Mamata Banerjee : 'অযোগ্যদের বিভিন্ন দফতরে ফিরিয়ে দেবেন...যোগ্যদের কী হবে?' প্রশ্ন তুলছেন চাকরিহারা শিক্ষকরা
Mamata Banerjee Press Meet : চিহ্নিত অযোগ্যদের নিয়েও কথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী। আর তা নিয়ে পাল্টা প্রশ্ন তুলেছেন আন্দোলনরত শিক্ষকরা, তাহলে আমরা কী দোষ করলাম!

OMR শিটে যাঁদের কারচুপির অভিযোগ উঠেছে, তাঁরা নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন না। আর এই চিহ্নিত অযোগ্যরা বেতনও পাবেন না। পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। এরপরও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠক থেকে মুখ খুললেন এই সব 'চিহ্নিত অযোগ্য'দের নিয়ে। জানিয়ে দিলেন, 'যাঁরা বাতিল হয়ে গেছেন। তাদের বলা হয়েছে, তোমরা এই পরীক্ষায় বসতে পারবে না। তারা অন্য দফতরে যোগ দিতেই পারে।'
'যাদের টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলা হয়েছে...', কী বললেন মুখ্যমন্ত্রী ?
চাকরি ফেরত চেয়ে আন্দোলনে নেমেছেন 'যোগ্য শিক্ষক - শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চ ২০১৬'। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মাথায় রেখে মঙ্গলবার নতুন করে শিক্ষক নিয়োগের জন্য নতুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ঘোষণা করতে গিয়ে, চিহ্নিত অযোগ্যদের নিয়েও কথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী। আর তা নিয়ে পাল্টা প্রশ্ন তুলেছেন আন্দোলনরত শিক্ষকরা, তাহলে আমরা কী দোষ করলাম! আন্দোলনরত চাকরিহারাদের প্রশ্ন, চাকরিহারাদের পাল্টা প্রশ্ন, ৮-৯ বছর আগে যে প্রস্তুতি নিয়ে চাকরি পেয়েছিলেন, সেটা এখন হঠাৎ এই ক'দিনে তাঁরা নেবেন কীকরে?
চাকরিহারাদের প্রতিক্রিয়া
চাকরিহারা শিক্ষিকা বিদিশা মুখোপাধ্যায় প্রশ্ন তুললেন, 'মুখ্যমন্ত্রী এখনও অযোগ্যদের পাশে রয়েছেন। অযোগ্যদের বিভিন্ন দফতরে ফিরিয়ে দেবেন। তাহলে যোগ্যদের কী হবে? তাঁরা পরীক্ষা দেবেন? এখনও যোগ্য-অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করতে পারল না। এর থেকে দুর্ভাগ্য কী হতে পারে।'
মঙ্গলবার এবিপি আনন্দর যুক্তি-তক্কো অনুষ্ঠানে এসে কোর্টের রায়ে চাকরিহারা শিক্ষক চিন্ময় মণ্ডল বললেন, ' আমরা খুবই হতাশ। আমরা দেখলাম, হাইকোর্ট, নির্দেশ দিল সিবিআই তদন্ত করার। যখন সেই সিবিআই তদন্ত করে চার্জশিট জমা দিল, তখন দেখা গেল, সেই সিবিআই তদন্তকে কেউ মানছে না। তাহলে কী দরকার ছিল সিবিআই তদন্ত করার। সিবিআই অথরিটিটাকে রাখার কী দরকার...যদি তার রিপোর্টটাকে যদি না মানেন...' । চাকরিহারা শিক্ষক চিন্ময় মণ্ডল বললেন, সরকার দুর্নীতি করল, পর্ষৎ দুর্নীতি করল, কমিশন দুর্নীতি করল, শাস্তি তাদের হওয়া উচিত...ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া উচিত।
ইতিমধ্যেই এই চিহ্নিত অযোগ্যদের একাংশ নতুন করে পরীক্ষায় বসতে চেয়ে যে আবেদন করেছিলেন , তা খারিজ হয়ে গিয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। তাঁরা নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন না। তাই এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, 'যাঁরা বাতিল হয়ে গেছেন...তাদের বলা হয়েছে, তোমরা এই পরীক্ষায় বসতে পারবে না। তারা অন্য দফতরে যোগ দিতেই পারে। কোর্ট সেটাও বলে দিয়েছে।' চিহ্নিত অযোগ্য়দেরও আগামীর পথ দেখালেন মুখ্যমন্ত্রী। বললেন, 'যাদের টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলা হয়েছে এবং যাদের বাতিল করা হয়েছে, তাছাড়াও অনেক শিক্ষক আছে, ... ওরা শিক্ষা দফতরেও যোগ দিতে পারে। তাছাড়া আমরা আরও তিন-চারটে দফতরের অপশন দেব। কিন্তু, সেটা আমরা আলাদা করে নোটিফাই করব। '
এর আগে ৭ এপ্রিল নেতাজি ইন্ডোরের সভা থেকেও অযোগ্যদের উদ্দেশে বার্তা দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। 'আগে যোগ্যদেরটা হয়ে যাক। বাদ বাকি যাঁরা থাকবেন যাঁদের অযোগ্য বলা হচ্ছে তাঁদের বিরুদ্ধে কী কী প্রমাণ আছে আমি দেখব।'
বিরোধীদের কটাক্ষ
মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যকেই হাতিয়ার করেই সরব হয়েছে বিরোধীরা। বিজেপ নেতা রাহুল সিনহার কটাক্ষ, 'অযোগ্যদের থেকেই তো টাকা পয়সা নিয়েছেন, চাকরি না দিলে তো চামড়া গুটিয়ে দেবে...'। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের প্রশ্ন, 'দুর্নীতিগ্রস্তদের কেন তিনি নামের তালিকা বার করছেন না? কেন আজ পর্যন্ত রাজ্য সরকার, পুলিশ, DD, গোয়েন্দা বিভাগ... সবাই বলছে দুর্নীতি হয়েছে, এত টাকার লেনদেন হয়েছে, একটাকে ধরতে পারল না। কেন শাস্তি হল না?'
গ্রুপ C এবং গ্রুপ D কর্মীদের কী ঘোষণা?
এছাড়া গত ১৭ এপ্রিল, সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট করে দেয়, শুধুমাত্র যে শিক্ষকরা ‘দাগি’ বা ‘অযোগ্য হিসাবে চিহ্নিত’ নন, ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত তাঁদের চাকরি বহাল থাকবে। আপাতত তাঁরা স্কুলে যেতে পারবেন ও বেতন পাবেন। তবে নতুন এই নির্দেশ গ্রুপ C এবং গ্রুপ D কর্মীদের জন্য প্রযোজ্য নয়। তাই এদিন চাকরিহারা গ্রুপ C এবং গ্রুপ D কর্মীদের নিয়েও বিকল্প ভাবনার কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন, 'আমরা অতিরিক্ত গ্রুপ C, D নিচ্ছি সঙ্গে সঙ্গে যাঁরা শিক্ষা বিভাগে কাজ করতেন অথচ তাঁদের সবারটা বাতিল হয়ে গেছে, তাঁরা শিক্ষা বিভাগে আবেদন করতে পারবেন এছাড়াও তাঁদের জন্য আরও কয়েকটা বিভাগের বিকল্প দেব '






















