারার জন্য তৈরি আছেন, গণতান্ত্রিক ভাবে। মানুষ শিক্ষা দেবে আপনাদের।"